• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

`ফোবিয়া` বা ভীতি হতে পারে স্বাভাবিক জীবনের পথে বাধা!

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৫ জানুয়ারি ২০১৯  

 

ভয়ে যেন শরীর ঠান্ডা হয়ে এল, গায়ের সব লোম দাঁড়িয়ে গেল তাঁর, থরথর করে কাঁপতে শুরু করল লোকটাই। কিংবা ঘরে ঢুকেই চিৎকার দিয়ে মূর্ছা গেলেন এক গৃহিণী। এমন ঘটনার মুখোমুখি আমরা কখনো কখনো হই বৈকি। আমাদের মনে নানা ধরনের ‘ফোবিয়া’ বা ভীতি থেকেই এমনটা হয়ে থাকে। নানা বয়সের বিপুলসংখ্যক মানুষ এমন নানা রকম ভীতিতে আক্রান্ত। সবচেয়ে সাধারণ আট ভীতির কথা এখানে তুলে ধরা হলো।

*মাকড়সা ভীতি: অনেক মানুষেরই মাকড়সা ভীতি ( arachnophobia) আছে। আশপাশে কোথাও মাকড়সা আছে বা থাকতে পারে এমন মনে হলেই যেকোনো স্থানে যেকোনো সময়ে তারা ভয় পান। এমনকি শুধু মাকড়সার জাল বা মাকড়সার ছবি দেখেও তারা ভীত হয়ে উঠতে পারেন। মাকড়সা ভীতি থেকে বয়স ভেদে কেউ কেউ কেঁদে ফেলতে বা চিৎকার করে উঠতে পারেন। শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়তে বা অতিরিক্ত ঘামতে থাকতে পারেন। সাধারণত ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের মধ্যে মাকড়সা ভীতি বেশি দেখা যায়।

*সাপ ভীতি: সাপের ভীতি ( Ophidiophobia ) থেকে সাধারণত একেক জন একেক রকম আচরণ করেন। কারণ একেক জনের ক্ষেত্রে সাপের ভয়ের চিন্তা, সাপের চিত্রকল্প, সাপের চলাফেরা বা নড়াচড়ার শব্দ আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা স্মৃতি থেকে এমনটা হতে পারে। সাপের ভীতি থেকে মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা হতে পারে। সাপের ভয় মনের মধ্যে বাসা বেঁধে থাকলে প্রায় অসম্ভব সব জায়গাতেও কেউ কেউ সাপের উপস্থিতি কল্পনা করে ভয় পেতে পারেন। সাপের ভয় থেকে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, অতিরিক্ত উদ্বেগে আক্রান্ত হওয়া এমনকি দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

*উচ্চতা ভীতি: অনেক বেশি উঁচু জায়গায় উঠে গেলে আমরা অনেকেই ভয় পাই। বিশেষত সেখান থেকে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে বা সেখানে নিরাপত্তা কম থাকলে এটা প্রায় সবারই হয়। তবে, কারও কারও ক্ষেত্রে এটা প্রবল। একে উচ্চতা ভীতি (Acrophobia) বলে। প্রবল উচ্চতা ভীতি আছে এমন কেউ কোনো কারণে অতিরিক্ত উচ্চতায় উঠে গেলে তাদের প্যানিক অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দ্রুত সেখান থেকে সরিয়ে নিতে না পারলে অতিরিক্ত অস্থিরতায় তারা অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। উচ্চতা ভীতিও সাধারণত ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

*কুকুর ভীতি: কুকুর ভয় পান এমন কেউ প্রয়োজনে ঘরে বাসে থাকবেন কিন্তু কুকুরের সামনে পড়তে চাইবেন না। বিশেষত সঙ্গে কেউ না থাকলে এই ভয় তাদের মধ্যে বেশি মাত্রায় কাজ করে। কুকুর ভীতি (Cynophobia) অবশ্য একেক জনের একেক রকম হতে পারে। কেউ কেউ কুকুরের ডাক শুনেই ভয়ে কেঁপে উঠতে পারেন। কেউ কেউ কুকুর দেখলে অনিরাপদ বোধ করেন এবং সঙ্গে কেউ থাকলে তার সাহায্য চান। আবার কেউ কেউ বিশেষ জাতের কুকুর দেখে ভয় পেলেও রাস্তাঘাটের সব কুকুরকে ভয় পান না। কুকুর ভীতি থেকে ভয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, লুকানোর চেষ্টা করা, কেঁদে ফেলা কিংবা দৌড়ে পালানোর মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

