• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

টুঙ্গিপাড়াকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০১৯  

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড় লেগেই থাকে। সমাধি ঘিরে পর্যটনের জন্য রয়েছে অপার সম্ভাবনা। শিগগিরই টুঙ্গিপাড়ায় আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পর্যটন মন্ত্রণালয়।

মধুমতি নদীর তীরে অবস্থিত টুঙ্গিপাড়া। আপনি এখানে এলে বাংলার রূপকে স্বচক্ষে দেখতে পারেন। টুঙ্গিপাড়ার গাঁয়ের মেঠো পথের পারে চোখে পড়বে বিল-ঝিল। আর সেখানে ফুটে রয়েছে কত না পদ্ম-শাপলা। টগর-কামিনী ফুলের গন্ধেও উন্মাদ হতে হয় তখন।

 এখানে ঘুমিয়ে আছেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২০০১ সালের ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে সমাধিসৌধ উদ্বোধন করেন। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা বয়সী দর্শনার্থীরা এখানে এসে শ্রদ্ধা জানান।

 এখানে ঢুকতেই পাথরের গায়ে লেখা রয়েছে-

"দাঁড়াও পথিক বর যথার্থ বাঙালি যদি তুমি হও,

ক্ষণিক দাঁড়িয়ে যাও, এই সমাধিস্থলে

এখানে শুয়ে আছেন, বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা"

টুঙ্গিপাড়া গিয়েই বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্বের গন্ধ টের পাবেন। তার বাড়ির অঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে মনে হবে, এই পথ ধরেই বঙ্গবন্ধু একদিন হেঁটেছিলেন। 

গেটের নিরাপত্তাবলয় পার হয়ে ভেতরে ঢুকতে চোখে পড়বে দুই পাশের লাল সিরামিক ইটের চমৎকার মসজিদ ও পাঠাগার কমপ্লেক্স। এসব স্থাপনা পেরিয়ে সোজা কিছুদূর এগোতেই দেখা মিলবে সাদা পাথরে নির্মিত গোলাকার এক গম্বুজবিশিষ্ট স্থাপনা। এর ভেতরেই রেলিং দিয়ে ঘেরা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর বাবা-মায়ের কবর।

দেয়াল ও ছাদ ধরে আলো প্রবেশের চমৎকার ব্যবস্থাপনা ভেতরের পরিবেশকে আরো ভাবগম্ভীর ও সৌম্য করে তুলেছে। সমাধিসৌধের একটু আগে বাঁ পাশে রয়েছে শেখ পরিবারের বড় তালাব বা বড় পুকুর। 

সমাধিসৌধের পাশেই হলুদ রঙের শেখ পরিবারের বাড়ি। দেয়ালে টানানো রয়েছে বঙ্গবন্ধুর চমৎকার প্রতিকৃতি। কমপ্লেক্সের ২ নম্বর গেট থেকে বেরিয়ে ডান দিকে গেলেই চোখে পড়বে ধ্বংসস্তূপপ্রায় শেখ পরিবারের আদিবাড়ি। বাড়ির রাস্তা ফেলে আরেকটু সামনে ডানদিকে ডোবার পাশে হিজলতলা নামে একটি সাইনবোর্ড লক্ষণীয় যেখানে বঙ্গবন্ধু গোসল করতেন বলে জানা যায়।

 

শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থীরা, মহানায়কের সমাধি সৌধে এসে জানায় তাদের উচ্ছাসের কথা।বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর, সংগ্রহশালা দেখে অনেক বিষয়ে জানতে পারছেন তারা। কমপ্লেক্সের পাশে আছে শেখ রাসেল শিশুপার্ক। শির্ক্ষাথী-দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত থাকে পার্কটি।

সমাধিসৌধের প্রদর্শনী গ্যালারি ঘুরে দেখতে পাবেন বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন সময়ের ছবি। রয়েছে একটি পাঠাগারও।পাঠাগারে রয়েছে অনেক বই। পাঠাগারের পাশেই দর্শক গ্যালারিসহ একটি উন্মুক্ত মঞ্চ রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা যায়। গ্যালারি থেকে কিছু দূরে বঙ্গবন্ধুর সমাধি। চমৎকার স্থাপত্য দিয়ে সমাধিকে আবৃত করে রাখা হয়েছে। সমাধির কাছে সবার যাওয়ার অনুমতি থাকলেও ছবি তোলা নিষেধ।

শুধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স নয়, এর আশপাশের এলাকায় অনেক কিছুই দেখার রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদি পৈতৃক বাড়ি, ছেলেবেলার খেলার মাঠ, বঙ্গবন্ধুর স্কুল, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় বালিশা আমগাছ, শেখ বাড়ি জামে মসজিদ (স্থাপিত হয়েছে ১৮৫৪ সালে) ইত্যাদি। আছে হিজলতলা ঘাট, যেখানে বঙ্গবন্ধু ছোটবেলায় গোসল করতেন। দেখা মিলবে শেখ পরিবারের ঐতিহ্যবাহী একটি বড় ও একটি ছোট আকারের পুকুর এবং বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের পাশেই টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে শেখ রাসেল শিশুপার্ক।

সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স ও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিধন্য নানা স্থাপনা ঘুরেফিরে আসার সময় কবিতার সেই পঙক্তিগুলো মনে হয় বারবার।

"যতদিন রবে পদ্মা যমুনা

গৌরী মেঘনা বহমান,

ততকাল রবে কীর্তি তোমার

শেখ মুজিবুর রহমান..."

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সারাসরি বাসে টুঙ্গিপাড়া যাওয়া যায়। বাসের রয়েছে দুটি রুট। একটি গাবতলী থেকে পাটুরিয়া হয়ে, অপরটি গুলিস্তান থেকে মাওয়া ঘাট পাড় হয়ে। গাবতলী থেকে টুঙ্গিপাড়ার দূরত্ব ২৪০ কিলোমিটার। গোল্ডেন লাইন, সেবা গ্রিন লাইন, কমফোর্ট লাইন নামের বাসে টুঙ্গিপাড়া যেতে সময় লাগে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর বাস পাওয়া যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৩৫০ টাকা

গুলিস্তান থেকে টুঙ্গিপাড়ার দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার। এ পথে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, দোলা, ইমাদ ও মধুমতী পরিবহনের বাসে চড়ে টুঙ্গিপাড়া যাওয়া যায়। প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর বাস পাওয়া যাবে। ভাড়া প্রতিজন ৩০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

টুঙ্গিপাড়ার উপজেলা পরিষদের পাশে মধুমতী নামে পর্যটনের একটি মোটেল আছে। এখানে থাকার ব্যবস্থা আছে। রুমের ভাড়া নন-এসি ৭০০ টাকা ও এসি এক হ্জার ৫০০ টাকা। রাতযাপনের জন্য গোপালগঞ্জ শহরেও আছে বেশ কটি আবাসিক হোটেল। রুমের ভাড়া ৫০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকার মধ্যে।