• মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ||

  • অগ্রহায়ণ ১৯ ১৪৩০

  • || ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
অবসরের তিন বছরের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তারা নির্বাচন করতে পারবে না বস্ত্র খাতের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে : রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বস্ত্রখাতের অবদান অপরিসীম : প্রধানমন্ত্রী শেখ ফজলুল হক মনির ৮৫তম জন্মদিন আজ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় : রাষ্ট্রপতি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় : প্রধানমন্ত্রী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দেশের বিভিন্ন স্থান পার্বত্য শান্তি চুক্তি বিশ্বে একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত: রাষ্ট্রপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বিশ্ব ইতিহাসে বিরল ঘটনা তরুণদের মুখোমুখি সজীব ওয়াজেদ জয় বিখ্যাত মার্কিন সাপ্তাহিক নিউজ ম্যাগাজিন নিউজউইকে শেখ হাসিনার নিবন্ধ ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার পুরস্কার পেলেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য সুন্দর নির্বাচন বঙ্গবন্ধু টানেলে ৩০ দিনে টোল আদায় ৪ কোটি টাকা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি অব্যাহত সমর্থন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মানুষের গতিশীলতায় জলবায়ুর প্রভাব: ৫ পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর মোহাম্মদ হানিফ তাঁর কর্মের মাধ্যমে জনগণের হৃদয়ে চিরদিন বেঁচে থাকবেন : রাষ্ট্রপতি দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে মোহাম্মদ হানিফ মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন আজীবন : প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশ্বে বাংলাদেশ অনুকরণীয়: প্রধানমন্ত্রী

তওবাকারীকে আল্লাহ বেশি ভালোবাসেন

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৩  

মানুষ হিসেবে ভুল করাটাই স্বাভাবিক৷ নবি-রাসুলগণ ছাড়া কেউ ভুলের উর্ধ্বে নয়। তবে ভুল কিংবা অন্যায় হয়ে গেলে এর ওপর অবিচল না থেকে সঙ্গে সঙ্গে অনুতপ্ত হয়ে একনিষ্ঠ অন্তরে আল্লাহর কাছে তওবা করা উচিত। এর মাধ্যমেই শয়তান আর মানুষের মধ্যকার পার্থক্য ফুটে ওঠে। তওবাকারীকে মহান আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ বেশি বেশি তাওবাকারীকে ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২২২)

এ কারণেই মানুষের বেশি বেশি তওবা-ইসতেগফার করা জরুরি। তওবা-ইসতেগফারে গুনাহ মাফ হয়। এ কারণেই তওবাকারীরাই উত্তম। হাদিসে পাকে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘মানুষ মাত্রই গুনাহগার। আর গুনাহগারদের মধ্যে তওবাকারীরাই উত্তম।’ (ইবনু মাজাহ ৪২৫১)

আল্লাহ তাআলা নিজেই তওবা-ইসতেগফার করতে নির্দেশ নিয়েছেন। তওবার মধ্যেই রয়েছে মহান আল্লাহর ভালোবাসা, দয়া ও ক্ষমা। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡهِ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ رَحِیۡمٌ وَّدُوۡدٌ

‘আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তিগফার কর অতঃপর তাঁরই কাছে তাওবা কর। নিশ্চয় আমার রব পরম দয়ালু, অতীব ভালবাসা পোষণকারী।’ (সুরা হুদ: আয়াত ৯০)

ক্ষমা প্রার্থনার নিয়ম

তাই জানা-অজানা হাজারো পাপে জর্জরিত থাকলেও; নিরাশায় না ভুগে, ফিরে আসতে হবে ক্ষমাশীল ও দয়ালু প্রভুর দরবারে। এখনো সময় আছে, সুযোগ আছে। মুহূর্ত পরে যে সুযোগ না-ও থাকতে পারে। তাই আসুন এভাবে তওবা-ইসতেগফার করি-

> أَستَغْفِرُ اللهَ

উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’

অর্থ: আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

নিয়ম: প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ইসতেগফারটি ৩ বার পড়তেন।' (মিশকাত)

> أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ

উচ্চারণ: ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘

অর্থ: আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।

নিয়ম: এ ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তওবা ও ইসতেগফার করতেন।' (বুখারি)

> رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ: 'রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।'

অর্থ: 'হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তওবা কবুলকারী করুণাময়।'

নিয়ম: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন।' (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

> أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ

উচ্চারণ: 'আস্‌তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।'

অর্থ: 'আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তওবা করে) ফিরে আসি।'

নিয়ম: দিনের যে কোনো ইবাদত-বন্দেগি তথা ক্ষমা প্রার্থনার সময় এভাবে তওবা-ইসতেগফার করা। হাদিসে এসেছে- এভাবে তওবা-ইসতেগফার করলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারী হয়।' (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)

> সাইয়েদুল ইসতেগফার পড়া

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগ্ফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।'

অর্থ: 'হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।'

নিয়ম: সকালে ও সন্ধ্যায় এ ইসতেগফার করা। ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর এ ইসতেগফার পড়তে ভুল না করা। কেননা হাদিসে এসেছে- যে ব্যক্তি এ ইসতেগফার সকালে পড়ে আর সন্ধ্যার আগে মারা যায় কিংবা সন্ধ্যায় পড়ে সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে যাবে।' (বুখারি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, গুনাহ করার সময়ের কথা না ভেবে আর দেরি না করে আল্লাহর কাছে তওবা করা। দেরি হয়ে গেলেও আল্লাহর কাছে তওবা করে গুনাহ থেকে ফিরে আসা। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা। গুনাহমুক্ত জীবন গড়া। তবেই তওবাকারী হবেন সফল। যেভাবে বলেছেন আল্লাহ-

وَتُوْبُوْا إِلَى اللهِ جَمِيْعاً أَيُّهَا الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

'হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।' (সুরা নুর : আয়াত ৩১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যে কোনো ছোট-বড় ভুলে দ্রুত তওবা করার তাওফিক দান করুন। দেরি হয়ে গেলেও তওবা করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।