*বিদ্যুৎ চমক ও বজ্রপাতের ভীতি: ঝড়-বাদলের সময় বিদ্যুতের চমকে ভয়ে কেঁপে ওঠেন অনেকেই। কেউ কেউ বজ্রপাতের আশঙ্কায় শঙ্কিত থাকেন। বিদ্যুৎ চমক ও বজ্রপাতের ভীতি (Astraphobia) থেকে ভয়ে কেঁদে ওঠা, অতিরিক্ত ঘামতে শুরু করা, বমি বমি ভাব হওয়া এবং প্রস্রাব পেতে পারে। বিশেষত একা থাকলে এমন ভীতি বেশি পেয়ে বসতে পারে। এ সময় তারা নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও অতিরিক্ত নিরাপত্তার খোঁজ করেন। কেউ কেউ ঘরের ভেতরে থাকলেও বিছানা বা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিতে পারেন, নিজেকে আশ্বস্ত করতে তারা কানে তুলা গুজতে পারেন।

*ইনজেকশন ভীতি: ইনজেকশন নেওয়ার সময় একটু ব্যথা তো সবারই লাগে। কিন্তু যাদের ইনজেকশন ভীতি (Trypanophobia) আছে তারা এমনকি এই ভয়ে চিকিৎসা করানো থেকেও বিরত থাকার চেষ্টা করেন। শরীরে এমন সুচ ফোটার ভীতি থেকে হঠাৎ করে রক্তচাপ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া, ভয়ে শরীরে কাঁপুনি শুরু হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অনেকে কোনোভাবেই যাতে ইনজেকশন না নিতে হয় এর জন্য প্রবল চেষ্টা করতে পারেন।

*উড়াল ভীতি: উড়তে ভয় পান অনেকেই। একে উড়াল ভীতি (Pteromerhanophobia) বলা হয়। বিমান, বেলুন বা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই এই উড়াল ভীতি তৈরি হয়। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া কিংবা সহায়সম্বলহীন হয়ে দুর্গম কোনো স্থানে আটকে পড়ার ভীতি থেকে তারা বিমানে ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে চান। উড়াল ভীতি থেকে ঠান্ডা ঘাম হতে পারে, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

*ধুলোময়লা ও জীবাণু ভীতি: ধুলোময়লা থেকে শরীরে রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকেন কেউ কেউ। এই ধুলোময়লা ও জীবাণু ভীতি (Mysophobia) থেকে সারাক্ষণই স্বাস্থ্যনাশের আশঙ্কায় ভুগতে পারেন অনেকে। এ থেকে অনেকের রীতিমতো শারীরিক অস্বস্তির মধ্যে পড়ে যান। কোনো জায়গায় গিয়ে এই ভীতি জেগে উঠলে প্যানিক অ্যাটাক, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঝিমঝিম করা, ঘাম হওয়া কিংবা রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যায়ও পড়তে পারেন কেউ কেউ।

√অমূলক ভয় ‘ফোবিয়া’: জেনে নিন কারণ ও লক্ষণ

সাধারণত ফোবিয়া বলতে আমরা ভয়টাকেই বুঝে থাকি। তবে ফোবিয়া মানে শুধু ভয় নয়। ভয়ের সাথে জড়িয়ে থাকে অকারণ দুশ্চিন্তা, আতকিংত ভাব আর প্রচণ্ড রকমের একটা বিরক্তি। আর সেই সঙ্গে থাকে ভয়ের পরিস্থিতিকে এড়িয়ে চলার প্রবণতা। অপছন্দের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারার অক্ষমতা থেকেই জন্ম নেয় ফোবিয়া। উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তার যথার্থ, যুক্তিসম্মত কারণ থাকলে সেটা ভয়। কিন্তু ভিত্তিহীন কারণে দুশ্চিন্তার নামই ফোবিয়া। সেই ফোবিয়া থেকে কেউ যখন এমন কাজ করতে শুরু করে যেটা নিজের এবং অন্যের অসুবিধা, ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন সেটা রোগ। চিকিত্‍সাশাস্ত্র অনুযায়ী ফোবিয়া এক ধরনের অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার।

