• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

সুন্দরী নারীর ফাঁদে ফেলে যুবককে অপহরণ, নারীসহ আটক ৪

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

নরসিংদীতে যুবক রাসেল হাসানকে অপহরণের পর দশ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত এক নারীসহ অপহরণকারী চক্রের চারজনকে আটক করেছে র‌্যাব। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নরসিংদী জেলা সদর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হচ্ছে- রাসেল হাসানের স্ত্রী মারিয়া আক্তার মন্টি, মন্টির সাবেক স্বামী অভিত মিয়া, মন্টির বাবা বাদল মিয়া ও বড় ভাই পাপ্পু মিয়া। এরা প্রত্যেকেই নরসিংদী সদর এলাকার বাসিন্দা। শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র‌্যাব-১১ সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ সিনিয়র সহকারী পরিচালক আলেপ উদ্দিন জানান,  আটককৃতরা সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন এলাকার বিত্তবান ব্যক্তিদের কৌশলে অপহরণের পর শারীরিক নির্যাতন করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকে।

রাসেলের স্ত্রী সুন্দরী নারী মন্টি ইতিপূর্বে আরো চার পাঁচটি বিয়ে করে ওই স্বামীদেরও একইভাবে নির্যাতন ও জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে র‌্যাবের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। রাসেলের সাথে পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই স্ত্রী মন্টি, শ্বশুর ও স্ত্রীর বড় ভাইয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ আদায় করতে রাসেলকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে আটককৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। মূলত সৌদি প্রবাসী রাসেলের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যেই মন্টি তাকে বিয়ে করে।

সংবাদ সম্মেলনে আলেপ উদ্দিন আরো জানান, একই উদ্দেশে গত ২৮ ডিসেম্বর ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণকারী চক্রের সাত আটজন ব্যক্তি রাসেলকে নরসিংদী আদালতের সামনে থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে রাসেলকে তারা অচেতন করে একটি ফ্ল্যাট বাসায় নিয়ে আটককৃতরাসহ অপহরণকারী সদস্যরা দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে শারীরিক নির্যাতন করে।

এক পর্যায়ে রাসেলের পরিবারের সাথে দুই লাখ টাকা দফারফা হলে বিকাশের মাধ্যমে ষাট হাজার টাকা আদায় করে অপহরণকারীরা। অবশিষ্ট টাকা আদায় করতে পরদিন ২৯ ডিসেম্বর তারা রাসেলকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে বের হয়। মাঝপথে রাসেল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বললে তাকে গাড়ি থেকে নামানো হয়। এসময় রাসেল ডাকাত বলে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে অপহরণকারীরা তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে অপহরণকারীরা রাসেলকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ভাইরাল করে এবং মামলা না করতে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে। কিছুদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে রাসেল নারায়ণগঞ্জে র‌্যাব-১১ কার্যালয়ে গিয়ে অপহরণের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব চারজনকে আটক করে।

নির্যাতিত রাসেল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, তাকে নির্যাতনের লোমহর্ষক ভিডিও ধারণ করে তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে টাকা আদায় করে নেয় অপহরণকারী চক্র। এই ভিডিওচিত্র দেখে তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। রাসেল গণমাধ্যমের কাছে তাকে নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন সরকারের কাছে।

রাসেল আরো জানান, ২০১৮ সালে নরসিংদী জেলা সদরের সাটিরপাড়া এলাকায় চাচাতো ভাইয়ের টেইলারের দোকান থেকে সুন্দরী তরুণী মারিয়া আক্তার মন্টির সাথে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ছয় মাস পর সৌদি আরবের ভিসা পেয়ে সেখানে যাবার আঠারো দিন আগে আদালতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। পরে রাসেল সৌদি আরবে চলে গেলে মন্টির ভাইকে বিদেশে পাঠানো বাবদ তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় মন্টির পরিবার।

দুই বছর পর দেশে ফিরে এলে পুনরায় টাকা দাবি করে নানাভাবে মানসিক চাপসহ মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়েও তাকে হয়রানি করে মন্টি ও তার পরিবার। স্ত্রী মন্টির দায়ের করা ধর্ষণের মামরায় তেরোদিন কারাবাস যাপন করে জামিনে বের হয়ে এলে মামলা মীমাংসার কথা বলে মন্টির বড় ভাই পাপ্পু মিয়া গত ২৮ ডিসেম্বর তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে শারীরিক নির্যাতন চালায়।

এদিকে আটককৃতদের বিরুদ্ধে নরসিংদী থানায় মামলার প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে র‌্যাবের কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন জানান,  এই অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত অন্য সদস্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পলাতক অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে। শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।