• বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

  • || ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান যে পরিকল্পনা হউক, সেটা পরিবেশবান্ধব হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী আইইবির ৬১তম কনভেনশন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল করতে সরকার কাজ করছে ড. ওয়াজেদ মিয়া অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা

যে কর্মের বিনিময়ে মিলবে ‘মকবুল হজ’এর সওয়াব

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২০  

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা তাঁর ইবাদতের পর মা-বাবার খেদমত করার নির্দেশ দিয়েছেন। মুসলিম জাতির ওপর সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করা যেমন ফরজ ঠিক মা-বাবার খেদমত করা প্রত্যেক মানুষের ওপরও ফরজ। 

সর্বস্থায় যেমনি মহান আল্লাহর সব হুকুম পালনে বাধ্য থাকতে হবে, তেমনি জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে মা-বাবার অনুগত থেকে তাদের খেদমতও করতে হবে।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে মা-বাবার মাধ্যমেই সুন্দর ধরনীর আলো-বাতাস দেখিয়েছেন। পৃথিবীতে মা-বাবাই সন্তানের আপনজন। সন্তানের জন্য মা-বাবার মতো আপন পৃথিবীতে দ্বিতীয় আর কেউ নেই। সন্তান জন্ম নেয়ার পর মা-বাবা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেন। যে কারণে সৃষ্টিকর্তা মা-বাবার খেদমত করার জন্য সর্বাদিক তাগিদ দিয়েছেন।

সৃষ্টিকর্তা ইরশাদ করেন, তোমাদের প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করো না এবং মা-বাবার প্রতি সর্বদা সদ্ব্যবহার করো।’

তাদের একজন বা উভয়েই তোমাদের জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে  তাদেরকে ‘উফ’শব্দ বলো না (বিরক্তি, উপেক্ষা, অবজ্ঞা, ক্রোধ ও ঘৃণাসূচক কোনো কথা) এবং তাদেরকে ধমক দিও না, তাদের সঙ্গে সম্মানসূচক নম্র কথা বলো। মমতাবশে তাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত করো এবং  বলো ‘হে আমার রব! তাদের প্রতি দয়া করো, যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন। তোমাদের অন্তরে যা আছে তা তোমাদের প্রতিপালক ভালো করেই জানেন। যদি তোমরা সৎ হও, তবে তিনি তওবাকারীদের জন্য ক্ষমাশীল।’

অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করবে ও কোনো কিছুকে তাঁর সঙ্গে শরিক করবে না এবং মা-বাবা, আত্নীয় স্বজন, এতিম-অনাথ, অভাবগ্রস্ত, নিকটাত্নীয়, দূর, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে।’ সম্পদ সৃষ্টিকর্তার জন্য যেমনি ব্যয় করতে হবে ঠিক তমনি মা-বাবার খেদমতের জন্যও ব্যয় করতে হবে।

মা-বাবা সন্তানের অতি আপনজন। তাদের সর্বাবস্থায় সন্তুষ্ট রাখতে হবে, সম্মান প্রদর্শন করতে হবে, সেবা করতে হবে। বর্তমান সমাজে অশিক্ষিত লোকেরা মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেই; আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত লোকদের অবস্থাও করুণ এবং ভয়াবহ। অশিক্ষিত লোকদের চেয়ে শিক্ষিতরা আধুনিকতার দম্ভে মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন।

শিক্ষিত ছেলেরা যদি শিক্ষিত স্ত্রী পেয়ে যান, তাহলে মা-বাবার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। কারণ বয়োবৃদ্ধ মা-বাবার সেবায় এগিয়ে এলে তাদের বর্তমান আধুনিক স্টাইল নষ্ট হয়ে যাবে। বিধায় মা-বাবার খেদমতের ধারে কাছে আসতে রাজি হন না-বরং দূরে দূরে থাকতে চান। শিক্ষিত-অশিক্ষিত ছেলেরা তারা তাদের প্রিয়তমা স্ত্রীর কুপরামর্শে মা-বাবার স্বর্গীয় সাহচর্য ছিন্ন করতে বাধ্য হন। যা অনেক হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পশী।

বর্তমান সমাজে এর অন্যতম কারণ ইসলামী সুশিক্ষা ও নৈতিক মুল্যবোধের অবক্ষয়। শিক্ষিত লোক মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবে কেন? স্ত্রীর সুপরামর্শ সায় না দিয়ে কুপরামর্শে সায় দেবে কেন? শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা মা-বাবার অবাধ্য হলে জাতি নৈতিকতা শিখবে কোথায়? সন্তানের উজ্জল ভবিষ্যতের জন্য নিশ্চয় মা-বাবার বাধ্য থাকতে হবে। এবং তাদের সেবায় আত্ননিয়োগ করতে হবে। ইসলামের ইতিহাসে মা-বাবার দায়িত্ব ও গুরুত্ব অপরিসীম।

হাদিসে বর্ণিত-যখন কোনো সন্তান তার আপন মা-বাবার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকায়, তখন সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে তার আমলনামায় একটি ‘মকবুল হজ’এর সওয়াব লিপিবদ্ধ করে দেবেন। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! যদি কোনো ব্যক্তি দৈনিক ১০০ বার এরুপ তাকায় তবুও কি সে এই সওয়াব পাবে? তিনি জবাবে বললেন ‘হ্যাঁ’। আল্লাহ অতি মহান, অতি পবিত্র। 

হাদিসে বর্ণিত আছে যে, তার নাসিকা ধূলিসাৎ হোক, তার নাসিকা ধূলিসাৎ হোক, তার নাসিকা ধূলিসাৎ হোক- এ কথা রাসূল (সা.) তিনবার বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো- ইয়া রাসূলুল্লাহ! কে সে? যার নাসিকা ধূলিসাৎ হোক। তিনি (সা.) বললেন, ‘যে ব্যক্তি তার মা-বাবার একজনকে অথবা উভয়জনকে তাদের বার্ধক্য অবস্থায় পেল, অথচ (তাদের খেদমত করে) সে বেহেশতে প্রবেশ করল না। যে ব্যক্তি তার মায়ের চক্ষুদ্বয়ের মধ্যভাগে চুমা দেবে সে দোজখ থেকে মুক্তি পাবে।’ 

যারা মা-বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, তাদের অবাধ্যতা, কষ্ট দেয়া এবং তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে, তাদের ওপর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) এবং ফেরেশতারা অভিসম্পাত করেন। এরুপ কাজে সৃষ্টিকর্তা কখনো ক্ষমা করবেন না। মা-বাবার অবাধ্য ছেলে ও মেয়ে যত বেশি ইবাদত করুক না কেন, সে কখনো সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভ করবে না।

সারা জীবন মা-বাবার খেদমত করি না কেন, তবুও তাদের ঋণ শোধ করা যাবে না। মা-বাবার খেদমত ও তাদের দোয়া নেয়া একান্ত জরুরি। তিন ব্যক্তির দোয়া সঙ্গে সঙ্গে কবুল হয়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই- (১) মা-বাবার দোয়া, (২) মুনাফিকের দোয়া ও (৩) মজলুমের দোয়া।

মা-বাবার নেক দোয়া প্রত্যেক সন্তানের সুন্দর জীবনের শ্রেষ্ঠ পাথেয়। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আমদেরকে যথাযথ ভাবে মা-বাবার সেবা যত্ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।