• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি

খুন করে স্বামীর পাশে রাত কাটালেন স্ত্রী

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮  

প্রাক্তন স্বামীকে ভাড়াবাড়ির ঘরে খুন করে মৃতদেহের সঙ্গে রাত কাটালেন বছর চল্লিশের এক নারী। ভোরের আলো ফুটতেই চুপচাপ চলে গেলেন নিজের বাড়িতে। এর পর স্নান-খাওয়াদাওয়া সেরে নিজের কর্মক্ষেত্র এয়ারপোর্টে চলে গেলেন। সারা দিন সেখানে কাজও করলেন। ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পেলেন না যে, কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি নিজের স্বামীকে খুন করে এসেছেন!

ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে ৫২ বছরের প্রৌঢ় প্রতুল চক্রবর্তীর খুনের রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে এই তথ্য তাজ্জব করে দিয়েছে পুলিশ কর্তাদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয় প্রতুলের। মাত্র চার দিন আগেই পানিহাটি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকায় শ্যামল মজুমদারের বাড়ির দোতলায় ঘর ভাড়া নেন প্রতুল।

নিজেকে তিনি গুরুগ্রামের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। বাড়ি মালিককে জানিয়েছিলেন, একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থায় উঁচু পদে কাজ করেন তিনি । সোদপুরে ওই সংস্থার একটি শাখা অফিস খোলা হবে। তাই কিছু দিন পানিহাটিতেই থাকবেন।

বাড়ির মালিক শ্যামল মজুমদার শুক্রবার বলেন, ‘একাই থাকতেন ওই ব্যক্তি। হোম ডেলিভারিতে খাবার আসত।’ বৃহস্পতিবার খাবার দিতে এসেছিল ডেলিভারি বয়। বার বার ডাকার পর প্রতুলের কোনও উত্তর না পাওয়ায় তিনি শ্যামলবাবুকে ডাকেন। এর পর তাঁরা ভেজানো দরজা ঠেলে ঢুকে দেখেন, প্রতুলের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে বিছানায়। গলায় শাড়ির ফাঁস।

তদন্তে নেমে প্রথমেই পুলিশ আটক করে শ্যামলকে। জানা যায় অমিতাভ রায়চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে শ্যামলের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতুলের। কিন্তু প্রথমেই হোঁচট খেতে হয় পুলিশকে। এক তদন্তকারী বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির নাম এবং গুরুগ্রাম ছাড়া আমাদের কাছে কোনও তথ্য ছিল না।’ এমন একটা অবস্থায় সামান্য আলোর দেখা পান গোয়েন্দারা।

এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘মৃতের ঘরে তল্লাশি চালাতে গিয়ে আমরা মহিলাদের একটি রুমাল এবং বাগুইআটি এলাকার একটি হোটেলের বিল খুঁজে পাই।’

নারীর উপস্থিতি জানার পরই খড়দহ থানার আইসি মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলেই পুলিশ বাগুইআটির ওই হোটেলে যায়। সেখানে প্রতুল আধার কার্ডের ফোটোকপি দিয়েছিলেন। সেখান থেকে কাশীপুরের একটি ঠিকানা পান তদন্তকারীরা।

সেই ঠিকানায় গিয়ে পুলিশ জানতে পারেন অদিতি চক্রবর্তীর কথা। জানা যায় প্রতুলের স্ত্রী অদিতি। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পদস্থ কর্মী অদিতিকে এর পর জেরা শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীরা অনেকটাই নিশ্চিত ছিলেন যে, খুনের পেছনে কোনও মহিলার ভূমিকা আছে। শেষ পর্যন্ত রাতভর জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেন অদিতি। পুলিশকে তিনি জানান, বছর দশেক আগে তাঁর সঙ্গে প্রতুলের বিয়ে হয়। প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর প্রতুলকে বিয়ে করেন তিনি।

কিন্তু, বিয়ের পর থেকে বেশির ভাগ সময়ে প্রতুল গুরুগ্রামেই থাকতেন নিজের কর্মক্ষেত্রে। মাঝে মাঝে কাশীপুরে এসে অদিতির সঙ্গে থাকতেন। অদিতির প্রথম পক্ষের একটি ছেলে রয়েছে। এই পক্ষের রয়েছে একটি মেয়ে।

কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই প্রতুল তার উপর অত্যাচার করতেন বলে অদিতির অভিযোগ। সম্প্রতি তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে বলেও জানান অদিতি। প্রতুলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েই তাকে খুন করেছেন বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন তিনি। বাজার থেকে প্রতুল প্রচুর ঋণ করেছিলেন অদিতির নাম করে।

এমনকি তার কাশীপুরের ঠিকানাও প্রতুল ব্যবহার করেন বলে অদিতির অভিযোগ। দিন কয়েক আগে গুরুগ্রাম থেকে এসে বাগুইআটির একটি হোটেলে উঠে অদিতিকে ডেকে পাঠান প্রতুল। সেখানে তাদের মধ্যে টাকাপয়সা সংক্রান্ত কিছু কথা হয়। এর পরেই পানিহাটি এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানেও ডেকে পাঠান অদিতিকে। অদিতি সেখানে যান। তার পরেই রাতেই মত্ত প্রতুলকে খুন করেন বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন অদিতি।

শুক্রবার অদিতিকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি জোন (২) আনন্দ রায় বলেন, “আমরা ওই মহিলাকে জেরা করছি। কেন তিনি খুন করলেন তা তদন্ত করা হচ্ছে।’