*ফোবিয়ার রকমফের: সোশ্যাল ফোবিয়া নিজেকে সমাজে মেলামেশার অনুপযুক্ত মনে হওয়া। সব সময় মনে হয়, পাছে লোকে কিছু ভাবে! কেবলই মনে হয় সবাই তার আচার-আচরণ খুঁটিয়ে লক্ষ্য করছে বা তার সম্পর্কে খারাপ কিছু ভাবছে। ফলে কথা বলার সময় বেশি সচেতন হয়ে পড়ে, অস্বস্তিতে নার্ভাস বোধ করা, লজ্জা পাওয়া। এ সবই মনে আতংকের সৃষ্টি করে। স্পেশাল ফোবিয়া বিশেষ কোনো পরিস্থিতি বা নির্দিষ্ট কোনো জিনিসে অকারণে অতিরিক্ত ভয় পাওয়া। সাধারণত পাঁচ রকমের স্পেশাল ফোবিয়া হয়। জীবজন্তু: যেমন সাপ, কুকুর, মাকড়সায় ভয়। স্থান: যেমন উঁচু জায়গা, পানি, অন্ধকার। বদ্ধাবস্থা: যেমন লিফট, টানেল ইত্যাদি। রক্ত, আঘাত, অন্যান্য চিকিত্‍সা পদ্ধতিতে ভয় পাওয়া। এছাড়াও নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া বা মৃত্যুভয়। এগারোফোবিয়া খোলামেলা জায়গায় যেতে ভয় পাওয়া। রোগীরা ঘরের মধ্যে নিরাপদ জায়গায় বন্দি অবস্থায় থাকতে পছন্দ করে। সাধারণত শপিং মল, সিনেমা মল, সাবওয়ের মতো ভিড়ের জায়গা এরা এড়িয়ে চলে।

ফোবিয়া হওয়ার কারণ

১. মানুষের আচরণ মস্তিষ্কের নিউরোকেমিক্যাল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। নিউরোকেমিক্যালের সঞ্চলনে তারতম্য ঘটলে আচরণে পার্থক্য দেখা যায়।

২. অনেক ক্ষেত্রে ফোবিয়া বংশগত। তবে মা-বাবার যে ধরনের ফোবিয়া সন্তানেরও একই ফোবিয়া হবে এমন কোনো কারণ নেই। অনেক সময় মা-বাবা নিজেরা অ্যাংজাইটির শিকার হলে বাচ্চাদের মধ্যেও সেই ডিজঅর্ডার থাকলে তা বুঝতে পারে না কারণ তারা ওই রকম ব্যবহারে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখতে পান না।


৩. বয়স বা অন্য কোনো শারীরিক অসুবিধা মানুষকে মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। সেই কারণে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ক্ষমতা হারায়। পরিস্থিত মোকাবিলা করার মেকানিজমে এই দুর্বলতা মানুষের আচরণে একটা পরিবর্তন আনে। সেই পরিবর্তনটাই ফোবিয়ার আকার ধারণ করে। এছাড়া সাইকোসোমেটিক ডিজঅর্ডার যেমন ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা, ডায়াবেটিস এগুলো থেকেও কখনো কখনো সাময়িক বা দীর্ঘস্থায়ী ফোবিয়ার জন্ম হতে পারে।

৪. অনেক সময় আচমকাই লিফটে উঠতে গিয়ে বা বারান্দা থেকে নিচে তাকাতে গিয়ে ভয় করে। এই অ্যাটাক সাময়িক। ক্ষেত্রবিশেষে চিকিত্‍সার প্রয়োজন হতে পারে। ৫. জীবনের শুরুতে কোনো খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলে অনেক সময় পরবর্তীকালে সোশ্যাল ফোবিয়া দেখা যায়।

*ফোবিয়ার শারীরিক লক্ষণ: ১. হার্টরেট বেড়ে যাওয়া। ২. গলা, মুখ শুকিয়ে যাওয়া। ৩. প্রচণ্ড ঘাম। ৪. বুকে ব্যথা। ৫. পেশিতে টান, কাঁপুনি। ৬. বমিবমি ভাব। ৭. নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা। ৮. পেটে অসুবিধা, ডায়রিয়া। ৯. মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

*ফোবিয়ার মানসিক লক্ষণ: ১. অমূলক ভয়ের পরিস্থিতি, বাইরের লোকজন এড়িয়ে চলা। ২. আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া। ৩. হতাশ লাগা।

**চিকিত্‍সা: বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট এই পদ্ধতিতে ডাক্তার সাধারণত অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট, সেডেটিভস দেন রোগীকে। নন-বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্রথমে ডাক্তার কিছু রিল্যাক্সেশন টেকনিক দেখিয়ে দেন রোগীকে। এতে পেশীগুলোর সঞ্চালন সহজ হয়। এর পরের ধাপ হলো সিস্টেমেটিক ডিসেন্সেটাইজেশন। এতে যে পরিস্থিতিকে রোগী ভয় পায়, নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রিতভাবে রোগীকে ধাপে ধাপে সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি আনা হয়। ধীরে ধীরে রোগী তখন ভয়টা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। এ সব রকমের পদ্ধতিতে পরিবারের সবার সাহায্য খুব দরকার। অনেক সময় বাড়ির লোক, আত্মীয়স্বজন কো-থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করে।

ভয় বা আতঙ্ক দূর করবেন কীভাবে?

