• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
লেখাপড়ার নামে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি না করার আহ্বান বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বিশ্বে অনেক বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে: প্রধানমন্ত্রী ‘কিডনি রোগীদের চিকিৎসায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার’ ইফতার পার্টি না করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি রোজার তাৎপর্য অনুধাবন করে সমাজ জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বান পবিত্র মাহে রমজানে বাংলাদেশসহ মুসলিম জাহানের কল্যাণ কামনা ‘নভোথিয়েটার করার জন্য খালেদা জিয়া দুটি মামলা দিয়েছিল’ কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলছে সরকার প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক আমরা সমুদ্র সীমার অধিকার নিশ্চিত করেছি: প্রধানমন্ত্রী ৪১ সালের মধ্যে দুর্যোগ সহনশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আশা গবেষণা জাহাজ সংগ্রহের পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী ট্রাস্টের চলমান প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভা ৭ মার্চের ভাষণ মানুষকে উদ্বুদ্ধই করেনি, স্বাধীনতাও এনে দিয়েছে পাঁচ নারীকে জয়িতা পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বিক উন্নয়নে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ প্রয়োজন

একাত্তরের এইদিনে

৫ ডিসেম্বর ১৯৭১

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২০  

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা ১৯৭১ সালের ৫ই ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল।

১৯৭১ সালের ১ ও ২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ৪ নম্বর সেক্টরের রানীবাড়ী সাব-সেক্টরের অধীনে থাকা সব ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধা একসঙ্গে দেশের ভেতরে প্রবেশের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় ভারতের বাগপাশা থেকে অগ্রসর হয়ে রাঘনা নামক স্থানে ভারত-বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণকারী জুড়ী নদীর ওপর অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করেন তারা। এই সেতু দিয়েই বাংলাদেশে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনী। পরে তারা সীমান্তবর্তী ফুলতলা ইউনিয়নের ফুলতলা বাজার বিনা বাধায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে ফিরে পান।

রাতের মধ্যেই পাশের সাগরনাল ইউনিয়নে থাকা পাক বাহিনীর অবস্থানও মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। সেখানে মুক্তিবাহিনীর ক্যাপ্টেন সুখ লালসহ কিছু সংখ্যক সৈন্য রয়ে যান। বাকিরা জুড়ীর দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। রত্না চা বাগানের কাছে পৌঁছালে পাকিস্তানী বাহিনীর কাছ থেকে বাধা পান তারা।
সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা গুলি বিনিময় হয়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বিক্রমের সামনে তিক্তে না পেরে পাকিস্তানী বাহিনী পিছু হটে এবং কাপনাপাহাড় চা বাগানের দিকে চলে যায়। যৌথ বাহিনীও এখানে অবস্থান নেয়।
পরদিন দিনভর পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে প্রচন্ড যুদ্ধ চলে মুক্তিবাহিনীর। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। কিন্তু এবার পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিজেদের অবস্থান ছেড়ে জুড়ীর দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

কাপনাপাহাড় থেকে যৌথবাহিনীর সৈন্যরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে একদল কুলাউড়া শত্রুমুক্ত করার উদ্দেশ্যে গাজীপুর চা বাগানের রাস্তা ধরে কুলাউড়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

অপর দল জুড়ীর দিকে এগিয়ে যায়। পরদিন ৪ ডিসেম্বর ভারতের কুম্ভিগ্রাম বিমানবন্দর থেকে কয়েকটি যুদ্ধ বিমান যৌথবাহিনীর সমর্থনে এসে জুড়ী ও কুলাউড়াতে শে করে। বিমান বাহিনীর শেলিংয়ের মুখে জুড়ীতে অবস্থানরত পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর পক্ষে অবস্থান ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তারা রণে ভঙ্গ দিয়ে ঐদিন রাতেই পালিয়ে যায়। শত্রুমুক্ত হয় জুড়ী উপজেলা। মুক্তিযোদ্ধারা লাল-সবুজ পতাকা হাতে নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন। জয়বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয় চারপাশ।

উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের এই দিনে, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কামুদপুরে পাক সেনাদের সঙ্গে এক সম্মুখ যুদ্ধে ৮ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৪ সদস্য শহিদ হয়েছিলেন।

১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর তারিখে কমলগঞ্জের ভানুগাছ বাজারের নিকর্টবর্তী ধলাই ব্রিজের সম্মুখযুদ্ধে ৩ জন ও কমলগঞ্জ থানার সামনে জাতীয় পতাকা ওড়ানোর সময় অষ্টম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন সদস্য  পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন।

এরা হলেন, পাবনা জেলার শাহাদাৎপুর উপজেলার দারগাপাড়া গ্রামের ল্যান্স নায়েক জিল্লুর রহমান, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার কালাপাইনা গ্রামের সিপাহী মো. মিজানুর রহমান, দেবীদ্বার উপজেলার বড় শালঘর গ্রামের সিপাহী আব্দুর রসিদ, চট্রগ্রাম জেলার মিরশ্বরাইয়ের মগাদিয়া গ্রামের সিপাহী মো. শাহাজান মিয়া।

দেশের জন্য সম্মুখ যুদ্ধে নিজের জীবন উৎসর্গকারী এই ৪ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ঐ দিন রাতেই কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের পশ্চিম কামুদপুরে সমাহিত করা হয়েছিল।