• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

শেবামেকের পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার সক্ষমতা বেড়েছে বহুগুন

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২০  

 

বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে করোনা উপসার্গ দেখা দেওয়া রোগীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে স্থাপন করা হয় আরটি-পিসিআর ল্যাব।

গত ৯ এপ্রিল ধার করা টেকনোলজিস্টদের নিয়ে পরীক্ষামুলকভাবে শুরু হয়েছিল কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে গত এক মাসের ব্যবধানে নমুনা সংগ্রহের পরিমান বৃদ্ধির সাথে সাথে ল্যাবটিতে পরীক্ষা কার্যক্রমে বেড়েছে সক্ষমতাও।

কিন্তু পরীক্ষা কার্যক্রম শুরুর এক মাস অতিবাহিত হলেও সমাধান হয়নি জনবল সংকটের। তিন প্রতিষ্ঠান থেকে ধার করে আনা সাতজন টেকনোলজিস্ট দিয়েই চলছে আরটি-পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা কার্যক্রম।

এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী সংকট মোকাবিলায় আরটি-পিসিআর ল্যাবে দক্ষ টেকনোলিজস্ট নিয়োগ বা পদায়নের দাবি জানিয়েছেন বিভাগটির দায়িত্বরতরা। অন্যথায় মুখ থুবরে পড়তে পারে কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রায় আট বছর পূর্বে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে সংযুক্ত করা হয় ভাইরোলজি বিভাগ। বিভাগটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন সহকারী অধ্যাপক এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক টেকনোলজিস্ট এর পদ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পরে বিভাগটির জন্য কোন চিকিৎসক, কেনোলজিস্ট, পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি এমনকি ল্যাব পর্যন্ত স্থাপন হয়নি।

হঠাৎ করেই দেশে করোনাভাইরাস হানা দেওয়ায় গুরুত্ব বেড়ে যায় ভাইরোলজি বিভাগের। তবে এ বিভাগটিতে জনবল সংকটের কারণে মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধিনে শুরু হয় করোনা ভাইরাসের নমুন পরীক্ষা কার্যক্রম। এ জন্য ওই বিভাগের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে স্থাপন করা হয় কোভিড-১৯ পরীক্ষার আরটি-পিসিআর ল্যাব। তবে ল্যাব স্থাপন হলেও সংকট দেখা দেয় টেকনোলজিস্টের। কিন্তু তার মধ্যেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় মেডিকেল কলেজসহ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে টেকনোলজিস্ট এনে শুরু করা হয় পরীক্ষা কার্যক্রম।

আরটি-পিসিআর ল্যাবের ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. একেএম আকবর কবির  বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিরীক্ষার বিষয়টি মূলত ভাইরোলজি বিভাগের। কিন্তু আমাদের এখানে নামে মাত্র বিভাগটি থাকলেও পূর্বে থেকেই কোন কার্যক্রম নেই। এ কারণে দেশের এই চরম পরিস্থিতিতে তরিঘরি করেই মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে অধিনে কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা শুরু হয়।

তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা নিরীক্ষার মূল যে কাজ সেটা টেকনোলজিস্টরা করে থাকেন। কিন্তু আমাদের এখানে টেকনোলজিস্ট সংকট। মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে দু’জন মাত্র টেকনোলজিস্ট আছেন। তারা কোভিড-১৯ পরীক্ষার বিষয়ে অভিজ্ঞ নয়। ওই দু’জন এবং শেবাচিম হাসপাতাল ও পার্শ্ববর্তী আইএইচটি থেকে আরও পাঁচজনসহ মোট ৭ জন নিয়ে পিসিআর ল্যাবে কাজ চলছে। এদেরকে মেশিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এক সপ্তাহ প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন দুই শিফটে পাঁচজন করে টেকনোলজিস্ট কাজ করেছেন। কাজের ফাঁকে তাদের বিশ্রাম নিতে সহযোগিতা কারছেন অপর দু’জন। এরা পরীক্ষার পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহের কাজও করে থাকেন। এমনি করে সংকটের মধ্যেই গত ৯ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত টানা এক মাসে দুই হাজার ২৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘আমারা যে টেকনোলজিস্টদের নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে কাজ শুরু করেছিলাম তাদের কার্যক্ষমতা আগের থেকে বেড়েছে। তাছাড়া ল্যাবের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন একটি সেফটি কেবিনেট সংযুক্ত হয়েছে। যে কারণে গত সপ্তাহে মোট ৮৪২ জনের পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যে চার দিন ১৪০ জন করে এবং তিন দিন ৯৪ জন করে নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। অথচ শুরুতে প্রতিদিন মাত্র ২২-২৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব ছিল। এখন নমুনার সাথে সাথে পরীক্ষার সক্ষমতাও বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ১৪০ জনের নমুন পরীক্ষা করা সম্ভব। এটা করতে হলে প্রতিদিন পিসিআর মেশিনে ডাবল লোড দিতে হবে। যে চারদিন ১৪০ জন করে পরীক্ষা করা হয়েছে সে চারদিন ডাবল লোড দিয়েই করা হয়েছে। বরিশালসহ সারা দেশে যত পিসিআর মেশিন রয়েছে সেগুলোতেও ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৪০টি করে নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে।

ডাবল লোড দিয়ে পরীক্ষা করতে হলে জনবলের থেকেও বেশি প্রয়োজন দক্ষ টেকনোলজিস্টের। এখন যারা আছেন তাদের দিয়ে কাজ করাতে হলে অনেক বার্তি সময় লেগে যায়। তাই ভাইরোলজি ল্যাবে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে এমন অন্তত দু’জন টেকনোলজিস্ট শেবামেকের পিসিআর ল্যাবে পদায়ন করা জরুরী বলে জানান তিনি।

মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. টিএম জাহাঙ্গীর হোসাইন  বলেন, ‘মুলত পিসিআর ল্যাবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ডা. একেএম আকবর কবিরকে। এছাড়া ওকে সহযোগিতার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলামকেও এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। বড় কোন সমস্যা বা প্রয়োজন হলে আমরা দু’জন ওকে সহযোগিতা করছি। তবে শিক্ষক বা চিকিৎসকের থেকেও বেশি জরুরী টেকনোলজিস্ট।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ডা. এসএম সারওয়ার  বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল কলেজে পূর্বে থেকেই টেকনোলজিস্ট সংকট। বর্তমানে সব বিভাগ মিলিয়ে ১২ জন টেকনোলজিস্ট রয়েছে। পিসিআর ল্যাবে দক্ষ টেকনোলজিস্টের পাশাপাশি ভাইরোলজি বিভাগে চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট পদায়নের জন্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রতি মাসেই আবেদন পাঠানো হচ্ছে। সেটা না পাওয়া পর্যন্ত এভাবেই চালিয়ে যেতে হবে বলে জানান তিনি।