• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী

বরিশাল অঞ্চলের ২৭ নৌপথে ৪৭০ কিমি দৈর্ঘ্যে খননের প্রস্তাবনা

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২১  

“বরিশাল বিভাগের নদী সমূহের নাব্যতা বৃদ্ধি, জলাবদ্ধতা হ্রাস, জলাভূমি বাস্তু পুনরুদ্ধার, সেচ ও ল্যান্ডিং সুবিধাদি বৃদ্ধি করে নদী ব্যবস্থাপনার সম্ভাব্যতা যাচাই” শীর্ষক সমীক্ষার ওপর কর্মশালা অনু‌ষ্ঠিত হ‌য়ে‌ছে।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়া‌রি) বেলা ১২ টায় নগ‌রের সা‌র্কিট হাউ‌জের সভাক‌ক্ষে বিআইড‌ব্লিউ‌টিএর আ‌য়োজ‌নে বিভাগীয় প্রশাস‌নের সহযাগীতায় এ কর্মশালা অনু‌ষ্ঠিত হয়।

কর্মশালার শুরু‌তে স্বাগত বক্ত‌ব্যে বিআইড‌ব্লিউ‌টিএ'র ড্রে‌জিং বিভা‌গের অ‌তি‌রিক্ত প্রধান প্র‌কৌশলী র‌কিবুল ইসলাম তালুকদার জানান, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে পরিবহনের প্রধান মাধ্যম নৌপথ। সম্প্রতি সমুদ্র উপকূলীয় এ অঞ্চলে মােংলা বন্দরের ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি এবং পায়রা বন্দরের উন্নয়নের কারণে এ অঞ্চলটির নৌপথ ব্যবহারে নদী সমূহের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু উজান থেকে এবং জোয়ারের মাধ্যমে ভাটি থেকে আগত পলির কারণে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নৌপথে নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ নদীর প্রধান চ্যানেলে পর্যাপ্ত নাব্যতা থাকলেও সারাবছর সব ধরনের নৌ চলাচলে জন্য নাব্যতা উন্নয়ন এবং কিছু কিছু ছােট নদী ও খাল পুনরুদ্ধার করার প্রয়ােজন রয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বানৌপক) “বরিশাল বিভাগের নদীসমূহের নাব্যতা বৃদ্ধি, জলাবদ্ধতা হ্রাস, জলাভূমি বাস্তু পুনরুদ্ধার, সেচ ও ল্যান্ডিং সুবিধাদি বৃদ্ধি করে নদী ব্যবস্থাপনার সম্ভাব্যতা যাচাই” শীর্ষক এক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় সর্বমােট ৩১টি নৌপথ বিবেচনা করা হয়েছে যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১,৪৭৫ কিমি।

তি‌নি জানান, এ প্রকল্পের সামগ্রিক উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের, বিশেষত বরিশাল বিভাগের নদীগুলাের টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে কারিগরি, পরিবেশগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক আঙ্গিক বিবেচনায় রেখে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করা। এছাড়া নদীসমূহের নাব্যতা বৃদ্ধি ও ক্ষেত্র বিশেষে পুনরুদ্ধার, বর্তমানে উপস্থিত ঘাট বা ল্যান্ডিং স্টেশনের সার্বিক অবস্থার উন্নয়ন, নতুন ঘাট বা ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত স্থান নির্বাচন, নৌপথের নিরাপদ ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, পর্যটন, জলজ পরিবেশ, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা দূরীকরণ।

কর্মশালায় সমীক্ষার বরাত দিয়ে জানানো হয়, বরিশাল অঞ্চলের অধিকাংশ নদী উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় জোয়ার ভাটা একটি প্রাত্যহিক ঘটনা। মেঘনা নদীর মােহনা হতে পলি মাটি জোয়ারের মাধ্যমে এ অঞ্চলে সঞ্চালিত হয় যা এ অঞ্চলের নদীগুলােকে গতিশীল করে রেখেছে। নদী সমূহের নাব্যতা বৃদ্ধি, প্রধান চ্যানেলের সঙ্গে ঘাটের সংযােগ স্থাপন, সেচ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি, জলজ সম্পদ বৃদ্ধি এবং নদীর পাড় ভাঙন রােধের লক্ষ্যে নৌপথসমূহের বিভিন্ন অংশে খননের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৩১টি নৌপথের মধ্যে মাত্র চারটি নৌপথে পর্যাপ্ত গভীরতায় থাকায় ড্রেজিং কার্যক্রমের প্রয়ােজন নেই। অবশিষ্ট নৌপথে প্রায় ৪৭০ কিমি দৈর্ঘ্যে খননের প্রস্তাবনা করা হয়েছে যার ক্যাপিটাল ড্রেজিং পরিমাণ প্রায় ৪২ মিলিয়ন ঘনমিটার। পরবর্তীতে নৌপথসমূহে নাব্যতা বজায় রাখার জন্য সাত বছর সংরক্ষণ ড্রেজিং এর প্রস্তাব করা হয়েছে যার পরিমাণ হবে প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ঘনমিটার।

সমীক্ষায় বিআইডব্লিউটিএ হতে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন বন্দর এর অধীন ঘাটসমূহের তালিকা ও তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণের অধীন ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে বিদ্যমান সব ঘাট এর তথ্য উদঘাটনে সিইজিআইএস সমীক্ষা এলাকায় সকল নৌপথে মাঠ পর্যায়ে জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে মােট ২৪৪টি ঘাট চিহ্নিত করে। ট্রাফিক সমীক্ষা, স্থানীয় জনগণের চাহিদা, ঘাটে প্রয়ােজনীয় সুবিধাদির অভাব, নৌপথের সংযােগ, নদীর অবস্থা ও প্রস্থ প্রভৃতি বিবেচনাপূর্বক নতুন ঘাট এবং বিদ্যমান ঘাট উন্নয়নের জন্য গৃহীত পরিকল্পনায় তিনটি নতুন লঞ্চ ঘাট নির্মাণ, ষাটটি লঞ্চ ঘাট, এগারােটি কার্গোঘাট, আটত্রিশটি খেয়াঘাট উন্নয়ন এবং তিনটি ঘাট পর্যটনের উন্নয়নের জনা প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্র‌কৌশলী র‌কিবুল ইসলাম আরও ব‌লেন, খননকৃত মাটির যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য মাঠ জরিপ ও স্থানীর জনগণের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। ড্রেজিং কাজ পরিচালনা, ঘাট এবং অন্যান্য ল্যান্ডিং সুবিধাদি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রস্তাবিত অবকাঠামাে নির্মাণের কারণে পরিবেশের উপর প্রভাব বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ প্রকল্পের যথার্থতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব প্রশমনের জন্য পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার সুপারিশ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠা‌নে প্রধান অ‌তি‌থি হি‌সে‌বে উপ‌স্থিত ছি‌লেন নৌ প‌রিবহন মন্ত্রণাল‌য়ের প্র‌তিমন্ত্রী খা‌লিদ মাহমুদ চৌধুরী।  

‌বিভাগীয় ক‌মিশনার ড. অ‌মিতাভ সরকা‌রের সভাপ‌তি‌ত্বে কর্মশালায় বি‌শেষ অতিথি ছি‌লেন ব‌রিশাল সি‌টি কর‌পো‌রেশ‌নের মেয়র সের‌নিয়াবাত সা‌দিক আব্দুল্লাহ, ‌বিআইড‌ব্লিউ‌টিএ'র চেয়রম্যান  গোলা‌মে সা‌দেক- এন‌জি‌পি, এন‌ডি‌সি, এন‌সি‌সি, পিএস‌সি।