• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি

ডেঙ্গু বিস্তারের পরিধি বাড়ছে

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২১  

করোনা সংকটের মধ্যেই দেশে ডেঙ্গু বিস্তারের পরিধি বাড়ছে। নতুন করে বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। বরিশালের নতুন ৪টি জেলাসহ এখন ২০ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে। এ নিয়ে চলতি বছরের মোট ২৯ জেলায় ডেঙ্গু পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো এলাকায় রোগী পাওয়া মানে ওই এলাকায় ডেঙ্গু বাহক এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র রয়েছে। রোগী কম হলেও চিহ্নিত এলাকাগুলো গুরুত্ব দিতে হবে। এসব এলাকায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে।

কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জুলাই মাসে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত ও উপযুক্ত তাপমাত্রায় এডিস মশা জন্মানোর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে মশা জন্মানোর স্থানগুলোতে কীটনাশক না ছিটালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত (৩ আগস্ট) বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৪৪৬ জন। এরমধ্যে রাজধানীতে ৩ হাজার ৩২৮ জন ও ঢাকার বাইরে ১১৮ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২ হাজার ৩৭০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সী অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানায়, সারাদেশে বর্তমানে ১ হাজার ৭২ জন ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ২৫ জন। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি রয়েছেন ৪৭ জন রোগী।

হেলথ্ ইমার্জেন্সী অপারেশনস সেন্টার জানায়, মহানগর ব্যতীত ঢাকা বিভাগের ৯ জেলায় ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে ঢাকা, ফরিদপুর, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর। এসব জেলায় ৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২৬ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

চট্টগাম বিভাগের চট্টগাম, বান্দরবান, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সর্বমোট ৯ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। এরমধ্যে বর্তমানে ৫ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ময়মনসিংহ বিভাগে মোট ১৪ জন রোগী পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে খুলনা বিভাগে। চলতি বছর এ বিভাগে ৩৫ জন রোগী শনাক্ত হয়। এরমধ্যে খুলনা সদরে ১ জন, যশোরে ২৩ জন, নড়াইলে ৪ জন, কুষ্টিয়ায় ১ এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬ জন। যার মধ্যে ২৯ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে ১ জন করে মোট ৩ জন রোগী পাওয়া গেছে। তিনজন রোগীই বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আর বরিশাল বিভাগের সদর জেলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ঝালকাঠিতে ১ জন করে ৪ জন রোগী পাওয়া গেছে। আক্রান্তরা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সী অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, সিলেট ও রংপুর বিভাগে এখনো কোনো ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি। এছাড়া দেশে এখনো ডেঙ্গুতে কারো মৃত্যু নিশ্চিত হয়নি। তবে ডেঙ্গু সন্দেহে ৪টি মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনা করছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর)।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ডেঙ্গু ও সন্দেহজনক ডেঙ্গু রোগীর ভর্তির তথ্য রোগী হাসপাতালে ভর্তির দিনই সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত পরীক্ষা নিরীক্ষা করা সম্ভব হয় না বিধায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে তারা ডেঙ্গু রোগী কিনা তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

মানুষের দেহে ডেঙ্গু ছড়ায় মশার মাধ্যমে। এডিস মশা এই রোগের বাহক। এডিস মশা জন্মায় আবদ্ধ জলধারায়। বাসাবাড়ির টবে, ফ্রিজের পেছনে জমে থাকা পানি, এসির পানি, কমোডে আটকে থাকা পানি ইত্যাদিতে বংশবিস্তার করে। এছাড়া রাস্তার খানাখন্দ, পড়ে থাকা পুরনো টায়ার, যেকোনো রকমের পাত্র, জেরিক্যান, মোটকথা যেখানে পানি কিছুদিন জমে থাকতে পারে, সেখানেই এদের বসবাস ও প্রজনন। এই মশা কামড়ায় সাধারণত দিনের বেলায়। বিশেষ করে শেষ বিকেলে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এডিস মশার আবাস ও প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে পারলেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এজন্য বসতবাড়ির আবদ্ধ জলাধার ধ্বংস করতে হবে। ফ্রিজের বা এসির পানি পরিষ্কার করতে হবে। বাসার বারান্দায়, টেরিসে বা কার্নিশে খোলা টব থাকলে সেটা পরিষ্কার করতে হবে। রাস্তার আশপাশের খানাখন্দ ভরাট করে ফেলতে হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ছাড়াও নাগরিক হিসেবে ডেঙ্গু রোধে দায়িত্ব নিতে হবে।

সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসের শুরু থেকে হঠাৎ ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। এছাড়া ঢাকার বাইরে সকল সিটি করপোরেশনের মেয়রদের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তবে সিটি করপোরেশনের বাইরে ডেঙ্গু বিস্তার রোধে এখনো তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।