• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সফর মাসের বিশেষ নামায

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০১৯  

 

সফর মাসকে কেন্দ্র করে কুসংস্কারের পাশাপাশি বিভিন্ন আমল-ইবাদাতেরও আবিষ্কার হয়েছে, যার সাথে ইসলামের দূরতম সম্পর্কও নেই। যেমন সফর মাসের প্রথম রাতে বিশেষ পদ্ধতির নামায। বলা হয়, কেউ যদি সফর মাসের ১ম রাত্রিতে মাগরিবের পরে বা ইশার পরে চার রাকআত নামায পড়ে, অমুক অমুক সুরা বা আয়াত এতবার পাঠ করে তবে সে বিপদ থেকে রক্ষা পাবে, এত এত পুরস্কার পাবে ইত্যাদি। এগুলি সবই ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা। বহুল প্রচলিত ‘বার চান্দের ফজিলত’ বইয়ে এ সংক্রান্ত অনেক ভিত্তিহীন কথাই বর্ণনা করা হয়েছে। আলিমদের উচিত এটি তাহকিক করে নতুন সংস্করণ বের করা। তা সম্ভব না হলে সাধারণ মানুষদের এসব বই পড়া থেকে বিরত রাখা। 

আখেরি চাহার শোম্বা 

‘আখেরি চাহার শোম্বা’ কথাটি ফার্সি। এর অর্থ হলো শেষ বুধবার। সাধারণ পরিভাষায় আখেরি চাহার শোম্বা বলে সফর মাসের শেষ বুধবারকে বোঝানো হয়ে থাকে। বলা হয় যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) যে অসুস্থতার মধ্যে রবিউল আওয়াল মাসের শুরুভাগে ইন্তিকাল করেন, সফর মাসের শেষ বুধবারে অর্থাৎ আখেরি চাহার শোম্বায় সে অসুস্থতা থেকে কিছুটা সুস্থতা বোধ করেছিলেন। তাই এ দিবসটিকে খুশির দিন হিসেবে উদযাপন করা হয়। অথচ এ তথ্য বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয়। এটা অবশ্য বর্ণিত হয়েছে যে, মৃত্যুর ক’দিন আগে তিনি গোসল করেছিলেন। আম্মাজান আয়িশা (রা.) বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন আমার ঘরে প্রবেশ করলেন, তাঁর অসুস্থতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। তখন তিনি বললেন, ‘তোমরা আমার উপরে ৭ মশক পানি ঢালো, যেন আমি আরাম বোধ করে লোকদের নির্দেশনা দিতে পারি।’ তখন আমরা এভাবে তাঁর দেহে পানি ঢাললাম…। এরপর তিনি মানুষদের নিকট বেরিয়ে গিয়ে তাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন এবং তাদেরকে ওয়ায-নসিহত করলেন।” [বুখারি, আসসাহিহ] 

এখানে স্পষ্ট যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর অসুস্থতার মধ্যেই অসুস্থতা ও জ্বরের প্রকোপ কমানোর জন্য এভাবে গোসল করেন, যেন কিছুটা আরাম বোধ করেন এবং মসজিদে গিয়ে সবাইকে প্রয়োজনীয় নসিহত করতে পারেন। এই গোসল করার ঘটনাটি কত তারিখে বা কী বারে ঘটেছিল তা হাদিসের কোন বর্ণনায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। তবে ইমাম ইবনু হাজার আসকালানি (রহ.) বুখারি ও মুসলিমের অন্যান্য হাদিসের সাথে এই হাদিসের সমন্বয় করে উল্লেখ করেছেন যে, এই গোসলের ঘটনাটি ঘটেছিল ইন্তিকালের আগের বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ইন্তিকালের ৫ দিন আগে। ১২ই রবিউল আওয়াল ইন্তিকাল হলে, গোসলের ঘটনাটি ঘটেছিল ৮ই রবিউল আউয়াল। 

প্রথমত খানিকটা সুস্থতার ঘটনাটাই প্রমাণিত নয়, আর গোসলের ঘটনাটা সফর মাসে নয়, রবিউল আওয়াল মাসে। এখান থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত এ আখেরি চাহার শোম্বা ভিত্তিহীন একটি ব্যাপার। 

মূল ঘটনাটাই যেহেতু প্রমাণিত নয়, সুতরাং এর ফযিলত থাকাটাও সম্ভব নয়। এরপরও এই দিনটিকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু ভিত্তিহীন বানোয়াট বর্ণনা পেশ করা হয়। যেমন বলা হয়, বুধবার অশুভ এবং যেকোনো মাসের শেষ বুধবার সবচেয়ে অশুভ দিন। আর সফর মাস যেহেতু অশুভ (জাহিলি আরবদের মিথ অনুযায়ী), সেহেতু সফর মাসের শেষ বুধবার বছরের সবচেয়ে অশুভ দিন এবং এই দিনে সবচেয়ে বেশি বালা-মুসিবত নাযিল হয়...।’ আরও বলা হয়, ‘সফর মাসে এক লাখ বিশ হাজার বিপদাপদ নাযিল হয় এবং সবচেয়ে বেশি আখেরি চাহার শোম্বা তথা সফর মাসের শেষ বুধবারে নাযিল হয়।’ 

উপরের কোনো একটি বর্ণনাও আমরা কোন সহিহ বা যয়িফ হাদিসেও পাইনি। আর ভারতীয় উপমহাদেশ ছাড়া অন্য কোন মুসলিম সমাজে ‘সফর মাসের শেষ বুধবার’ পালনের রেওয়াজও নেই। সাহাবা, তাবিয়িন, তাবি তাবিয়িন বা পরবর্তী যুগের অনুসরণীয় মুসলিমরা কখনোই এধরনের কোনো অনুষ্ঠান পালন করেননি। সুতরাং এত্থেকে বেঁচে থাকা একান্ত জরুরি।