• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা

১৬ দুর্গম চরে বিদ্যুৎ যাচ্ছে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

ভোলা ও পটুয়াখালীর ১৬টি দুর্গম চরে বিদ্যুতায়নের কাজ এগিয়ে চলছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিচ্ছিন্ন এসব চরাঞ্চলে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হচ্ছে। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড’র মাধ্যমে প্রায় ৪’শ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুতের কাজ হচ্ছে। এসব চরের মধ্যে ভোলার সদরে ভবানীপুর, মেদুয়া ও কাচিয়া চর। তজুমোদ্দিনের মলংচরা, সোনাপুর, চর জহিরউদ্দিন, চর মোজাম্মেল ও চর আব্দুল্লাহ। চরফ্যাশনের চর কুকরি-মুকরি ও মুজিবনগর। এছাড়া পটুয়াখালীর চর মমতাজ, চর বোরহান, চর বিশ্বাস, চর কাজল, চর হাদি ও লক্ষ্মীপুরের সোনার চরসহ মোট ১৬টি চর রয়েছে। মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও বুড়া গৌড়াঙ্গ নদীর তলদেশ দিয়ে চলমান কাজের ৪০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।

এসব চরে মোট জনসংখ্যা ২ লাখের মত। এখানে মোট বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হচ্ছে ১৪’শ কিলোমিটার এলাকা। এর মাধ্যমে উপকৃত হবে ৩৯ হাজার পরিবার। পরবর্তীতে গ্রাহক সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। - বাসস

জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা জানান, ভোলার সদর উপজেলার ৩টি চরে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুতের কাজ হয়েছে ৫০ ভাগ। তজুমদ্দিনের ৫টি চরে ও লক্ষ্মীপুরের চরে কাজ শেষ হবে আগামী জুনের মধ্যে। চরফ্যাশনের চর কুকরি-মুকরির ৭৫ ভাগ কাজ, চর মুজিবনগর ৮০ ভাগ। এছাড়া পটুয়াখালীর চর মমতাজ ৬০ ভাগ ভাগ এবং বাকি ৪টি চরের কাজ ৫০ ভাগ শেষ হয়েছে। পটুয়াখালীর ৫টি চর ও লক্ষ্মীপুরের একটি চর ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় থাকায় এসব কাজ এখান থেকে করা হচ্ছে।

ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আবুল বাশার আজাদ বলেন, এরই মধ্যে সমগ্র জেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন অফগ্রীড এলাকায় বিদ্যুতের আলো পৌঁছানোর কাজ চলছে। এর মধ্যে চরফ্যাশনের মুজিব নগর চরে সাবমেরিন ক্যাবলের লাইন টানা হয়ে গেছে। কুকরি-মুকরিতে সাবমেরিন ক্যাবল চলে এসেছে। ১৫ দিনের মধ্যে নদীর তলদেশে দিয়ে কাজ শুরু হয়ে যাবে। তজুমোদ্দিন উপজেলার চরগুলো বাদে অন্যান্য চরগুলোতে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সাবমেরিন ক্যবলের কাজ শেষ করে মার্চের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করার টার্গেট রয়েছে।

এদিকে চরে বসবাস করা মানুষগুলো শহরের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অনেকটাই প্রকৃতির উপর তাদের নির্ভর করতে হয়। বিদ্যুৎ হলো তাদের কাছে এক স্বপ্নের মতো। তারা কখনো ভাবেনি এ দুর্গম জনপদে বিদ্যুৎ আসবে। তাদের স্বপ্ন এবার হাতের মুঠোয় ধরা দিচ্ছে। তাই দুর্গম চরাঞ্চলে বিদ্যুতায়নের খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছে স্থানীয় লাখো মানুষ। তারা মনে করছেন, এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অন্ধকারের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে আলোর পথে নতুন যাত্রা শুরু করবে তারা। একইসাথে জীবনমানে পরিবর্তন আসবে তাদের। অবহেলিত এ জনপদে যোগ হবে নতুন দিগন্তের সূচনা।

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরি-মুকরি। আজ থেকে প্রায় ৪ দশক আগেও দ্বীপটিতে তেমন জনবসতি ছিল না। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এটি একটি ইউনিয়নে পরিণত করা হয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান মহাজোট সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর এ দ্বীপটির উন্নতি শুরু হয়। চরটিতে বর্তমানে জনসংখ্যা ২৫ হাজারেরও বেশি। মূলত এটি পর্যটন এলাকা হিসেবে সারাদেশে পরিচিত।

চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসেম মহাজন বলেন, দুর্গম চরে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান শেখ হাসিনার সরকারের যুগান্তকারী একটি উদ্যোগ। পিছিয়ে পড়া এ জনপদ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হবে। আর্থ সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। বিশেষ করে এখানে পর্যটনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বিদ্যুৎ। কারণ বছরের বিভিন্ন সময়ে এখানে পর্যটকরা এসে ভিড় করে। বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের বিভিন্ন সমস্যা পোহাতে হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ফরিদ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের ছেলে মেয়েরা সন্ধ্যার পর ঠিক মতো পড়া লেখা করতে পারেনা। তেল কিনে কুপি-হারিকেনের বাতি দিয়ে সবার পক্ষে রাতে ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা করা সম্ভব হয় না। সবার পক্ষে সোলার কেনাও সম্ভব নয়। তাই প্রত্যন্ত চরে বিদ্যুৎ দেয়ার উদ্যোগ নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

পল্লী বিদ্যুত সমিতির জিএম আরো বলেন, যেখানে কখনো আমাদের সাবমেরিন ক্যাবল পৌঁছানো সম্ভব নয় এমন ৩টি দুর্গম চরে সোলার’র মাধ্যমে আলোকিত করা হবে। এরই মধ্যে এ কাজের টেন্ডার পক্রিয়া হয়ে গেছে। ৯’শ ৪৬টি সোলার দেয়া হবে দৌলতখানের হাজিপুর চর, চরফ্যাশনের ঢালচর ও চর নিজামে। মার্চের মধ্যে এসব কাজ শেষ করা হবে।