• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী

মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির বৈঠকে ১২ সিদ্ধান্ত

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২২  

এখন থেকে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তে যৌথ টহল দেবে দু’দেশের সীমান্ত রক্ষী। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা ও মাদকের কারবার বন্ধ করতে কঠোর বলয় তৈরির ব্যাপারেও একমত হয়েছে দু’দেশ। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পাঁচ দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন শেষে মোট ১২টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে বিজিবি সদর দফতরের শহীদ ক্যাপ্টেন আশরাফ হলে বিজিবি-বিজিপি সীমান্ত সম্মেলন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিজিবি মহাপরিচালক। গত ২৩ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় দুই বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের অষ্টম সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজিবির ডিজির  নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য সংস্থার ১০ সদস্য অংশ নেন। আর মিয়ানমারের পক্ষ থেকে অংশ নেয় ১৫ সদস্য।

মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ জানান, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদকের প্রবাহ রোধ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন ধরনের আন্তসীমান্ত অপরাধ মোকাবিলায় উভয় বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বিজিপির অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন তারা। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের কারণে সীমান্তে সৃষ্ট উত্তেজনাকর ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিজিপির প্রতি আহ্বান জানান বিজিবি মহাপরিচালক।

সম্মেলনের বাইরে বিজিবি মহাপরিচালক মিয়ানমারের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউনিয়ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও আলাদা সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি দুই বাহিনীর পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এবং অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করেন।

যা হলো সম্মেলনে

সম্মেলনে বিজিবির ডিজি দুই বাহিনীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মনোভাব বজায় রেখে এবং একে অপরের মধ্যে যাতে কোনও মতানৈক্য সৃষ্টি না হয় সেই আহ্বান জানান। তিনি মাদকপাচার ও সীমান্ত পারাপার রোধসহ বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য হুমকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুনরায় উভয় বাহিনীর মধ্যে সমন্বিত টহল শুরুর তাগিদ দেন। 

এবারের সম্মেলনে দুই বাহিনীর পক্ষ থেকে যে ১২টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা তার মধ্যে রয়েছে– সীমান্ত এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান; উভয় পক্ষের মধ্যে প্রতি দুই মাসে একবার ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে সমন্বয় সভা/পতাকা বৈঠক; বছরে দুইবার রিজিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে এবং বছরে দুইবার শীর্ষ পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনের আয়োজন বিষয়ে সম্মতি; পরিস্থিতি বিবেচনায় বিওপি বা কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক করার কথাও বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী বা সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করার বিষয়ে একমত হয় দুই বাহিনী। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিষয়টি গুরুত্বারোপ করে। বৈঠকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সীমান্ত পারাপার রোধে কার্যকরভাবে একে অপরকে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে।

সীমান্তের দুই পাশে আন্তসীমান্ত অপরাধী চক্র ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অবস্থান চিহ্নিত হলে তাদের অপতৎপরতা রোধে তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানসহ একে অপরকে কার্যকরভাবে সহযোগিতা করতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে। 

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকপাচার রোধে সে দেশের জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুসরণ করে মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে বিজিপি।

পারস্পরিক তথ্য আদান-প্রদান এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করার মাধ্যমে চলমান সীমান্ত পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সীমান্ত প্রতিষ্ঠায় উভয়পক্ষ যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।

উভয় পক্ষ ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক ও এডহক বৈঠকের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইন অনুসরণ করে দুই দেশের কারাগারে আটক নাগরিকদের কারাবাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর ও গ্রহণের বিষয়ে একমত হয়েছে।

উভয়পক্ষই সীমান্ত সম্পর্কিত প্রচলিত আইন ও অনুশাসন মেনে চলতে সম্মত হয়েছে। সীমান্তে কাঁটাতারে বৈদ্যুতিক লাইন এবং ল্যান্ডমাইন স্থাপনের বিষয়ে বিজিবি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলে বিজিপি বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করে। 

দুই দেশের খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ড বিনিময় এবং বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে শুভেচ্ছা সফরসহ আস্থা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণে সম্মত হয়েছে। দেশের প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্রুত সাড়া প্রদানের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ।

বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পরবর্তী নবম সীমান্ত সম্মেলন ২০২৩ সালের মে/জুন মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে উভয়পক্ষ সম্মতি জানায়।