ভয় পাওয়ার বিষয়টি মনোচিকিৎসকরা ব্যাখ্যা করেন মানসিক বিষয় হিসেবে। অনেকে আছেন, যাঁরা একা ঘরে ঘুমাতে ভয় পান, ভূতের সিনেমা দেখে ভয় পান কিংবা রাতে ওয়াশরুমে যেতে ভয় পান। এই আতঙ্কের প্রধান কারণ হলো, আপনি মনের মধ্যে ভয়কে পুষে রেখেছেন, যা আপনিই দূর করতে পারেন। আর হ্যাঁ, এর জন্য মানসিক ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।মনের ছোট ছোট ভয় বা আতঙ্ক দূর করতে ওয়েক আপ ক্লাউড ওয়েবসাইটে দেওয়া পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন।

১. প্রথমে ভালো করে লক্ষ করুন, কোন বিষয়গুলোতে আপনি ভয় পাচ্ছেন। সেখানে ভয় পাওয়ার মতো কোনো বিষয়ের অস্তিত্ব আছে কি না। যে ভূতের সিনেমা দেখে আপনি ভয় পাচ্ছেন, সেটার শেষ পর্যন্ত কী ঘটে। আবার ভাবুন, আপনি সিনেমা দেখেই ভয় পাচ্ছেন আর যে নায়ক বা নায়িকা ভূতের চরিত্রে অভিনয় করল, তাদের তো ভয়ে মরেই যাওয়া উচিত, তাই না? যখনই কোনো ভূতের সিনেমা দেখবেন, তখন সেই নায়ক বা নায়িকার কোনো রোমান্টিক সিনেমার গানের কথা ভাবতে থাকুন। দেখবেন, ভয় দূর হয়ে আপনি মনে মনে হাসতে শুরু করবেন।

২. অনেক সময় কৌতূহলের কারণেও মনের ভয় দূর হয়। আপনি যদি মনের মধ্যে ভয় পুষে রাখেন, তাহলে তা কোনো দিনই দূর হবে না। যে বিষয়টাতে আপনি ভয় পাচ্ছেন, সেই বিষয়ে কৌতূহলী হয়ে উঠুন। দেখবেন, যখন পুরোটা জেনে যাবেন, তখন আর ভয় কাজ করবে না।

৩. ভয় পেলে সঙ্গে সঙ্গে কোনো না কোনো কাজ করতে থাকুন। কোনোভাবেই চুপচাপ বসে থাকবেন না। কাজের মধ্যে থাকলে ভয়ের কথা আপনি একসময় ভুলে যাবেন।

৪. প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলুন। এটা আপনার ভয় কাটাতে সাহায্য করবে। ইতিবাচক কথাগুলো আপনার মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা ভয়কে দূর করবে।

৫. বই পড়ুন। প্রিয় লেখকের বই আপনার সব ধরনের বিষণ্ণতা, ভয়, আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে থ্রিলার বা গোয়েন্দা টাইপের বই পড়ুন, যা আপনার মস্তিষ্ককে অন্যদিকে ধাবিত করবে।

৬. বেশি করে খান। চট করে পছন্দের খাবারটি তৈরি করে ফেলুন। দেখবেন, এক নিমেষেই আপনার মন ভালো হয়ে যাবে। আর ভয়, সেটা তো রান্না করতে করতেই ভুলে যাবেন।

৭. সাধারণ ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন। দেখবেন, আপনার ক্লান্তি দূর হবে। মস্তিষ্ক সতেজ মনে হবে। দেখবেন, ভয়ের কারণে আপনার শরীরে যে ভার অনুভব করছেন, তখন সেটা অনেক হালকা মনে হবে।


৮. প্রার্থনা করুন। প্রার্থনা ধ্যান করার মতো। দেখবেন, মনের ভয় বা আতঙ্ক সহজেই দূর হয়ে যাবে।




মোঃশাকিল আহমেদ 
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ
বরিশাল