• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী

ঈদের পরে উচ্চ সংক্রমণের শঙ্কা!

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২১  

ঈদের পর আবারও দেশে করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। দেশব্যাপী চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যেই মার্কেটে-শপিং মলে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মানুষের ভিড় এবং ঈদে ঘরমুখো জোয়ার মিলে এই ভয়কে বড় করে তুলছে। এর মধ্যে দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের প্রবেশ সেই শঙ্কাকে আরও তীব্র করে তুলছে। ইতোমধ্যে সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক হারে করোনা টেস্ট এবং সেই এলাকার যানবাহন যাতে অন্য এলাকায় যেতে না পারে সেই বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শরীরে রোগ-জীবাণু প্রবেশের পর থেকে রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগ পর্যন্ত মধ্যবর্তী যে সময়কাল সেটাকে বলা হয় ইনকিউবেশন পিরিয়ড। করোনার বেলায় এটা দুই দিন থেকে ১৪ দিন। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে এই সময়ের মধ্যে লক্ষণ উপসর্গ প্রকাশ পাওয়া শুরু করে। গত ২৫ এপ্রিল থেকে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই খুলে দেওয়া হয়েছে শপিং মল। প্রথম কয়েকদিন ক্রেতাদের চাপ কম হলেও পাঁচ দিন পর থেকে চাপ বাড়তে শুরু করে। বিভিন্ন শপিং মল, মার্কেটে দেখা যায় মানুষের উপচেপড়া ভিড়। সেখানে নেই সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি পালনের লক্ষণ। সেটির একটি প্রভাব ১৪ দিন পর পড়তে পারে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বিজ্ঞাপন

পাশাপাশি সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঈদে বাড়ি ফেরার হিড়িক। গত ২ মে থেকে দেশের ফেরিঘাটগুলোতে দেখা যায় ঘরমুখো মানুষের চাপ। জনস্রোত ঠেকাতে ফেরি বন্ধ ঘোষণা করে শুধু মালবাহী পণ্য নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে তাতেও বাধে বিপত্তি। জনস্রোত ঠেকাতে বিজিবি মোতায়েন করা হলেও তাতে কোনও কাজ হয়নি। ফলে আবার ফেরি চালু করে দিতে অনেকটা বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। সাধারণ মানুষ যে কোনও উপায়ে ঢাকা ছাড়ছেন। কেউ ট্রাকে, কেউ পিকআপে কিংবা অনেকে পায়ে হেঁটেই রওনা হচ্ছেন গন্তব্যের দিকে।

শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড

দেশে করোনার সর্বাধিক সংক্রমণ ছিল গত মার্চ-এপ্রিল মাসে। ফেব্রুয়ারিতে করোনা সংক্রমণের হার দুই শতাংশে নেমে আসলেও মার্চে তা দাঁড়ায় ২৫ শতাংশের কাছাকাছি। এযাবৎ কালের সর্বাধিক সংক্রমণের হার ছিল গত আগস্টে ৩১ দশমিক ৯১ শতাংশ। দেশের ইতিহাসে একদিনে সর্বাধিক শনাক্ত হয় ৭ এপ্রিল। সেটি ছিল সাত হাজার ৬২৬ জন। সর্বাধিক মৃত্যু ছিল ১১২ জন, গত ১৯ এপ্রিল। মার্চে মোট শনাক্ত ছিল ৬৫ হাজার এবং এপ্রিলে প্রায় দেড় লাখ। আর মার্চ থেকে এপ্রিলে মৃত্যু ছিল চারগুণ বেশি।

সেসময় হাসপাতালে চাপ পড়েছিল উল্লেখযোগ্য হারে। ঢাকার প্রায় সব সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে বেড ও আইসিইউ ছিল পূর্ণ। সেটি আবার স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে এপ্রিলের শেষে। সংক্রমণের হার বর্তমানে ১০ শতাংশের নিচে।

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আতঙ্ক

সম্প্রতি দেশে শনাক্ত হয়েছে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি-১৬১৭। ছয় জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। ভারতে এই ভ্যারিয়েন্ট প্রথমে মহারাষ্ট্রে শনাক্ত হয় গত ৫ অক্টোবর। সম্প্রতি এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে মৃত্যু ও শনাক্তের। সেদিক চিন্তা করে দেশের সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক হারে করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

সোমবার (১০ মে) দেশের চারটি সীমান্ত এলাকার বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠককালে মন্ত্রী বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে প্রতিদিন হাজারও মানুষ মারা যাচ্ছে। ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্টটি এখন নেপালে ছড়িয়ে গিয়ে সেখানে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে। এই ভ্যারিয়েন্ট এখন আমাদের দেশেও চলে এসেছে। এই রকম ক্রিটিকাল সময়ে এই ভাইরাস দেহে নিয়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যদি গ্রামে চলে যায়, তাহলে গ্রামে থাকা পরিবার পরিজনসহ গ্রামবাসী গণহারে আক্রান্ত হতে পারে।

জনস্বাস্থ্যবিদদের শঙ্কা

উচ্চ সংক্রমণের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছেন দেশের জনস্বাস্থ্যবিদরাও। কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় সংক্রমণ একটু বাড়বে। তৃতীয় ঢেউ হবে কি না সেটা এখন বলা যাবে না। এখন সাস্থ্যবিধি না মানার কারণে যে ক্ষতি তা হবে আমাদের। সেটা আমরা ১৫ দিন পর দেখতে পারবো। ১৫ দিন পর বাড়বে সংক্রমণ। তৃতীয় ঢেউ বলতে গেলে অনেক কিছু হিসেব নিকেশ করে বলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি আমরা ইচ্ছা করলে ঠেকাতে পারতাম। আমরা যদি সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারতাম তাহলে হতো। মানুষ প্রতিবারই ঈদে বাড়ি যায়। সেটি কি বন্ধ করা যাবে? শুধু মুখে বাড়ি যেতে নিষেধ করলেই কি মানুষ শুনবে? এরকম হয় না। বাস বন্ধ করে দিলে মানুষ বাড়ি যাবে না এমন চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিলে দেখা যাচ্ছে অন্য ব্যবস্থায় মানুষ বাড়ি যাচ্ছে। উদ্দেশ্য যদি করোনা ঠেকানো হয় তাহলে বাস বন্ধ করার কি দরকার ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালানো গেল না? সব করা যায় কিন্তু বাসের স্বাস্থ্যবিধি চালু করা যায় না?’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘ঈদের পরে হয়তো অনেক বেশি সংক্রমণ দেখা যাবে না। কিন্তু এটার ঝুঁকি তৈরি করবে সামনের দিনগুলোতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার। তারপর যদি লকডাউন উঠিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আমরা একটা ঊর্ধ্বগতি দেখবো। এর সঙ্গে যদি আবার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যুক্ত হয় তাহলে মনে হয় আমাদের জন্য সমস্যা হয়ে যাবে।’