• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বের প্রাণঘাতী ৭টি ভাইরাস

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২০  

 

মানুষ আজকের এই আধুনিক অবস্থায় পৌঁছার পূর্ব থেকেই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে আসছে। কিছু কিছু ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধ করার জন্য মানুষ টিকা ও ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ ব্যবহার করে সফল হয়েছে। যেমন টিকা ব্যবহার করার ফলে ১৯৮০ সাল থেকে ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট গুটি বসন্ত রোগ নির্মূল হয়েছে।

 

গুটি বসন্ত ভাইরাস নির্মূল হলেও কয়েক বছর আগে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলার প্রাদুর্ভাব মানুষকে ব্যাপক আতঙ্কিত করে ফেলেছিল। মানুষ তখন পুনরায় ভাবতে থাকে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হওয়া খুব একটা সহজ কাজ নয়।

 

ইবোলা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগীর শতকরা ৯০ ভাগেরই মৃত্যু হয়। তাই ইবোলা ভাইরাসের গোত্রে ইবোলাকেই সবচেয়ে মারাত্মক ভাইরাস বলা হয়। তবে ইবোলা ছাড়াও আরও অনেক ভাইরাস আছে খুবই প্রাণঘাতী। এখন জানাব এমনই কয়েকটি প্রাণঘাতী ভাইরাস সম্পর্কে।

মারবার্গ ভাইরাস

 

১৯৬৭ সালে মানুষ মারবার্গ ভাইরাসের সঙ্গে প্রথম পরিচিত হয়। জার্মানির মারবার্গের একটি পরীক্ষাগারে হঠাৎ এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় ৩১ জন লোক এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে ৭ জন মারাও যান। জানা যায় প্রথম যে ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি উগান্ডা থেকে আফ্রিকান সবুজ বানর নিয়ে এসে গবেষণা করছিলেন। এই বানর আক্রান্ত হয়েছিল বাদুড় থেকে।

 

মারবার্গ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা হেমোরেজিক ফিভার বা জ্বরে ভুগতে থাকেন। হিমোরেজিক ফিভার হলে রোগী উচ্চ তাপমাত্রার জ্বরে ভোগেন। এরপর শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তপাত ঘটে ও রোগী মারা যায়।

 

মারবার্গ ভাইরাস উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে, কঙ্গো, কেনিয়া, এঙ্গোলা এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়েছিল। বাদুড় বসবাস করে এমন অনেক খনির গর্তের শ্রমিক এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল।

 

প্রথম যখন এই ভাইরাস ছড়ায় তখন মৃত্যুহার ছিল শতকরা ২৫ ভাগ। কিন্তু ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০০ সালে কঙ্গোতে এই ভাইরাস শতকরা ৮০ ভাগ রোগীর মৃত্যু ঘটিয়েছিল।

 

ইবোলা ভাইরাস

 

উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর ও রক্তক্ষরণ নিয়ে আরেকটি ভাইরাসজনিত রোগ প্রকাশ পায় ১৯৭৬ সালে। সে সময় পশ্চিম আফ্রিকার দেশে ৩১৪ জন লোক এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। যাদের মধ্যে ২৮০ জনই মারা যান।

 

ভাইরাস

ইবোলা ভাইরাস 

 

সম্প্রতি ২০১৪ সালে পুনরায় আফ্রিকার দেশগুলোতে ইবোলা ভাইরাস আক্রমণ করে। যেখানে ৭ হাজার ৪০০ লোক আক্রান্ত হন এবং ৩ হাজার ৪০০ জন মারা যান। ইবোলা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে মৃত্যুহার ৫০ থেকে ৯০ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে।

 

জলাতঙ্ক

 

জলাতঙ্ক ভাইরাসজনিত রোগ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর মাধ্যমে ছড়ায়। তবে আমাদের দেশে প্রধানত কুকুরের কামড়েই এই রোগ ছড়িয়ে থাকে। জলাতঙ্ক ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ লক্ষণ প্রকাশ পেলে মৃত্যু নিশ্চিত।

