• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বসন্তে ঘুরে বেড়ানোর সেরা ৫ জায়গা

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

কারো কাছে বসন্ত মানেই রঙিন পৃথিবী, অনেকের কাছে বসন্ত মানে কোকিলের গান; কারো কাছে বসন্ত মানে বাসন্তী শাড়ি পরে ঘুরে বেড়ানো।  তবে পর্যটকদের কাছে বসন্ত হলো ঘুরে বেড়ানোর দ্বিতীয় সেরা মৌসুম। বসন্তে ঘুরে বেড়ানোর সেরা ৫ জায়গা নিয়ে আমাদের এই আয়োজন-

 

 

শিমুল বাগান

বিশাল শিমুল বাগানের একপ্রান্তে দাঁড়ালে অন্যপ্রান্ত দেখা যায় না।বাগানের ভেতর যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই শিমুল গাছের সারির সৌন্দর্য। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এত বিশাল শিমুল বাগান দেশের আর কোথাও নেই। গাছের নিচে মাটিতেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ফুল। গাছ থেকে ফুল মাটিতে পড়ছে, থপ করে শব্দ হচ্ছে। ধুলোমাখা মাটি যেন ফুলে ফুলে সাজানো লালগালিচা! রূপকথার কোনো রাজ্য মনে হতে পারে একঝটকায়। 

শত বিঘার বেশি জায়গা জুড়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে জাদুকাটা নদীর তীরে এই শিমুল ফুলের বাগান। পাশাপাশি আছে লেবু গাছ। বসন্তের দুপুরে পাপড়ি মেলে থাকা শিমুলের রক্তিম আভা মন রাঙায় তো বটেই, ঘুম ভাঙায় সৌখিন হৃদয়ের। এ যেন কল্পনার রঙে সাজানো এক শিমুলের প্রান্তর। ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়, মাঝে যাদুকাটা নদী আর এপাড়ে শিমুল বন। সব মিলে মিশে গড়ে তুলেছে প্রকৃতির এক অনবদ্য কাব্য। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউয়ের গড়। ১৪ বছর আগে ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে শুধুই সৌখিনতার বসে এই শিমুল বাগান গড়ে তোলেন, জয়নাল আবেদীন নামে স্থানীয় এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। বসন্ত এলে যখন একসাথে দুহাজার গাছে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে তখন পর্যটকদের নজর না কেড়ে উপায় কি!

 

 

গদখালি

বাংলাদেশের ফুলের রাজধানী হিসাবে সুপরিচিত যশোর জেলার গদখালী বাজার। গদখালীতে আসা ফুলগুলো যশোর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার ৯০ টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার বিঘা জমিতে চাষ করা হয়। ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার গ্রামগুলোর রাস্তার দুইপাশে দিগন্ত বিস্তৃত জমিতে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি আর সাদা রঙের ফুলের সমাহার দেখে মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে থাকতে হয়। এছাড়া ফুলের সুগ্রান, মৌমাছির গুঞ্জন, আর রঙিন প্রজাপতির ডানায় ভর করে এখানে আসে চিরন্তন সুন্দরের বার্তা।

যশোর-বেনাপোল রোড ছেড়ে ডানে, বায়ের গ্রামগুলোয় ঢুকে কিছুদুর এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে দিগন্ত জোড়া ফুলের মাঠ। রজনীগন্ধা, গ্লাডিওল্যাস, গোলাপ আর গাঁদা ফুল চাষ হয় এসব গ্রামে। ফুল কেটে গরুর গাড়িতে করে বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থেকে বান্ডিল করে চালান হয়ে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।

 

 

মনপুরা দ্বীপ

বসন্তে যদি নদী, বন-বাঁদাড়ে ঘুরে আসতে চান তাহলে যেতে পারেন মনপুরা দ্বীপ। গত কয়েক বছর ধরে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দ্বীপটি ভোলা জেলা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। মেঘনা নদীর কোলে বেড়ে উঠা দ্বীপটিতে রয়েছে সবুজের সমারোহ। কুয়াকাটার সঙ্গে এই দ্বীপের দারুণ মিল রয়েছে। কুয়াকাটাতে যেমন সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখতে পাবেন, ঠিক তেমনি মনপুরা এসেও আপনি প্রতক্ষ করতে পারবেন। এখানে সকাল বেলায় সূর্য যেমন হাসতে হাসতে পূর্বদিকে ডিমের লাল কুসুমের মত উদিত হতে দেখা যায়, তেমনি বিকেলেও আকাশের সিঁড়ি বেয়ে লাল আভা ছড়াতে ছড়াতে পশ্চিম আকাশে মুখ লুকায়। আবার রাতে হাতছানি দেয় দ্বীপের এক ভিন্ন রূপ। যেন ঘোমটা জড়ানো বধূর মত নিস্তব্ধতায় ছেয়ে যায় পুরো দ্বীপ।

মনপুরা দ্বীপে যাওয়ার একমাত্র বাহন হচ্ছে লঞ্চ। ঢাকার সদরঘাট থেকে এমভি ফারহান-৩ এবং ৪ নামে দুটি লঞ্চ প্রতিদিন বিকাল ৫ টায় হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে মনপুরা দ্বীপে পৌঁছায়। লঞ্চের ডেকে চড়ে যেতে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৩৫০ টাকা। সময় লাগবে ১২/১৩ ঘণ্টা। এছাড়া ঢাকা কিংবা বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে তজুমদ্দিন ঘাটের সি-ট্রাকে মনপুরা যাওয়া যায়। সি-ট্রাকটি তজুমদ্দিন থেকে ছাড়ে প্রতিদিন বিকাল ৩ টায় আর মনপুরা থেকে ছাড়ে সকাল ১০ টায়। এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এ নদীপথটি বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় এই রুটে তখন লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকে।

 

 

গোলাপ গ্রাম

সাদুল্লাহপুরকে এখন পর্যটকরা 'গোলাপ গ্রাম' হিসেবেই বেশি চেনেন। নগরের ইট কাঠ পাথরের ঝনঝন যান্ত্রিক জীবন থেকে ছুটি নিয়ে একদিনের জন্য যেতে পারেন এই গ্রামে। চোখ জুড়ানো দৃশ্য নিয়ে সেজে আছে পুরো গ্রাম যেদিকে চোখ যায় গোলাপের ক্ষেত। গোলাপের নয়নাভিরাম দৃশ্য ও মনমুগ্ধকর সুবাস গ্রাস করবে আপনাকে।  

ঢাকার খুব কাছেই সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে তুরাগ নদীর তীরে এই গোলাপ গ্রাম সাদুল্লাহপুরের অবস্থান। গোলাপের সুগন্ধ আর চোখ জুড়ানো দৃশ্য নিয়ে পুরো গ্রাম সেজে আছে। শুধু সাদুল্লাহপুর নয়, আশপাশের শ্যামপুর, কমলাপুর, বাগ্মীবাড়ি গ্রামের গোলাপের রাজ্যে চোখ আটকে যাবে যে কারো। সড়কের পাশে, বাড়ির সামনে এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের সব জায়গাতেই গোলাপ চাষ করা হয়। সকালে গোলাপের বাণিজ্যিক বাগান গুলোতে কাউকে কোনো কাজ করতে দেখা যায় না। তবে দুপুরের পর প্রতিটি বাগানেই শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ফুল কাটা, ফুল বাছাই, ফুল ভেজানো, ফুল বাঁধা সবই যেন কৃষক শেষ করেন সন্ধ্যার আগে। কারণ সন্ধ্যোর পরই জমে মোস্তাপাড়া ও শ্যামপুর ফুল বাজার। যেখানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ফুলের পাইকাররা এসে ফুল কেনেন।

 

 

সাজেক

পার্বত্য অঞ্চলের রাঙামাটি জেলায় সাজেক ভ্যালির অবস্থান। এটি এমন একটি জায়গা যেখানে ২৪ ঘণ্টায় প্রকৃতির তিনটা রূপ দেখতে পারবেন। কখনো খুবই গরম, একটু পরেই হটাৎ বৃষ্টি এবং তার কিছুক্ষণ পরেই হয়তো চারদিকে ঢেকে যাবে মেঘের চাদরে! রাতে এই দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায় যখন সোলারের কল্যাণে বাতি জ্বলে উঠে তখন সৃষ্টি হয় অসাধারণ এক পরিস্থিতি।

প্রিয়জন, বন্ধু বা পরিবার নিয়ে ভরা পূর্ণিমায় ঘুরে আসতে বের হয়ে যান ২১ মার্চ রাতেই। সাজেক গিয়ে দেখতে পারেন কংলাক পাহাড়, স্টোন গার্ডেন, খাগড়াছড়ির আলুটিলা গুহা, জেলা পরিষদ পার্ক/ঝুলন্ত ব্রিজ, রিসাং ঝরনা, তারেং, হাজাছড়া ঝরনা, শিব মন্দির-মিজোরাম ভিউ পয়েন্ট ও সূর্যাস্ত দেখার হেলিপ্যাড।