• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী

সালমান শাহের মৃত্যুর দিন যা ঘটেছিল

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি দাবি করছে, সালমানকে হত্যা করা হয়নি, নায়িকা শাবনূরের সঙ্গে তার সম্পর্কের জের ধরে পারিবারিক কলহের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেন। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে সালমানের আত্মহত্যার ৫টি কারণ তুলে ধরে পিবিআই।

সেগুলো হলো, চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে তার অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা, স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ, বেশি আবেগপ্রবণ হওয়ার কারণে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা, মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা, যা জটিল সম্পর্কের বেড়াজাল তৈরি করে অভিমানে রূপ নেয় এবং সন্তান না হওয়ায় দাম্পত্য জীবনে অপূর্ণতা।

এদিন রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে সালমান শাহ মৃত্যুর ঘটনাপ্রবাহ আঁকা ছবির মাধ্যমে তুলে ধরে পিবিআই। পিবিআইয়ের সেই সচিত্র প্রতিবেদনের লিখিত অংশ তুলে ধরা হলো।

এতে দেখানো হয়, ঘটনার শুরুতে ডাবিং থিয়েটারে সালমান ও শাবনূরকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে রাগ করে বেরিয়ে যান স্ত্রী সামিরা। ঘটনার আগের রাত সাড়ে ১১টায় সালমানের সেলফোনে চিত্রনায়িকা শাবনূরের কাছ থেকে ফোন আসে। এ সময় সালমান শাহ কথা বলতে বলতে বাথরুমে ঢুকে যায়। বাথরুমে গিয়ে সালমান শাহ চিৎকার করে বলছিলেন যে, তাকে যেন আর ফোন না দেওয়া হয়।

এরপর রাত ১২টার দিকে তার মোবাইলে আবারও কল দেন শাবনূর। এ সময় সামিরা রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার উদ্দেশে নিচতলার লবিতে চলে যান। লবিতে সালমানের ব্যক্তিগত সহকারী আবুল হোসেন খান বাসায় ফিরিয়ে আনার জন্য সামিরাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। সামিরা বাসায় ফিরে কান্নাকাটি করতে থাকেন। রাত অনুমান সোয়া ১২টার দিকে শাবনূরের মোবাইল থেকে আবারও কল আসে। শাবনূরের কল এসেছে দেখতে পেয়ে সালমান শাহ রাগে সিটিসেল মোবাইলটি মেঝেতে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলেন।

এছাড়া শাবনূরের উপহার দেওয়া ফোনটিও ভেঙে ফেলেন। পর দিন সালমান শাহ বাসার কাজের সাহায্যকারী মনোয়ারা ভাঙা মোবাইলটি ময়লার ঝুড়িতে রেখে দেয়। এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সালমানের বাবা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বাসায় আসেন। এ সময় সামিরা তার শ্বশুরকে চা-নাস্তা খেতে দেন।

ওই সচিত্র প্রতিবেদনের আরো দেখানো হয়, ঘটনার দিন সকালে সালমান শাহ ঘুম থেকে উঠে কিচেন রুমে কাজে সাহায্যকারী মনোয়ারার কাছে পানি চান। মনোয়ারা এক মগ পানি দেন। সালমান শাহ পানি পান করে আরও এক মগ পানি চেয়ে পান করেন। পরে মালি জাকির কলিংবেল বাজায়। সালমান নিজেই দরজা খুলে দেন। এসময় জাকির সালমান শাহের কাছে তিন মাসের বকেয়া বেতন চান। কিন্তু কোনো কথা না বলে ভেতরে চলে যান।

পরে সালমান শাহ দারোয়ান দেলোয়ারকে ইন্টারকমে ফোন করে বলেন, তার বাসায় যেনো কাউকে আসতে দেওয়া না হয়। এরপর বেডরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে স্ত্রী সামিরার দিকে একদৃষ্টিতে কিছু সময় তাকিয়ে ছিলেন। সামিরা তখন বিছানায় শোয়া অবস্থান টিভি দেখছিলেন। সামিরা তখন সালমানকে জিজ্ঞাসা করে, কী দেখছো? সালমান শাহ কোনো কিছু না বলে বাথরুমে চলে যান।

সেখান থেকে বের হয়ে তিনি ড্রেসিং রুমে চলে যান এবং ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। এ সময় কাজের সাহায্যকারী ডলি তার ছেলে ওমরকে বাথরুম থেকে গোসল করিয়ে বের হয়। ওমরের কাপড়-চোপড় ড্রেসিং রুমের ভেতরে থাকায় ওমর ও তার মা ডলি দরজা নক করেন। দরজা না খোলায় ওমর বাইর থেকে বার বার ডাকতে থাকে। ওমর ও ডলি ডাকার পরেও দরজা না খোলায় বিষয়টি সামিরাকে জানালে সামিরা ড্রেসিং রুমের চাবি এনে দরজা খোলে। তখন ওমর, ডলি, মনোয়ারা ও আবুল দরজার সামনে উপস্থিত ছিলো।

ড্রেসিং রুমের দরজা খুলে সালমান শাহকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় সামিরা চিৎকার দিয়ে সালমান শাহকে নিচ থেকে উঁচু করে ধরে। তাকে আবুল ও মনোয়ারা সহায়তা করে। ডলি রান্না ঘর থেকে বটি এনে অ্যালুমিনিয়ামের মই বেয়ে ওপরে উঠে ফাঁসের রশি কেটে দেয়। বেলা অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে সালমান শাহকে ধরাধরি করে পাশের বেডরুমে শোয়ানো হয়। সামিরা মাথায় পানি দেয়, ডলি ও মনোয়ারা তেল গরম করে সালমানের বুকে, হাতে ও পায়ে মালিশ করে। খবর পেয়ে দারোয়ান দেলোয়ার সালমান শাহ ফ্ল্যাটে ছুটে আসে।

এরপর সালমানের বাবা, মা ও ভাইসহ অন্যান্য স্বজনরা ছুটে আসেন। তাকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেওয়া হয়। হলি ফ্যামিলি থেকে সালমান শাহকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের বাসা থেকে চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি।

প্রায় ১৮ বছর আগের এই মৃত্যুর ঘটনা হত্যা না আত্মহত্যা তা নির্ধারণে গত বছরের জানুয়ারি মাসে মামলাটি আবারও আদালতে ওঠে। তখন মামলাটি তদন্তে পিবিআইকে দায়িত্ব দেয় আদালত।