• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বকে কতোটা বদলে দিলো ফেসবুক

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

হাতের কাছে যা পাওয়া যায়, তা দিয়ে গহনা বানানো খুলনার পারুলের শখ। স্কুলে পড়ার সময় সে অন্যদেরকে নিজের তৈরি গহনা বিনে পয়সায় দিয়ে দিতো। কিন্তু কলেজে উঠার পর তার চিন্তাভাবনা বদলে যায়। ফেসবুকে পণ্য উৎপাদন ও অনলাইনে বিক্রি করে ভালোই আয় হয় পারুলের। ভালো লাগে নিজেকে ব্যবসায়ী ভাবতে। এখন তার দুজন কর্মীও আছে।

শুধু একা পারুল নয়, বাংলাদেশের থানা পর্যায়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রী এখন পড়ালেখার পাশাপাশি ফেসবুকে পেইজ খুলে টুকটাক ব্যবসা করেন। অনেকে ফেসবুক লাইভে পণ্য দেখিয়ে, ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে তা পৌঁছে দিয়ে ভালোই আয় করছেন।

অনলাইনে যারা বিজনেস করেন, তা বই বিক্রি হোক বা খাবার, ফেসবুক তাদের ব্যবসা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এমনকি এফ কমার্স বা ফেসবুক কমার্স নামে নতুন একটি শব্দও এখন উদ্যোক্তা মহলে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর অর্থ হলো, ফেসবুক পেইজ কাজে লাগিয়ে পণ্য বিক্রি করা বা আয় করা।

ইন্টারনেট হাতের নাগালে আসায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ব্যবহার বেড়েছে। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে প্রকৃত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ কোটি ২০ লাখ। ফেসবুক পেইজেও সম্ভাব্য গ্রাহক হিসাবে পাঁচ কোটির বেশি মানুষকে দেখানো হয়।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, দেশে সোয়া চার কোটি থেকে পাঁচ কোটির মতো ফেইসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে।

অবশ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেশি। গত বছরের অক্টোবরে তা ছিলো ১৩ কোটি ১৯ লাখ। তখন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো ১১ কোটি ৯৭ লাখ। একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে গ্রাহক বিটিআরসির হিসাবে চলে আসে।

সংখ্যা যাই-ই হোক না কেন, ফেসবুক বাংলাদেশের ব্যবসা ও সামাজিক যোগাযোগের অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। ইভেন্ট আয়োজন করা, জনমত তৈরি করা, নিজের পরিচিতি বাড়ানো, নানা কিছু শেখানোসহ অনেক বৈচিত্র্যময় কাজে ফেসবুক এখন অপরিহার্য হয়ে ওঠেছে।

এমনকি গত সাধারণ নির্বাচনে অনেক প্রার্থী ফেসবুকে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। নিজের কর্মকাণ্ড ফেসবুকে প্রচার করে জনপ্রিয় হওয়া ব্যারিস্টার সুমন একজন সাবেক মন্ত্রীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্যও হয়েছেন। সংসদে যোগ দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফেসবুকের এমপি বলে অভিহিত করেন।

শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই ফেসবুক ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে গণযোগাযোগের জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। চলতি বছর বিশ্বের অর্ধেক মানুষ নির্বাচনে অংশ নেবে। বাইডেন থেকে মোদি - সবাই অনলাইনে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব থাকবেন।

এ ২০ বছরে ফেসবুকের সবকিছুই কি ভালো হলো? সবশেষ ৩১ জানুয়ারির উদাহরণ টানা যায়। এদিনে মার্কিন সিনেটররা ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকে ক্ষতিকর কনটেন্ট ছড়ানোর বিষয়ে দুকথা শুনিয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশেও ফেসবুক পোস্টের জের ধরে দাঙ্গা, ঘরবাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রতারণা, নিগ্রহের অভিযোগ আছে বিস্তর।

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি সম্পদ। একদিনে তা গড়ে ওঠেনি। দীর্ঘ সময় ধরে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা দিয়ে, ইন্টারনেট ব্যবহারের মুন্সিয়ানাও অর্জন করেছেন অনেকে। ফেসবুকের হিসাবেই, তার তিন বিলিয়নেরও বেশি গ্রাহক রয়েছে।
মোবাইল স্ক্রিনে কাটানো সময়ের অর্ধেকই সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপগুলো দখল করে আছে। মানুষের জেগে থাকার সময় বাড়ছে। দ্য ইকোনমিস্টের হিসাবে ২০২০ সালের তুলনায় এখন ৪০ ভাগ বেশি সময় ইন্টারনেট ব্যবহারে ব্যয় হয়। এর কারণ একটাই - বিশ্ব চলে গেছে অনলাইনে। আয়, জীবিকা ও রাজনীতির মতো জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বেশ জায়গা করে নিয়েছে।

২০ বছর আগে, যখন ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছিলো না, তখন দেখা করা বা ফোনে কথা বলে সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা হতো। ফেসবুকের প্রথম দিকে পোস্টে বন্ধু বা আত্মীয়রা মনোযোগ দিতো। কিন্তু এখন টিকটক বা অন্য কোনো অ্যাপের মতো ফেসবুকেও ভিডিওর সংখ্যা বাড়ছে। পোস্টের মাধ্যমে আড্ডাবাজির সংখ্যা কমছে। ফলে, আপনি বলতেই পারেন, মাত্র ২০ বছরেই সামাজিকতাকে প্রায় শেষ করে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

২০২০ সাল থেকে যেসব আমেরিকান  অনলাইনে তাদের জীবনের সব কিছুই নথিভুক্ত করতে পছন্দ করতেন, তাদের সংখ্যা ৪০ শতাংশ থেকে ২৮ শতাংশে নেমে এসেছে। তারপরও ২০ বছরে সমাজ ও ব্যবসায় যে ভূমিকা রেখেছে ফেসবুক, তা নিশ্চয়ই চলবে আরো অনেক দিন। ৪ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকের জন্মদিন। এর ২০ বছর পূর্তিতে এমন একটা ধারণা করাই যায়।