• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী

রেকর্ড প্রবৃদ্ধির টার্গেট ॥ নতুন বাজেটে জিডিপি নির্ধারণ ৮.৫ শতাংশ

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২০  

আসন্ন নতুন বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন- জিডিপিতে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য রেকর্ড জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে অর্থবিভাগ। প্রবৃদ্ধির এই হার এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবেলা, দারিদ্র্য হ্রাস, কর্মসংস্থান, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সরকার।

করোনা সঙ্কটের মতো চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জন করার কর্মসূচী নেয়া হবে বাজেটে। এজন্য করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাজেট বাস্তবায়ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের শতভাগ সাফল্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি সম্প্রতি তাদের পূর্বাভাসে বলেছে, চলমান করোনা সঙ্কটের মধ্যেও এশিয়ায় প্রবৃদ্ধি অর্জনে শীর্ষে থাকবে বাংলাদেশ। এই জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে সক্ষম হবে বলেও সংস্থাটির পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। এদিকে, দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। টানা দশবছর ধারাবাহিকভাবে এই সাফল্য আসায় বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে এখন বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

জানা গেছে, প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুফল পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। সামষ্টিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হওয়ায় দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়াতে দ্রুত এগিয়ে চলছে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের কাজ। পদ্মাসেতুর মতো বড় বড় প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে করা সম্ভব হচ্ছে।

জানা গেছে, করোনার মতো ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ কারণে গত অর্থবছরের চেয়ে বাজেটের আকার বাড়ানো হয়েছে প্রায় ১২ শতাংশের মতো। এতে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা বেড়ে বাজেটের আকার হচ্ছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এতে এনবিআরের রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। করোনার কারণে রাজস্ব আয় বাড়বে না এ রকম একটি ধারণা থেকে এবার ঘাটতি বাজেট ১ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে।এতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার বেশি ঋণ নিতে পারবে।এছাড়া দাতা সংস্থার কাছ থেকে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৭০ হাজার কোটি টাকার তহবিল আশা করছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিলের বড় অংশ বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। এসব উদ্যোগের কারণে নতুন বাজেটে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে বলে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি তার এ আশাবাদের কথা ব্যক্ত করেছেন বাজেট সংশ্লিষ্টদের কাছে। সম্প্রতি বাজেট সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, করোনার মতো চ্যালেঞ্জ সামনে রেখেই ৮ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা অসম্ভব নয়। তিনি বলেন, করোনার কারণে রাজস্ব আয় কিছুটা চাপের মুখে পড়েছে এটা সত্য। আর এ কারণেই এবার বাজেট ঘাটতি বাড়ানো হয়েছে। করোনার কারণে দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে এবার সবচেয়ে বেশি বাজেট সহায়তা পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, ভাল প্রবৃদ্ধি দেশের জন্য ইতিবাচক, অর্থনীতিতে এর একটি প্রভাব পড়বে। আগামী বাজেট হচ্ছে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বাজেট। এজন্য স্বাস্থ্যখাত উন্নয়ন ও কর্মসৃজন প্রকল্প উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। এতে করে করোনার কারণে যারা চাকরি হারাবেন বা বেকার হয়ে পড়ছেন তাদের নামমাত্র সুদে ঋণ দেয়া হবে।

এদিকে, করোনাকালেও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ হবে বলে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির আউটলুক ২০২০-এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। এডিবির পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রবৃদ্ধি কমে গেলেও এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে বাংলাদেশে। করোনার পরিস্থিতির মধ্যে এটি একটি বড় সুখবর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এডিবি বলছে, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ কারণে প্রবৃদ্ধি কমবে। এমনকি এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধিও কমে যাবে। সরকার চলতি অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। গত অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। তবে এডিবি বলছে, আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি আবার ৮ শতাংশ হবে।

এদিকে এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধি ব্যাপকভাবে কমে যেতে পারে। এডিবি বলছে, ২০২০ সালে এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে তারা মনে করছে। গতবছর গড়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল এশিয়ায়।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীন ২ দশমিক ৩ শতাংশ, ভারতে ৪ শতাংশ, ভিয়েতনামে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে এডিবি।

এদিকে, স্বাধীনতার ৪৮ বছরে মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপিতে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে। অভ্যন্তরীণ ভোগ চাহিদা, সরকারী ব্যয়, রেমিটেন্স, রফতানি ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ঋণের বিপরীতে উচ্চসুদ, রাজস্ব আদায়, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের মতো নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এসব চ্যালেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসের নাম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর গত দশ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। রূপকল্প-২১ সামনে রেখে আগামী দুই বছরের মধ্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘মডেল’ বলে ইতোমধ্যে মত প্রকাশ করেছেন এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক এই অর্জনে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী জি-২০’র সদস্য রাষ্ট্রের সদস্য হওয়ার সুযোগ আসছে বাংলাদেশের জন্য।

