• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী

করোনাকালে শেখ হাসিনার যত সাফল্য

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২০  

বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে বিপর্যস্ত বিশ্ব। যার প্রভাব এড়াতে পারেনি বাংলাদেশও। গত ছয় মাস ধরে অদৃশ্য এ শক্তির মোকাবিলার পাশাপাশি ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এখন চলছে বন্যা। এসব প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে মানুষকে বাঁচাতে বহুমাত্রিক উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কর্মঘণ্টা ভুলে শক্ত হাতে একাই সামলে নিচ্ছেন সবকিছু। বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। করোনার মধ্যেও থেমে নেই মেগা প্রকল্পগুলোর নির্মাণ। দেশের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ছে। অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠায় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু গড় আয় ২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আগের অর্থবছরে যা ছিল ১ হাজার ৯০৯ ডলার। অর্থাৎ দেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় এক বছরের ব্যবধানে ১৫৫ ডলার বেড়েছে। করোনা সংকটকালে বাজার পরিস্থিতিও ছিল সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণে। অর্থাৎ করোনা, আম্ফান, বন্যা ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সফলভাবে সংকট মোকাবিলা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সূত্রমতে, মার্চে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর প্রথমে স্কুল, কলেজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৮ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। টানা দুই মাসের ওপর (৬৬ দিন) ছুটিতে গৃহবন্দী হতে হয় মানুষকে। কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং দেশের অনেক শিল্পগ্রুপ। করোনা সংকটে যেসব মানুষ চক্ষুলজ্জার ভয়ে অন্যের কাছে হাত পাততে পারেনি, তাদের তালিকা করে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। করোনা মহামারীতে যখন মানুষ দিশাহারা তখনই মে মাসে হানা দেয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। প্রথম দিকে ধারণা করা হচ্ছিল, বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হবে। গৃহহীন হবে অনেক মানুষ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নিশ্চিত হয় উপকূলের লাখো মানুষের নিরাপত্তা। আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ঘরবাড়ি করে দেওয়াসহ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম এখনো চলমান।

করোনায় লকডাউনের কারণে শ্রমিক সংকটে কৃষক যখন ঘরে ধান তুলতে পারছিল না, তখন শ্রমিকদের বিভিন্ন জায়গায় চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নিতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগসহ দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তাঁর নির্দেশে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিনামূল্যে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। ফলে বন্যায় ডুবে যাওয়া কিংবা শ্রমিক সংকট থেকেও সাফল্য আসে। সে সময় ধান ও চাল সংগ্রহ করতে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে খাদ্য মজুদ করা হয় দেশে। বাড়ির পাশে খালি জায়গায় কৃষি আবাদের নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান।

করোনা চলাকালে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ১৯টি প্যাকেজে ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এতে বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যেমন প্রণোদনা পেয়েছেন, বাদ যাননি করোনাযোদ্ধা চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টরাও। তাদের জন্যও ঘোষণা করা হয় স্বাস্থ্যবীমা বা প্রণোদনা। করোনায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নিয়োগ দেওয়া হয় চিকিৎসক। নিশ্চিত করা হয় চিকিৎসা সুরক্ষাসামগ্রীও। সবকিছু শক্ত হাতে তদারকি করেন তিনি।

দরিদ্র কৃষক ও কৃষির উৎপাদন বাড়াতে ৫ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এতে বাদ পড়েননি মসজিদের ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসার শিক্ষক, নন-এমপিও শিক্ষক, গার্মেন্ট শ্রমিক, গ্রামপুলিশ, প্রতিবন্ধী, দুস্থ সাংবাদিকরাও। এমনকি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কথাও ভুলে যাননি সরকারপ্রধান। তাদেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্যও বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। ঈদের আগে প্রতি পরিবারকে ২ হাজার ৫০০ করে ১ হাজার ২৫০ কোটি নগদ টাকা সহায়তা করা হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয় ভিজিএফ, ভিজিডির পরিমাণ। রেশন কার্ডের আওতায় ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি করা হয়। এতে ৫ কোটি মানুষ উপকৃত হয়েছে। শিশুদের জন্যও খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ ক্ষমতাসীন দলের কিছু কিছু জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও কাউকে এক চুল ছাড় দেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শতাধিক জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, করোনাকালে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে, কিন্তু শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে কোনো সংকট সৃষ্টি হয়নি। বরং উৎপাদন ও খাদ্য মজুদ বেড়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবন সূত্রগুলো বলছেন, করোনা পরিস্থিতির পর থেকেই কর্মঘণ্টা ভুলে দেশের মানুষকে বাঁচানোর লড়াইয়ে নিরলস কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনার শুরু থেকে গণভবন থেকে ছয় দফায় তৃণমূলে মাঠ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে দিয়েছেন সব ধরনের নির্দেশনা। স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনাসহ সব জায়গায় সঠিক মনিটরিং করেছেন তিনি। এ ছাড়া এখন নিয়মিত মন্ত্রিসভার বৈঠকসহ নানা কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

জুনের শেষ সপ্তাহে দেশের কয়েকটি জেলায় আঘাত হানে ভয়াবহ বন্যা। বন্যা ও নদী ভাঙন রোধেও নজর দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতা-কর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যারা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন তাদেরও পুনর্বাসনে প্রস্তুতি চলছে।

করোনা, আম্ফান ও বন্যার মধ্যেও সরকারের দক্ষ মনিটরিংয়ের কারণে বাজার পরিস্থিতিও ছিল সাধারণ মানুষের নাগালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিভিন্ন সংস্থাও নিয়মিত মনিটরিং করেছে সর্বক্ষণ।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শুধু করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাই নয়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, বন্যা পরিস্থিতি শক্ত হাতে মোকাবিলা করছেন। আবার অর্থনীতির চাকাও সচল রেখেছেন। গণভবন থেকে সবকিছু কঠোরভাবে মনিটরিং করছেন। কিছু দোষত্রুটি ও অন্যায় হলে সেখানেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন তিনি। এমনকি দলীয় পরিচয়েও কেউ পার পাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু করোনা, আম্ফান, বন্যাই নয়, এবারের ঈদযাত্রাও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। সেটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাফল্যজনকভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বের বড় বড় দেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সব অর্থনীতির সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের অর্থনীতি।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘মানুষের জন্য রাতদিন কাজ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তাঁকে রাত ২টায় ফোন করলেও পাওয়া যায়। আবার সকাল কিংবা দুপুরেও ফোন করলে পাওয়া যায়। কখনো না ধরতে পারলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোন ব্যাক করেন। এটা শুধু আমার ক্ষেত্রেই নয়, অনেকের ক্ষেত্রেই এমন ঘটছে।’