• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী

বানারীপাড়ায় একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু: তদন্তে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০১৯  

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুরের একটি বাড়ি থেকে শাশুড়ি, মেয়ে জামাইসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।


ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন র‌্যাব, পুলিশ, সিআইডি (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনসহ (পিবিআই) আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এর মধ্যে রয়েছে- বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এহসানউল্ল্যাহ, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রকিবের মতো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।

পরিদর্শনকালে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পুরো ঘটনা হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। 

তবে মৃত্যুর মূল রহস্য উদঘাটনে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়ে এসপি সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আমরা সম্ভাব্য সব আলামত সংগ্রহ করেছি। নিহত তিনজনের শরীরের কোথাও তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও সবারই নাকের কাছে রক্ত দেখা গেছে। 

খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে সেটি খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে এরকম কিছুও হতে পারে। আবার পূর্ব শত্রুতার বিষয়টিও থাকতে পারে। ঘটনা যাই হোক, শিগগিরই রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী।

এদিকে পারিবারিক ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র বলছে, জমিজমা নিয়ে তেমন কারো সঙ্গে বিরোধ না থাকলেও একটি মোবাইল ফোন হারানোকে কেন্দ্র করে ঝাড়ফুঁকের একটি বিষয় সম্প্রতি আলোচনার সৃষ্টি করে এই পরিবারের সদস্যদের মাঝে। এ বিষয়ে বহিরাগত এক ব্যক্তির নাম ইতোমধ্যে পুলিশের হাতে পৌঁছেছে। 

অন্য আরেকটি সূত্র বলছে, এক রাজমিস্ত্রির সঙ্গে এ পরিবারের বর্তমান সদস্যদের সক্ষতা নিয়ে নানান প্রশ্ন রয়েছে। 

তবে এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানায়নি পুলিশ।

এদিকে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই বাড়িটিকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি উৎসুক জনতা ও গ্রামবাসী অবস্থান করছে। একসঙ্গে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় শোকাহত ও হতবাক তাদের স্বজনসহ গ্রামবাসীরাও।

এর আগে শনিবার সকালে সলিয়াবাকপুরের হাওলাদার বাড়ি এলাকার প্রবাসী আব্দুর রবের বাড়ি থেকে তার মা মরিয়ম বেগম (৭০), মেজ বোন মমতাজ বেগমের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শফিকুল আলম (৬০) ও খালাতো ভাই মো. ইউসুফের (২২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

বাড়ির মালিক কুয়েত প্রবাসী রবের স্ত্রী মিশরাত  জানান, শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে খাবার খেয়ে যে যার মতো ঘুমাতে যান। ওইসময় ঘরে তিনিসহ তার দুই শিশু সন্তান নুরজাহান (৪), ইশফাত (৯), দেবর হারুন অর রশিদের মেয়ে আছিয়া ওরফে আফিয়া, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম, ননদ মমতাজের স্বামী শফিকুল আলম ও শাশুড়ির বোনের ছেলে (দেবর) ইউসুফ ছিলেন। এরপর ভোরে ফজরের আযানের পর আফিয়ার চিৎকারের শব্দে সবাই ঘুম থেকে ওঠেন।

নিহত মরিয়ম বেগমের নাতনি আছিয়া ওরফে আফিয়া  বলেন, ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে দাদিকে ডাকতে যাই। তখন দেখি দাদির রুমের বারান্দার দরজা খোলা এবং সেখানে তার নিথর দেহ পড়ে আছে। এরপর চিৎকার দিলে বাড়ির সবাই আসেন। কিন্তু ফুপা শফিকুল আলম ও চাচা ইউসুফকে দেখতে না পেয়ে তাদের খুঁজতে থাকি।  

‘তখন ঘরের অন্য একটি কক্ষে যেখানে ফুপা (শফিকুল) ঘুমাচ্ছিলেন, সেখানে গিয়ে তার মাথার অংশ খাটের বাইরে দেখে সন্দেহ হয়। ডাকাডাকি করলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে চাচাকে (ইউসুফ) খুঁজতে ছাদের দিকে গেলে সেখানে দরজা খোলা পাই, তবে কারো দেখা মেলেনি। এরপর বাড়ির বাইরে খুঁজতে শুরু করলে চাচাকে পুকুরের ঘাটলায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখি।’

পরিবারের এই দুই নারী সদস্যদের (মিশরাত, আছিয়া) দাবি, কীভাবে এবং কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কিছুই জানেন না। এমনকি রাতে ঘুমানোর পর কোনো সাড়াশব্দও পাননি। 

তবে ঘরের ভেতরের একটি আলমারি থেকে কিছু অলংকার খোয়া গেছে বলে জানান মিশরাত। এর বাইরে আর কিছু খোয়া গেছেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নন তিনি।

এদিকে কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের ছোটভাই হারুন অর রশিদ বলেন, আমার মেজ বোনের জামাই শ‌ফিকুল ইসলাম দুই দিন আ‌গে নিজ বা‌ড়ি স্বরূপকা‌ঠি থে‌কে এ বা‌ড়ি‌তে বেড়া‌তে আ‌সেন। দুইদিন প‌রে তার ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল।

‘অপরদিকে পার্শ্ববর্তী দাড়ালিয়া এলাকা থেকে আসা খালাতো ভাই ইউসুফ পেশায় ভ্যানাচলক। এ বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ না থাকায় প্রায় রাতেই তিনি এসে থাকতেন।’