জানা গেছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে শুধু বৈদেশিক উৎস থেকে আহরণ করে বছরে ৮৫ হাজার কোটি টাকা (১০ বিলিয়ন ইউএস ডলার) প্রবৃদ্ধি সঞ্চারী খাতে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংক গ্রুপ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি, আইডিবি এবং অন্যান্য দাতা সংস্থার কাছ থেকে এই অর্থ আসবে। একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। এ লক্ষ্যে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে রফতানি বহুমুখীকরণ এবং রেমিটেন্স বৃদ্ধির ওপর। ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ায় রেমিটেন্স আহরণ বাড়ছে। অন্যদিকে নানা কারণে কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে রফতানি বাণিজ্যে।

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আরও জানান, জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে শীর্ষে অবস্থান করছে। বেড়ে চলছে মাথাপিছু আয়। স্বল্পোন্নত থেকে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। তিনি বলেন, জনসংখ্যা, গড় আয়ু, শিশুমৃত্যুর হার, মেয়েদের স্কুলে পড়ার হার, সক্ষম দম্পতিদের জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের হারসহ সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ সমপর্যায়ের উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশ, এমনকি প্রতিবেশী ভারতকেও পেছনে ফেলতে সমর্থ হয়েছে। যে পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ, সেই পাকিস্তানীরা আজ বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে দেখে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে শুরু করে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ দেশের সবচেয়ে সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দশ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সারা বিশ্বে সবার ওপরে। এ সময় বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮৮ শতাংশ, যা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর চেয়েও বেশি।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলো যা বলছে ॥

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিবাচক মতবাদ ব্যক্ত করে আসছে। সম্প্রতি ‘দ্য স্পেক্টেটর ইনডেক্স’-এ প্রকাশিত বিশ্বের ২৬টি শীর্ষ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, বাংলাদেশ জিডিপিতে অর্জন করেছে বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি। গত ২০০৯-১৯ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের ১০ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮৮ শতাংশ। ওই সময় চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭৭ শতাংশ ও ভারতের ১১৭ শতাংশ। অন্যান্য দেশের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ৯০, মালয়েশিয়া ৭৮, অস্ট্রেলিয়া ৪১, মেক্সিকো ৩৭, ইতালি ৮, জার্মানি ১৫, মিসর ৫১ এবং ব্রাজিল ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

আগামী ২০২৩ সালে বাংলাদেশ হবে ৩৬তম অর্থনীতির দেশ। পরের পাঁচ বছর আরও ৯টি দেশকে পেরিয়ে ২০২৮ সালে ২৭তম বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে মর্যাদা লাভ করতে সক্ষম হবে। এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন,গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। তবে করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি এখন চাপের মুখে রয়েছে। এ অবস্থায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জন একটি বড় বিষয়। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির এই সুফল দেশের সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বাড়াতে হবে কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্য হ্রাসে বেশি কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে।

আয় বৈষম্য কমিয়ে এনে সুষম বণ্টন ব্যবস্থায় যেতে পারলে দেশের দারিদ্র্য হ্রাস পাবে।

জানা গেছে, গত অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি সঞ্চারী বিভিন্ন প্রকল্পে ৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিদেশী ঋণের অর্থ ব্যবহার করা সম্ভব হয়। এর আগের বছরগুলোতে গড়ে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ব্যবহার করা যায়নি। কিন্তু অর্থ ব্যবহারের সক্ষমতা এবং দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বিদেশী ঋণ ও অনুদানের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সন্তুষ্ট দাতাদেশগুলো। অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, সময়মতো ঋণ পরিশোধ করায় খুশি দাতারা। ঋণ পরিশোধেও বাংলাদেশ প্রথমসারির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ কারণে দাতারাও বাংলাদেশে তাদের ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এতে আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আজিজুল আলম বলেন, রূপকল্প-২১ সামনে রেখে দুই বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। গত বছর প্রবৃদ্ধি সঞ্চারী খাতগুলোতে প্রায় সাড়ে ৪২ হাজার কোটি টাকা বিদেশী অর্থ ব্যবহার করা হয়। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই অঙ্ক ৮৫ হাজার কোটিতে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, সময়মতো ঋণ পরিশোধে সক্ষমতা, দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি দেশের ভিশন ও মিশন স্থির করে দেয়ায় দাতারা বেশি অর্থায়ন করতে চাচ্ছে। ইতোমধ্যে এডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থা তাদের ঋণ ও অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, ১০ বিলিয়ন বা ৮৫ হাজার কোটি টাকার বিদেশী ঋণ নেয়া হলেও বাড়তি কোন চাপ হওয়ার আশঙ্কা নেই। বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে সরকারের আয় ইতোমধ্যে কয়েকগুণ বেড়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যেতে সরকারী বিনিয়োগ ৮ শতাংশ বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে।