• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ইফতার-সাহরিতে নাকারা বাজানো হতো জমিদার বাড়ি জামে মসজিদে

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০১৯  

 বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া গ্রামে রয়েছে প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী একটি জমিদার বাড়ি। যেটি বর্তমানে সবার কাছে উলানিয়া জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। জমিদার বাড়ির প্রবেশ পথে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ‘উলানিয়া জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ’।

বাংলা ১২৬৮ সালের হিসেবে খ্রিস্টাব্দ ১৮৬১ সনে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। সে হিসেবে দেড়’শ বছরের অধিককাল ধরে এ মসজিদে মুসল্লিদের আনাগোনা। 

মসজিদটিতে বর্তমানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। আর রমজান মাসে মসজিদটিতে তারাবির নামাজ আদায়সহ নানান ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তবে সংস্কারের পরও মসজিদটি ঐতিহ্য ধরে রাখায় এটি দেখা জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা উলানিয়ায় আসেন।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন  জানান, এই মসজিদের যতো বিশেষত্ব রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হয়েছে এখানে একটি বড় নাকারা (ঢোল সাদৃশ বস্তু) রয়েছে। যেটি সাহরি ও ইফতারের সময়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাজানো হতো। যারমধ্য দিয়ে গ্রামবাসীকে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে (বার্তা) জানানো হতো বলেই পূর্ব-পুরষদের কাছ থেকে জেনে এসেছি।

লেখক আতিকুর রহমান হিমু জানান, মূলত প্রাচীন আমলে ঢোল পিটিয়ে নানান বিষয়ে জানান দেয়া হতো। বিশেষ করে জমিদাররা তাদের প্রজাদের মাঝে বন্যাসহ নানান বিষয়ে বিশেষ বার্তা প্রেরণের মাধ্যম হিসেবে এটি ব্যবহার করা করতেন। আর যেহেতু এই নাকারাটা মসজিদেই পাওয়া গেছে, তাই ধারণা করা হচ্ছে। এটি বাজিয়ে সাহরি ও ইফতারের সময়ের জানান দেয়া হতো স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে। হয়তো নামাজর সময়ও জানান দেয়ার কাজ করা হতো।

এদিকে নির্মাণের আলাদা বৈশিষ্টের কারণে মসজিটি সবার দৃষ্টি কেড়েছে। সর্বশেষ ২০১১ সালের মে মাসে মসজিদটি সংস্কার করা হয়। সংস্কার শেষে মসজিদটি পর্যটকসহ সবার প্রশংসা লাভ করেছে। যদিও ১৮৬১ সালে প্রতিষ্ঠার পর মসজিদটি কয়েকবার সংস্কার করা হলেও মূল অবয়ব এখনও অক্ষুণ্ন রয়েছে। ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি অনেকটা তাজমহল আকৃতির। মসজিদের সামনে শান বাঁধানো পুকুর আছে।  মূল গৃহের আগে লোহার ৬ খামের ওপর প্রতিষ্ঠিত জাফরির কাজ রয়েছে।
মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে একসঙ্গে শতাধিক মানুষ নামাজ পড়তে পারে। মসজিদের ভেতরে পশ্চিম দিকে একটি মিহরাব রয়েছে। বাহিরের দেয়ালে চীনা মাটির টুকরা দিয়ে গড়া শিলালিপি রয়েছে। মসজিদটি মূলত মোগলরীতিতে তৈরি। ভেতর ও বাহিরের গায়ে জ্যামিতিক লতাপাতা ও ফলের নকশা রয়েছে।
বিমের ছাদ বিশিষ্ট মসজিদের তিনটি দরজা রয়েছে। মসজিদের তিনটি দরজার মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড় এবং এটির দুই পাশের দুই দেয়ালের নকশার নিচে উৎকীর্ণ শিলালিপি ছিল। ডান দিকের দেয়ালে উৎকীর্ণ কুরআন শরীফের আয়াত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেশির ভাগ লেখা টিকে আছে।
এ দিকে জেলা বাতায়নের তথ্যানুযায়ী, উলানিয়া জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা সুবাদার হানিফ যিনি ভারতীয় মুসলমান ছিলেন না। তার ঊর্ধ্বতন পঞ্চম পুরুষ শেখ মোহাম্মদ আসাদ আলী ভাগ্যান্বেষণে সুদূর পারস্য থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলেন। তিনি প্রথমে অযোধ্যায় ও পরে মুর্শিদাবাদে বসতি স্থাপন করেন। মোহাম্মদ হানিফ সৈনিক বিভাগে চাকরি করতেন। পরে তিনি ওলন্দাজ দস্যুদল, মগ ও ফিরিঙ্গি দলকে বাকেরগঞ্জ জেলার সাগর উপকূল থেকে সমূলে উৎখাত করেন। পিশাচ প্রকৃতির দস্যুদলের পৈশাচিক তাণ্ডবে যে স্থান জনমানব শূন্য জঙ্গলে পরিণত হয়েছিল, তা-ই আবার ধীরে ধীরে মোহাম্মদ হানিফের তত্ত্বাবধানে জনবহুল হয়ে ওঠে। সুবেদার হানিফের এই বীরত্বপূর্ণ কাজের ফলস্বরূপ তার পরবর্তী বংশধর এই ভূখণ্ডের জমিদার পদে অধিষ্ঠিত হন।