• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি

নতুন অভিযাত্রায় তথ্য মন্ত্রণালয়, নেপথ্যে ড. হাছান মাহমুদ

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০২০  

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো ও দেশের ইতিহাসে চতুর্থবার সরকার গঠন করে। এই সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর গত দেড় বছরে ড. হাছান মাহমুদের পাঁচটি ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ তাকে সাহসী হিসেবে আলোচনায় এনেছে।

ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি মাঠ দাপিয়ে ছাত্রলীগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী হাছান আওয়ামী লীগে প্রচার সম্পাদক থেকে পান তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। রাজনৈতিকভাবে তার এগিয়ে চলায় সাফল্যের পালকে যোগ হয় আরেকিট পদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। এখন রাজনীতি এবং সরকারের দায়িত্ব, দুইই সামলাচ্ছেন ড. হাছান মাহমুদ।

নিজ দপ্তরের কাজ সামলানোর পাশাপাশি করোনাকালে ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য ছুটে গেছেন চট্টগ্রামে নিজের নির্বাচনী এলাকায়। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সরকারের হয়ে। বলাবাহুল্য, তিনিই একমাত্র মন্ত্রী যিনি করোনাকালে প্রতিদিন অফিস করছেন আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চট্টগ্রামে নিজ নির্বাচনী এলাকায় ছুটে গিয়ে হাজার হাজার মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কাজ পরিচালনা করেছেন। পাশাপাশি পালন করে চলছেন করোনা পরিস্থিতির বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগ সমন্বয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব। অফিস শেষে এবং সপ্তাহ শেষে ঢাকায় থাকলে নিয়মিত আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে যাওয়া তার রুটিন কাজ।
অবাধ তথ্য প্রবাহের এ যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, গণমাধ্যমকে স্বাধীন পথে চলার দ্বার অবারিত করেছেন হাছান মাহমুদ। তার সময়ে তথ্য মন্ত্রণালয় নতুন অভিযাত্রার পথে এসেছে। গণমাধ্যমের স্বার্থে নিয়েছেন কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
 
এক.
দেশের আইন অনুযায়ী সম্প্রচারিত কোনো বিদেশি টিভি চ্যানেলে অনুমতি ছাড়া বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ থাকলেও এ বিষয়টি পূর্বে আমলে নেয়া হয়নি, যদিও দেশীয় পণ্য ও তার বাজারের ওপর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই হাছান মাহমুদ দেশের স্বার্থে এ সংক্রান্ত আইন প্রয়োগে দৃঢ়তার নীতি গ্রহণ করেন। এতোদিন ধরে যে কাজ প্রায় অসম্ভব মনে হয়েছিল, তা বাস্তবায়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু হয়, ক্যাবল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কিন্তু বলা যায়, মন্ত্রীর একক দৃঢ়তার কারণেই আইনের পথে হাঁটতে শুরু করে সবাই। যদিও বিষয়টি সহজ নয়, প্রয়োজন ক্যাবল নেটওয়ার্কের পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপায়ন। সেজন্যও বাস্তব সময়সীমা বাঁধতে চান তথ্যমন্ত্রী।
 
দুই.
পূর্বে ক্যাবল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের বারবার বলা হলেও টিভি চ্যানেলগুলোর ক্রম সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সাজানো থাকতো না। নেটওয়ার্ক অপারেটররা তাদের মর্জি মাফিক চ্যানেলগুলোর ক্রম ঠিক করতো এবং সামনের দিকে স্থান পাওয়ার জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতার নানা অভিযোগ ছিল। নতুন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান প্রত্যেক জেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করিয়ে এটিকে নিয়মের মধ্যে এনেছেন। এখন ক্যাবল নেটওয়ার্কে দেশের টিভি চ্যানেল সবার আগে এবং সেগুলো তাদের সম্প্রচারের তারিখ অনুযায়ী পরপর সাজানোর ব্যবস্থা হয়েছে।
 
তিন.
অবৈধ ডিশ টিভির দৌরাত্মে বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে নানা উপায়ে চলে যেতো। বিদেশি কিছু কোম্পানি আইন প্রয়োগের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। তথ্যমন্ত্রী একটি আগাম নোটিশ দিলেন এবং ২০২০ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে এ অব্যবস্থাপনার অবসান ঘটালেন। দেশ প্রতিবছর অন্তত হাজার কোটি টাকা লোকসান থেকে বাঁচলো।

