• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ইতিহাস ইতিহাসই, কেউ মুছে ফেলতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিরবচ্ছিন্ন অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৯৪৮ সাল থেকেই জাতির পিতা ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনেও তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তবে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, একসময় তার নাম ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস ইতিহাসই, তা কেউ মুছে ফেলতে পারে না। বাস্তবতা হলো, ১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধু যখন ভাষা আন্দোলন শুরু করেন, তখন থেকেই পাকিস্তানি বাহিনী তার ওপর নজরদারি ও তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন লিখতে শুরু করে।’

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার পর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘একুশে পদক ২০২০’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইবি (গোয়েন্দা) রিপোর্টে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলা হয়- ১৯৫২ সালে জেলে থেকেও তিনি ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। জেলে গিয়ে ছাত্ররা তার সঙ্গে দেখা করতেন। তারা দেখা করতে গিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে গিয়ে কী কথা বলতেন, তা শোনার জন্য বাইরে থেকে অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছু শুনতে পাইনি। দায়িত্বরত পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, ছাত্ররা যেনো জেলে এসে বৈঠক করতে না পারে, কিন্তু পুলিশ তা শোনেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর কোনও দেশেই কোনও নেতার বিরুদ্ধে লেখা গোয়েন্দা প্রতিবেদন কেউ প্রকাশ করেনি। আমি এটা করেছি। কারণ, ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, সবকিছু থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার একটা চেষ্টা করা হয়েছে দীর্ঘ ২১ বছর। তাই আমি চেয়েছি, সত্যটা মানুষের জানা উচিত। এই গোয়েন্দা প্রতিবেদনের এর চার খণ্ড বই আকারে প্রকাশ হয়েছে। পঞ্চম খণ্ড প্রকাশ হচ্ছে। মোট চৌদ্দ খণ্ড প্রকাশ করা হেবে। বাংলাদেশের যে ইতিহাস, তার বিরাট অংশ এই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে পাওয়া যায়।’

দেশভাগের পরপরই ভাষা নিয়ে ষঢ়যন্ত্র হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৯৪৭ সালে করাচিতে শিক্ষা সম্মেলন হয়, সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় যে- পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। তখন থেকেই কিন্তু আন্দোলনের সূত্রপাত। তখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিনের বাসায় মিছিল নিয়ে যায় ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসে। এরপর ১৯৪৮ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনে ভূমিকা রাখেন। এরপর থেকেই গোয়েন্দারা তার নামে গোপন প্রতিবেদন লিখতে শুরু করে।’

ভাষা আন্দোলনকারীদের রক্তের ঋণের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,‘তাদের রক্কের বিনিময় অর্জিত হয়েছে আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার। আমরা চাই এই গৌরবের ইতিহাস আমাদের দেশের প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত পৌঁছে যাক। এখন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে অন্য ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা আছে, তাই বলে নিজের ভাষাকে ভুলে যাওয়া ঠিক নয়।’

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘মধুসূদন দত্ত ইংরেজিতে সাহিত্য চর্চা করেছিলেন, সাহেব হয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত আবার নিজের ভাষায় সাহিত্য চর্চা করেছেন, ফিরে এসেছেন। নিজের ভাষা ছাড়া যে তৃপ্তি পাওয়া যায় না, তাই তিনি আবার ফিরে এসেছিলেন।’

২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেতে কানাডাপ্রবাসী আবদুস সালাম ও রফিকুল ইসলাম নামের যে দুজন দীর্ঘদিন প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘১৯৫২ সালের দুজন ভাষা শহীদের নামে আপনাদের নাম। আপনাদের মাধ্যমেই হয়তো ভাষা শহীদ ও দিবসের স্বীকৃতির উদ্যোগ নেওয়ার কথা ছিল।’  

নিজেদের পরিচয় নিয়ে গর্বের সঙ্গে চলার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন,‘ গত এক দশকে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়েছে, এই অগ্রযাত্রা যেনো অপ্রতিরোধ্যভাবে অব্যাহত থাকে আমরা সেটাই চাই। সেই সঙ্গে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা অব্যাহত ও আন্তর্জাতিকভাবে বিস্তৃতি লাভের ব্যাপারেও সক্রিয় থাকতে হবে। আমরা বাঙালি। বাঙালি হিসেবেই বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলবো।’

এর আগে, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২০ ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘একুশে পদক-২০২০’ প্রদান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসালাম।