• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ কেউ হতাশ হবেন না: প্রধানমন্ত্রী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী

১৩ দিনের প্রশিক্ষণেই হাসপাতালের ‘চিকিৎসক’ হয়েছিলেন তারা

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২  

স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন নয়; চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই চলছিল ‘মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টার’। এমনকি যারা এ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ে কাজ করছিলেন তারাও কোনও মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করা ডাক্তার নন। ব্র্যাক থেকে মাত্র ১৩ দিনের ধাত্রীর প্রশিক্ষণ নিয়ে নগরীর ডবলমুরিং থানার ঝরনাপাড়া এলাকায় হাসপাতালটি খুলে বসেন তারা।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) এ হাসপাতালে বিল পরিশোধ না করায় জন্ম নেওয়া দুই যমজ শিশুকে আটকে রাখার পর মৃত্যুর অভিযোগে বিক্ষোভ করে শিশুর স্বজনরা। বিষয়টি সিভিল সার্জনের নজরে এলে তদন্তের পর এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। এ ঘটনায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। হাসপাতালের দুই পরিচালনাকারী নারীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে মারা যাওয়া দুই নবজাতকের বাবা মো. মনির হোসেন অটোরিকশাচালক। তার স্ত্রী লাভলী বেগম (২২) গৃহিণী।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টার’ নামে হাসপাতালটির স্বাস্থ্য বিভাগের কোন অনুমোদন নেই। এমনকি যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন তাদেরও কোন চিকিৎসা সনদ নেই। তবে তারা ধাত্রী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সনদ দেখিয়েছেন। তিন জন মিলে এ প্রতিষ্ঠান খুলেছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে দু’জনের নাম পাওয়া গেলেও বাকি একজনের নাম পাওয়া যায়নি। ওই দু’জন হলো বৃষ্টি রানী দে ও নাসরিন বেগম। তারাও আরেক জনের নাম প্রকাশ করেনি। এভাবে কোনও প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। এ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যারা খুলেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ডবলমুরিং থানা পুলিশকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ডবলমুরিং থানার ওসিকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা অভিযোগ পেয়ে বুধবার ওই প্রতিষ্ঠানে গেলে অভিযুক্তরা চিকিৎসা পেশার উপযুক্ত কোনও সনদ দেখাতে পারেননি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল।’

এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিল পরিশোধ না করায় দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখায় মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে জন্ম নেওয়া দুই যজম শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করে শিশুর স্বজন ও প্রতিবেশীরা। তবে এ ঘটনায় নিহত শিশুর স্বজনরা থানায় মামলা করেনি। এ কারণে পুলিশ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মামলা করেছে। সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকেও এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বৃষ্টি রানী দে ও নাসরিন বেগমকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।’

মামলার বাদী ডবলমুরিং থানার এসআই মো. মহিম উদ্দিন বলেন, ‘দুই যমজ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে হাসপাতালটির পরিচালনাকারী দুই নারীকে। তারা হাসপাতালের অনুমোদনের কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যমজ শিশুর পিতা মনির হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে স্ত্রী লাভলীকে মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে ভর্তি করি। আধাঘণ্টা পর যমজ সন্তানের জন্ম দেয় স্ত্রী। কিছুক্ষণ পর নবজাতকদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন ক্লিনিকের চিকিৎসক। তখন ক্লিনিক থেকে ১০ হাজার টাকা বিল দেওয়া হয়। আমি পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বলি, বাচ্চা তো নরমাল ডেলিভারিতে হয়েছে। আপাতত পাঁচ হাজার রাখেন, বাকি টাকা বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তির পর জোগাড় করে এনে দেবো। কিন্তু এরই মধ্যে নবজাতকদের অক্সিজেন মাস্ক খুলে রাখেন তারা। সেইসঙ্গে অন্য হাসপাতালেও নিতে দেননি। ফলে আমার দুই সন্তান মারা যায়। এ ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির দাবি জানাই।’