চার.
তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের সাথে যেসকল অনাকাঙ্খিত চ্যালেঞ্জ সমাজে উদয় হয় তাদের মধ্যে সাম্প্রতিকতম চ্যালেঞ্জটি ছিল ইন্টারনেটে ওয়েবসিরিজের নামে সেন্সরবিহীন অশালীন দৃশ্য ও কাহিনীর সম্প্রচার। ইন্টারনেটে সেই প্লাটফরমগুলো আবার দেশের বড় বড় মোবাইল ফোন কোম্পানির। যথারীতি কুরুচিপূর্ণ এসকল সম্প্রচারের প্লাটফরম যারা দিয়েছে, তাদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।
 
এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য স্পষ্ট, ‘বিদেশিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার দোহাই দিয়ে দেশের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থী কোনো সম্প্রচার শুধু আইনের চোখেই অপরাধ নয়, দেশ ও জাতির প্রতিও অবজ্ঞা প্রদর্শন।’
 
পাঁচ.
ক্যাবল নেটওয়ার্কে একসময় চ্যানেল সামনের দিকে রাখার জন্য যে অসুস্থ ও ক্ষতিকর প্রতিযোগিতা ছিল, কোন টেলিভিশন বেশি মানুষ দেখে সেটা নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে একই ধরনের অসুস্থতা চলে এলেও বিষয়টিতে নজরদারির অভাব ছিল সুস্পষ্ট। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান এ বিষয়েও দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছেন।
 
করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত বৈঠকও করছেন তিনিতার ভাষায় তার লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের টিভি চ্যানেলগুলোকে এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে মুক্ত করা এবং নিয়মতান্ত্রিক গবেষণার মাধ্যমে যাতে সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রতিফলিত হয়, সেজন্য রাষ্ট্র অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ জরিপ পরিচালনা।
 
এ বিশেষ পাঁচ পদক্ষেপ ছাড়াও দেশের সকল ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া দেখভাল করার জন্য স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সম্প্রচার আইন প্রণয়নের কাজ চলছে, চলছে গণমাধ্যমকর্মী (চাকরি শর্তাবলী) আইন প্রণয়নের কাজও। তথ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে তাগাদাও দিয়েছেন।
 
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে পূর্বের চেয়ে বেশি সংখ্যক চলচ্চিত্রে অনুদান দেওয়া হয়েছে। চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট গবেষকরা এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। এছাড়া করোনা মহামারির কারণে অসুবিধায় পড়া সাংবাদিক, চলচ্চিত্র, শিল্পী, নির্মাতা ও কুশলীদের জন্য আর্থিক ও নানাবিধ সহায়তা দিতে কাজ করে চলেছেন তথ্যমন্ত্রী।
 
ড. হাছান মাহমুদ দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ টেলিভিশন গত ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে দুরদর্শন ফ্রি ডিশের মাধ্যমে সমগ্র ভারতে সম্প্রচার চালু হয়েছে। পারস্পরিক এ সহযোগিতা বিস্তৃত হয়েছে বেতারের ক্ষেত্রেও। এ বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে প্রথমবারের মতো সমগ্র ভারতে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান দৈনিক ৪ ঘণ্টা সম্প্রচার ও বাংলাদেশ বেতারে আকাশবাণীর অনুষ্ঠানের অনুরূপ সম্প্রচার চালু হয়েছে।
 
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবিলার জন্য পৃথিবীর কোনো দেশই প্রস্তুত ছিল না। বাংলাদেশ একটি খেটে খাওয়া মানুষের দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় একদিকে দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা করছেন। অপরদিকে স্বাস্থ্যসহ সকল খাতে সীমিত সম্পদ ও অবকাঠামোর সর্বোচ্চ উপযোগী ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। এর ফলেই এখনো বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার বিশ্বে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।
 
‘জীবন ও জীবিকা রক্ষার এই অনন্য প্রয়াসের পথ ধরে মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমরা নিশ্চয়ই পৌঁছে যাবো নতুন সূর্যের দিনে’, বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।