• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
কেউ হতাশ হবেন না: প্রধানমন্ত্রী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান যে পরিকল্পনা হউক, সেটা পরিবেশবান্ধব হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

বরিশালে জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২১  

বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের একটি ক্লিনিকে হালিমা বেগম নামে এক গৃহবধূ জোড়া লাগানো যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বুধবার (২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যমজ শিশুর জন্ম হয়।

তবে জন্মের পর থেকেই নবজাতক দুটির শারীরিক জটিলতা থাকায় চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। যদিও দরিদ্র ভ্যানচালক বাবার পক্ষে সেটা সম্ভব হয়নি। কোনো উপায় না পেয়ে ওই দুই নবজাতককে বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশু দুটি বর্তমানে হাসপাতালের শিশু মেডিসিন ওয়ার্ডের দ্বিতীয় ইউনিটে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। তবে তাদের মা গৌরনদীর ক্লিনিকেই আছেন।

বরিশালের মুলাদী উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের সেলিমপুর গ্রামের মো. আবু জাফরের স্ত্রী হালিমা বেগম এই যমজ শিশুর জন্ম দেন। এই দম্পতির ৬ বছর ও ৪ বছরের আরো দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

ভ্যানচালক মো. আবু জাফর জানান, তিনি গ্রামে থাকেন না। পুরান ঢাকায় ভ্যান চালান। তার স্ত্রী দুই কন্যা সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি থাকেন। সন্তান সম্ভবা হওয়ায় গত দেড় মাস আগে তার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে শ্বশুরবাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর গ্রামে রেখে আসেন। বুধবার ভোরে স্ত্রীর প্রসবব্যথা শুরু হলে সকাল ১০টার দিকে গৌরনদী উপজেলার সদরের ময়ুরী ক্লিনিকে ভর্তি করেন স্বজনরা। সেখানেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই জোড়া লাগানো যমজ নবজাতকের জন্ম হয়।

আবু জাফর জানান, ‌জোড়া লাগানো দুই কন্যাশিশুর জন্ম নেয়ার খবর পেয়ে তিনি ঢাকা থেকে গৌরনদী আসেন। ক্লিনিকের চিকিৎসকরা দুই কন্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। তবে টাকার অভাবে তিনি ঢাকায় নিয়ে যেতে পারেননি। তাই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতকদের ভর্তি করেছেন।

দরিদ্র আবু জাফর জানান, তিনি পুরান ঢাকায় ভ্যান চালান। তার স্বল্প আয়ে যমজ এ দুই শিশুর চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে ক্লিনিকের খরচ চালিয়েছেন। অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার মতো টাকাও তার নেই।

তিনি জানান, মেডিকেলের শিশু ওয়ার্ডের কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন উন্নত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন করতে তাদের ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। এতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তার পক্ষে এ ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন। এ নিয়ে তিনি চরম দুশ্চিন্তার মধ্য আছেন। তাই জোড়া লাগা দুই কন্যা শিশুকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার ও দেশের হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে সহায়তা প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

গৌরনদীর ময়ুরী ক্লিনিকের চিকিৎসক তানজিদ রহমান জানান, হালিমা বেগমকে সকাল ১০টার দিকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো যমজ নবজাতকের জন্ম হয়। স্বজনরা রোগীকে আগে আল্ট্রাসনোগ্রাম করিয়েছিলেন। তবে সেখানে জোড়া সন্তানের এ তথ্য জানানো হয়নি। অস্ত্রোপচারের পর দেখতে পান জোড়া লাগানো। অন্যদিকে নবজাতকদের জন্মের পর হঠাৎ করে হালিমা বেগমের শারীরিক অবনতি ঘটে। তাকে রক্ত দেয়া হয়। চিকিৎসকদের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় তার অবস্থার উন্নতি হয়। বর্তমানে তিনি ক্লিনিকে ভর্তি আছেন। অন্যদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জোড়া লাগানো যমজ নবজাতকদের বাবাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এরপর ওই নবজাতকদের বাবা তাদেরকে বরিশাল মেডিকেলে ভর্তি করেন।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা জানান, তাদের শরীর আলাদা হলেও পেটের দিকে জোড়া লাগানো আছে। যমজ শিশু দুটি মেয়ে। এদের যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথ আলাদা আছে। প্রাথমিকভাবে দেখে নবজাতক দুটিকে সুস্থ মনে হয়েছে। তাদেরকে স্যালাইনের মাধ্যমে গ্লুকোজ ও অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছে। তবে এসব ক্ষেত্রে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পার না হলে নবজাতকদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে কোনো কিছুই বলা ঠিক হবে না।

তিনি আরো জানান, ৪৮ ঘণ্টা পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখতে হবে, শিশুদের হার্ট বা শরীরের অন্য অঙ্গগুলো পৃথক আছে কি-না। যদি সব ঠিকঠাক থাকে তাহলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের আলাদা করা সম্ভব। তবে সেজন্য ঢাকা নেয়া প্রয়োজন। তাই নবজাতকদের বাবাকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।