 

জলাতঙ্ক ভাইরাসের কারণে প্রতি বছর ৫৯ হাজারের অধিক লোকের মৃত্যু হয়। অর্থাৎ বিশ্বে প্রতি ৯ মিনিটে একজন লোক মারা যান জলাতঙ্কের কারণে। জলাতঙ্ক খুবই ভয়াবহ হলেও ১৯২০ সালে পোষাপ্রাণীতে টিকা প্রদান করার মাধ্যমে এর ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধির পরিমাণ ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে।

 

এইচআইভি ভাইরাস

 

আধুনিক যুগের সবচেয়ে মারাত্মক প্রাণঘাতী ভাইরাস বলা হয় এইচআইভি ভাইরাসকে। এখনো এই ভাইরাস দ্বারা বহু লোকের প্রাণহানি ঘটছে।

 

ভাইরাস

এইচআইভি ভাইরাস 

 

১৯৮০ সালে যখন এই ভাইরাস সনাক্ত হয় তখনই প্রায় ৩৬ মিলিয়ন রোগীর মৃত্যু হয়। প্রতি বছর এখনো ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন লোক মারা যাচ্ছে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে এই ভাইরাস তার ক্ষতিকর প্রভাব ছড়িয়েই যাচ্ছে।

 

গুটি বসন্ত

 

গুটি বসন্ত ইউরোপের দেশগুলোতে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। বিংশ শতাব্দীতে এই ভাইরাস তিনশত মিলিয়ন লোকের প্রাণহানি ঘটায়। সফল টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে ১৯৮০ সালে এই ভাইরাসকে বিশ্ব থেকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়।

 

ডেঙ্গু ভাইরাস

 

ডেঙ্গু ভাইরাস মশার মাধ্যমে বাহিত হয়। এই ভাইরাস ১৯৫০ সালে প্রথম ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডে সনাক্ত করা হয়। পরে এটি বিশ্বের গ্রীষ্মপ্রধান ও প্রায় গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

 

প্রতি বছর ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত জ্বরে ২৫ হাজার রোগীর মৃত্যু হয়। গত বছর আমাদের দেশেও মারাত্মকভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়েছিল। এতে শতাধিক রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।

 

রোটা ভাইরাস

 

বিশ্বজুড়ে রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া ঘটিয়ে শিশুদের মৃত্যু ঘটাচ্ছে। এই ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় বিশ্বে প্রতি বছর ৫ লক্ষের অধিক শিশু মারা যায়।

 

বিশ্বে ২০০৮ সালে পাঁচ বছর বয়সের কম বয়সী প্রায় ৪ লাখ ৫৩ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছিল এই ভাইরাসে। মূলত ডায়রিয়া, বমি, পেট ব্যথা ও পানিশূন্যতার কারণেই মৃত্যু হয়।

 

ভাইরাস

রোটা ভাইরাস 

 

উন্নত দেশগুলোতে মৃত্যুহার কম হলেও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মারাত্মক বিপর্যয়ের কারণ এটি। গত কয়েকদিন থেকে কুড়িগ্রাম জেলায় এই ভাইরাস ব্যাপক ছড়ানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। শীতকালে এই ভাইরাস বেশি ছড়ায়।

 

উপরিউক্ত ভাইরাস ছাড়াও ইনফ্লুয়েঞ্জা, হান্টা ভাইরাস, হেপাটাইটিস বি ভাইরাস ইত্যাদিও মানুষের জীবনের জন্য অনেক ক্ষতিকর। ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর জন্য তেমন কোনো ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ নেই। বিশেষ করে আমাদের মতো দেশগুলোতে ভাইরাস যে কতটা ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে তা গত বছর ডেঙ্গু ভাইরাসই বুঝিয়ে দিয়ে গেছে। তাই আমাদের ভাইরাস ছড়ানোর কারণগুলো জেনে সেই সকল বিষয়ে খুবই সচেতন হওয়া উচিত।

 

সূত্র- লাইভ সায়েন্স, সিডিসি