• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, গুলি চালাবেন না

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২০  

‘ওই দিন যখন শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হচ্ছিলো, তখন আমিসহ ১০-১২ আইনজীবী উনাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাই। তখন নেত্রী পুলিশকে উদ্দেশ করে মাইকে বলেছিলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বলছি, আপনারা গুলি চালাবেন না। নেত্রীর এই নির্দেশ উপেক্ষা করে ওইদিন পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। তাদের গুলিতে ২৪ জন নিহত হয়েছেন। আমরা তাদের কারও লাশও পাইনি। মির্জা রকিবুল হুদা, জে সি মণ্ডলসহ অন্যরা ওইদিন হিন্দু, মুসলিম নির্বিশেষে নিহত ২৪ জনের লাশ পুড়িয়ে দিয়েছিল।’

৩২ বছর আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় হামলার ঘটনা মনে করে এসব কথা বলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী ইব্রাহিম হোসেন বাবুল। এই মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এ রায়ের মাধ্যমে আমাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে। আমরা প্রতিবছর ২৪ জানুয়ারি এই শহীদ মিনারে এসে কর্মসূচি পালন করতাম আর বিচারের দাবি জানাতাম। রায়ের মাধ্যমে আমাদের সেই প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে। আমরা স্বজন হারানো আমাদের বন্ধুদের কোনও সান্ত্বনা দিতে পারতাম না। আর তিনদিন পর ২৪ জানুয়ারি এবার হয়তো কিছুটা সান্ত্বনা তারা পাবেন।’

পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবীরাও। আইনজীবী এরশাদ হোসেন বলেন, ‘এ রায়ে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। আমরা অত্যন্ত খুশি। আমরা চাই উচ্চ আদালতও যেন রায়টি বহাল রাখেন এবং দ্রুত কার্যকর করেন।’
অ্যাডভোকেট এরশাদ হোসেন এই মামলার বাদী আইনজীবী মো. শহীদুল হুদার ছেলে। এরশাদের পতনের পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ শহীদুল হুদা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলার চার্জশিটে আট পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়।
এরশাদ হোসেন বলেন,‘আমার বাবা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মামলা দায়ের করেছেন বলেই আজ রায় পেয়েছি।যারা সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, এ রায়ে আজ তাদের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে।’

১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বন্দরনগরীর লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভার দিন ছিল। ওই দিন বেলা ১টার দিকে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাক আদালত ভবনের দিকে এগোলে নির্বিচার গুলি ছোড়া শুরু হয়। পুলিশের গুলিতে ওইদিন ২৪ জন নিহত হন। এ সময় আইনজীবীরা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে ঘিরে মানববেষ্টনী তৈরি করে তাকে নিরাপদে আইনজীবী সমিতি ভবনে নিয়ে যান। ওই ঘটনায় নিহত কারও লাশ পরিবারকে দেয়নি স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সরকার। সবাইকে বলুয়ার দীঘি শ্মশানে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ঘটনার চার বছর পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ এ ঘটনায় মামলা করেন আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা। ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম দফায় অভিযোগপত্র দাখিলের পর অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে আট পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। এ মামলায় ৫৩ জন আসামির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত রায় দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। এসব ধারায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে আসামিদের। হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকায় ৩০২ ধারায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে ৩২৬ ধারায় প্রত্যেক আসামিকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রমাণিত হয়েছে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে জে সি মণ্ডল তার অধীন পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ওই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন।’

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইফতেখার সাইমুল ইসলাম বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ ধরনের রায়ের জন্য আমরা দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলাম। অবশেষে কাঙ্ক্ষিত রায় পেয়েছি। আমরা চাই রায় দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। যারা ওই দিন দুঃসাহস দেখিয়েছে, নির্বিচারে সাধারণ মানুষকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে, তারা ফাঁসিতে ঝুলুক।’