• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বানারীপাড়ায় একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু: তদন্তে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০১৯  

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুরের একটি বাড়ি থেকে শাশুড়ি, মেয়ে জামাইসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।


ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন র‌্যাব, পুলিশ, সিআইডি (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনসহ (পিবিআই) আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এর মধ্যে রয়েছে- বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এহসানউল্ল্যাহ, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রকিবের মতো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।

পরিদর্শনকালে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পুরো ঘটনা হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। 

তবে মৃত্যুর মূল রহস্য উদঘাটনে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়ে এসপি সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আমরা সম্ভাব্য সব আলামত সংগ্রহ করেছি। নিহত তিনজনের শরীরের কোথাও তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও সবারই নাকের কাছে রক্ত দেখা গেছে। 

খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে সেটি খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে এরকম কিছুও হতে পারে। আবার পূর্ব শত্রুতার বিষয়টিও থাকতে পারে। ঘটনা যাই হোক, শিগগিরই রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী।

এদিকে পারিবারিক ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র বলছে, জমিজমা নিয়ে তেমন কারো সঙ্গে বিরোধ না থাকলেও একটি মোবাইল ফোন হারানোকে কেন্দ্র করে ঝাড়ফুঁকের একটি বিষয় সম্প্রতি আলোচনার সৃষ্টি করে এই পরিবারের সদস্যদের মাঝে। এ বিষয়ে বহিরাগত এক ব্যক্তির নাম ইতোমধ্যে পুলিশের হাতে পৌঁছেছে। 

অন্য আরেকটি সূত্র বলছে, এক রাজমিস্ত্রির সঙ্গে এ পরিবারের বর্তমান সদস্যদের সক্ষতা নিয়ে নানান প্রশ্ন রয়েছে। 

তবে এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানায়নি পুলিশ।

এদিকে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই বাড়িটিকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি উৎসুক জনতা ও গ্রামবাসী অবস্থান করছে। একসঙ্গে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় শোকাহত ও হতবাক তাদের স্বজনসহ গ্রামবাসীরাও।

এর আগে শনিবার সকালে সলিয়াবাকপুরের হাওলাদার বাড়ি এলাকার প্রবাসী আব্দুর রবের বাড়ি থেকে তার মা মরিয়ম বেগম (৭০), মেজ বোন মমতাজ বেগমের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শফিকুল আলম (৬০) ও খালাতো ভাই মো. ইউসুফের (২২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

বাড়ির মালিক কুয়েত প্রবাসী রবের স্ত্রী মিশরাত  জানান, শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে খাবার খেয়ে যে যার মতো ঘুমাতে যান। ওইসময় ঘরে তিনিসহ তার দুই শিশু সন্তান নুরজাহান (৪), ইশফাত (৯), দেবর হারুন অর রশিদের মেয়ে আছিয়া ওরফে আফিয়া, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম, ননদ মমতাজের স্বামী শফিকুল আলম ও শাশুড়ির বোনের ছেলে (দেবর) ইউসুফ ছিলেন। এরপর ভোরে ফজরের আযানের পর আফিয়ার চিৎকারের শব্দে সবাই ঘুম থেকে ওঠেন।

নিহত মরিয়ম বেগমের নাতনি আছিয়া ওরফে আফিয়া  বলেন, ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে দাদিকে ডাকতে যাই। তখন দেখি দাদির রুমের বারান্দার দরজা খোলা এবং সেখানে তার নিথর দেহ পড়ে আছে। এরপর চিৎকার দিলে বাড়ির সবাই আসেন। কিন্তু ফুপা শফিকুল আলম ও চাচা ইউসুফকে দেখতে না পেয়ে তাদের খুঁজতে থাকি।  

‘তখন ঘরের অন্য একটি কক্ষে যেখানে ফুপা (শফিকুল) ঘুমাচ্ছিলেন, সেখানে গিয়ে তার মাথার অংশ খাটের বাইরে দেখে সন্দেহ হয়। ডাকাডাকি করলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে চাচাকে (ইউসুফ) খুঁজতে ছাদের দিকে গেলে সেখানে দরজা খোলা পাই, তবে কারো দেখা মেলেনি। এরপর বাড়ির বাইরে খুঁজতে শুরু করলে চাচাকে পুকুরের ঘাটলায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখি।’

পরিবারের এই দুই নারী সদস্যদের (মিশরাত, আছিয়া) দাবি, কীভাবে এবং কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কিছুই জানেন না। এমনকি রাতে ঘুমানোর পর কোনো সাড়াশব্দও পাননি। 

তবে ঘরের ভেতরের একটি আলমারি থেকে কিছু অলংকার খোয়া গেছে বলে জানান মিশরাত। এর বাইরে আর কিছু খোয়া গেছেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নন তিনি।

এদিকে কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের ছোটভাই হারুন অর রশিদ বলেন, আমার মেজ বোনের জামাই শ‌ফিকুল ইসলাম দুই দিন আ‌গে নিজ বা‌ড়ি স্বরূপকা‌ঠি থে‌কে এ বা‌ড়ি‌তে বেড়া‌তে আ‌সেন। দুইদিন প‌রে তার ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল।

‘অপরদিকে পার্শ্ববর্তী দাড়ালিয়া এলাকা থেকে আসা খালাতো ভাই ইউসুফ পেশায় ভ্যানাচলক। এ বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ না থাকায় প্রায় রাতেই তিনি এসে থাকতেন।’