• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা-রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার দেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে অপরাধীদের খুঁজে বের করুন সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৪তম জন্মদিন আজ আধুনিক প্রযুক্তির মেট্রোরেল যেভাবে ধ্বংস করেছে, মানতে পারছি না যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে, দেশবাসীকেই বিচার করতে হবে মেট্রো স্টেশন যেভাবে ধ্বংস করেছে, মানতে পারছি না: প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনকে বিএনপি-জামায়াত সহিংস করেছে: জয় নাশকতার ঘটনায় অপরাধীদের ছাড় না দেয়ার দাবি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের ধারণা ছিল একটা আঘাত আসবে: প্রধানমন্ত্রী তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ২১ জুলাই স্পেন যাবেন প্রধানমন্ত্রী আমার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা আদালতে ন্যায়বিচারই পাবে: প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাণহানি ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতে হবে : প্রধানমন্ত্রী পবিত্র আশুরা মুসলিম উম্মার জন্য তাৎপর্যময় ও শোকের দিন আশুরার মর্মবাণী ধারণ করে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার আহ্বান মুসলিম সম্প্রদায়ের উচিত গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও করে না : প্রধানমন্ত্রী দুঃখ লাগছে, রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও বলে তারা রাজাকার শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ ‘চীন কিছু দেয়নি, ভারতের সঙ্গে গোলামি চুক্তি’ বলা মানসিক অসুস্থতা

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আসতে পারে আইনি ব্যবস্থা

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২৪  

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা চিন্তা করছে সরকার। জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা সেজে রাষ্ট্রীয় সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংসদীয় কমিটির থেকেও সুপারিশ এসেছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে মতামতের জন্য তারা আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে মন্ত্রণালয়ে সূত্রে জানা গেছে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদাহরণ সৃষ্টির জন্য ক্ষুদ্র পরিসরে মামলা করা হতে পারে। তবে ব্যাপক আকারে সব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে এসব মামলা পরিচালনায় জটিলতা ও আর্থিক সংকটের শঙ্কা রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে সরকারের তরফ থেকে হাতে গোনা কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।

এ পর্যন্ত আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে বলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গত ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচিতে জানান। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোনও দফতরে এর পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যায়নি। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা বলেছে, তাদের কাছে সনদধারী মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য রয়েছে। কাদের সনদ বাতিল হয়েছে এ তথ্য তারা সংরক্ষণ করে না। অবশ্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) বলছে তারা তালিকা তৈরি করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রসঙ্গটি তোলেন। বৈঠকের কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, সেখানে মন্ত্রী বলেন–ইতোমধ্যে আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে। এরা জালিয়াতি বা প্রতারণার মাধ্যমে সনদ নিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তারা যে ভাতা পেয়েছিল তা সুদে আসলে ফেরত পেতে মামলা করতে হবে বলেও তিনি জানান।

এর আগের দিন ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরে মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় মন্ত্রী আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ১৮ এপ্রিলের সভায় বলেন, যারা ভুয়া কাগজপত্র/দলিল নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম গেজেটভুক্ত করে বিগত দিনগুলোতে ভাতা নিয়েছিল, তাদের কাছ থেকে সেই টাকা সুদে আসলে আদায় করতে হবে। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না হলে আইনের শাসন বহাল রাখা কষ্টকর হবে।

ওই বৈঠকে কমিটি মন্ত্রণালয়কে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যেসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিয়েছিল তা আদায় ও তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করে। বুধবার (১৫ মে) অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওই সুপারিশের বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন দেয় মন্ত্রণালয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জামুকার সুপারিশের আলোকে যেসব ব্যক্তি ভুয়া কাগজপত্র/দলিল দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়ে বিগত দিনে রাষ্ট্রীয় সম্মানি ভাতা গ্রহণ করেছিল তাদের অনুকূলে প্রদত্ত গেজেট বাতিল করা হলে তাদের তথ্য ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমইএস) থেকে যাতে বাতিল/নিষ্ক্রিয় করা হয়। তাদের সম্মানি ভাতাও যেন তাৎক্ষণিক বন্ধ হয়ে যায়। অতীতে তারা যে অর্থ পেয়েছে তা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত কতজন থেকে আদায় করা হয়েছে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকা মন্ত্রণালয়ের সনদ শাখায় নেই বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমআইএস করা স্বীকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ প্রস্তুত ও বিতরণের কার্যক্রম সনদ শাখা থেকে গ্রহণ করা হয়। আট হাজার ব্যক্তির তালিকা পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সনদ) মোহাম্মদ আফরাজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তাদের শাখায় নেই। কারণ আমাদের কাছে এরকম কোনও বিষয় পাঠানো হয় না। গেজেট বাতিল করে দিলে বাজেট শাখা থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে যায়।

জামুকার মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. রুবাইয়াত শামীম চৌধুরী বলেন, তালিকা তৈরি প্রক্রিয়াধীন আছে। তাই এখনও মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে। আমরা মামলা করার কথা ভাবছি। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি। মতামতের জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা ইস্যুতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বর্তমানে কয়েক হাজার মামলার বোঝা নিয়ে চলছে। এরইমধ্যে ভুয়া সনদধারীদের বিরুদ্ধে গণহারে মামলা করতে গেলে মামলার বোঝা আরও বেড়ে যাবে। মামলার দীর্ঘসূত্রতা, মামলা পরিচালনার খরচ সব মিলিয়ে ভুয়া সনদধারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এসব বিবেচনা করে সরকার গণহারে মামলার দিকে না গিয়ে কেবল দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য আলোচিত ভুয়া সনদধারীদের বিরুদ্ধে মামলার কথা ভাবছে।