• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী

আপন ঘর আগলে রাখছেন তারা

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২১  

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংরী ইউনিয়নের গাভা গ্রামে তৈরি হচ্ছে একসঙ্গে ১০০টি বাড়ি। সেখানে একটি বাড়ি পেয়েছেন আসমা। প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন আসেন সেখানে বাড়িটি দেখভাল করতে। শুধু দেখভাল নয়, বাড়ির সিমেন্ট মজবুত রাখার জন্য প্রতিদিন পানি দেন তিনি।

শুধু আসমাই নন, এই গ্রামে বাড়ি যারাই পেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই নিজের বাড়ি নিজেই দেখভাল করছেন। নিজেরাই ঝাড়ু দিয়ে বাড়ি পরিষ্কারের পাশাপাশি নির্মাণ কাজ তদারকি করেন এবং পানি দেওয়ার প্রয়োজন হলে তাও দিচ্ছেন নিয়মিত।

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি- ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণে ‘বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’। সেই লক্ষ্যে সরকারের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর দিচ্ছে সরকার। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে সবার হাতে ঘর তুলে দেবেন।

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলায় এক হাজার ১৪৮টি বাড়ি নির্মাণ হবে উপহারের আওতায়। শনিবার একসঙ্গে ৬৬ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমির মালিকানা দিয়ে বিনা পয়সায় দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী প্রদান করবেন।

গুচ্ছ পদ্ধতিতে তৈরি গাভা গ্রামের এই বাড়িগুলোর সামনে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেকেই তাদের ঘরের সামনে উপস্থিত আছেন। কেউ বসে কাজ দেখছেন, কেউবা পানি দিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই তারা তদারকি করছেন। এমনকি মেঝে সমান করতে মাটি ভরাটের কাজটিও তারা নিজ উদ্যোগে করেছেন।

আসমা জানান, ঘর পাওয়ার আগে তিনি চরের মতো জায়গায় কুঁড়েঘরে বাস করতেন। সেই জায়গা নতুন ঘর থেকে প্রায় ৩-৪ কিমি দূরে। প্রতিদিন এখানে আসেন ঘর দেখভাল করার জন্য। কাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় তিনি প্রহর গুনছেন। তাছাড়া ঘরের দেয়াল আর মেঝে মজবুত রাখার জন্য পানি দেওয়ার কাজটিও তিনি দিনে দুইবার করেন।

একই গ্রামে ১০-১২ বছর ধরে কাঁচা ঘরে বাস করতেন সন্ন্যাসী। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পাচ্ছেন তিনিও। পরিবারসহ ঘরের কাজের তদারকি করেন তিনি। তাছাড়া সবাই মিলে পানিও দিয়েছেন।

প্রায় ৭০ বছর বয়স্ক রেজাউল ঘর পাওয়ার পর থেকে সারাদিন সেখানেই অতিবাহিত করেন। রেজাউল জানান, তার দুই সন্তানসহ চার সদস্যের পরিবার আছে। বড় ছেলে বিয়ে করে স্ত্রীসহ আলাদা থাকে। আর রেজাউলের সঙ্গে থাকে তার ছোট ছেলে এবং তার স্ত্রী। বয়সের কারণে খুব একটা কাজ তিনি করতে পারেন না। কোনও মতে দিন চলে তার।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ঘরটা দেবে বইলে শুনলাম। এরপর চেয়ারম্যানের কাছে বললাম একটা ঘরের কথা। এক সময় ফেরিওয়ালার কাজ করলেও এখন করতে পারি না। সরকার একটা বাড়ি দিছে, এতেই আমার জীবন কাটি যাবে। এই বাড়িতে আমার আর ১০ টাকার জিনিসও ঢুকাবার ক্ষমতা নেই। যদি ছেলের বেতন বাড়ে, তাতে যদি কিছু হয়। তাছাড়া আমার দিয়ে আর কিছু হবে না। এই ঘরের পেছনে আমি অনেক খাটছি। নষ্ট হয়ে গেলে ঠিক করার আর পয়সা থাকবে না। মিস্ত্রিরা বলছে বেশি করে পানি দিতে, তাতে ভালো থাকবে। এই ঘর হওয়ার পর থেকে এক মাসেও এই জায়গা থেকে সরি নাই।

সারক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলায় সরকারের বরাদ্দ থেকে ঘর তৈরি করা হয়েছে। এখানে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা হয়েছে। সিমেন্ট, কাঠ এবং ঢেউটিনের ক্ষেত্রেও একই মান নিশ্চিত করা হয়েছে। এই জেলার ইট ব্যবসায়ীরা আমাদেরকে সাশ্রয়ী মূল্যে ভালো মানের ইট দিয়েছেন। আমরা যেসব সুবিধাভোগী চিহ্নিত করেছিলাম, এখানে শুরু থেকেই প্রত্যেকে তাদের ঘরের সঙ্গেই ছিলেন। তারা নিজেরাই এই ঘরগুলো পানি দিয়ে কিউরিং করেছেন। প্রত্যেকটি ঘর তারা নিজেরাই দেখভাল করছেন।

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা ছাড়াও ২১টি জেলার ৩৬টি উপজেলায় ৪৪টি প্রকল্প গ্রামে ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে তিন হাজার ৭১৫টি পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে।

আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে পাওয়া তথ্যে আরও জানা গেছে, ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজার ৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০২০ সালের জুনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা করা হয়।