• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

অর্থনৈতিক বিপ্লবের হাতছানি দক্ষিণাঞ্চলে

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮  

বর্তমান সরকারের টানা দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।অবহেলিত এই জনপদে সরকারের একাধিক গুরুত্বপুর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে। পদ্মা সেতু, পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্র বন্দর, সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন, ঢাকা থেকে পায়রা পর্যন্ত রেলপথ, বরিশালে আইসিটি পার্ক, আগৈলঝাড়ায় অর্থনৈতিক জোন, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, ভোলায় বিশেষ অর্থনৈতিক জোন, ভোলা-বরিশাল সেতুসহ নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প সমাপ্ত হলে এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। জানা যায়, বর্তমান সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়নে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। অবহেলিত এই জনপদে বইছে উন্নয়নের হাওয়া। বিশেষ করে এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। এছাড়া পটুয়াখালীতে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম পায়রা সমুদ্র বন্দর গত বছরের ১৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন।নির্মানাধীন পদ্মাসেতুর কল্যাণে সরাসরি রেলপথ যাবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা হয়ে বরিশাল দিয়ে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্র বন্দরে। এর মাধ্যমে এখানে উচ্চমাত্রায় অর্থনৈতিক গতি সঞ্চার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বরিশালে আরো নির্মিত হচ্ছে কোস্টগার্ডের রিজিওনাল সদর দপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পুর্ণাঙ্গ টিভি কেন্দ্র স্থাপন, বরিশাল বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তর, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনাল স্থাপন, বরিশাল সেনানিবাস স্থাপন, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) ইত্যাদি।বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, পায়রা বন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর বরিশালের ব্যবসায়ীরা উৎসব মুখর অবস্থায় রয়েছে। পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজও দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলছে। এ দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ব্যাপক শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বরিশাল অঞ্চল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসবেন বিনিয়োগ করতে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের অদূরে ও বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পাশে ২’শ ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত হবে আইসিটি পার্ক। সড়ক ও জনপদ বিভাগের ৫ একর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে পার্ক নির্মাণের জন্য। গড়ে উঠবে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। যারা শুধু দেশীয় নয়, বিদেশি কোম্পানির কাজও সম্পাদন করবে।এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ২৩ হাজার ব্যক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।এছাড়া আগৈলঝাড়ায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজও এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে ৩’শ একর জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গত বছরের ৬ আগস্ট প্রকল্প’র নির্বাহী পরিচালক পবন চৌধুরী নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করে গেছেন। পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে এখানকার অর্থনৈতিক জোন বরিশালের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাবে। মানুষের চাহিদা অনুযায়ি বিশাল শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা হবে। উৎপাদিত পন্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানির প্রচুর সম্ভাবনাও রয়েছে। আর সদর উপজেলার চর-আইচায় ১০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার স্থাপনের জন্য। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে পর্যটক কর্পোরেশন। দেশের সর্ববৃহৎ দ্বীপ জেলা ভোলায় আরেকটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নে ২০৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে এ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য। এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য খুব সহজেই পায়রা বন্দর দিয়ে দেশ ও বিদেশে রপ্তানি করা সহজ হবে। গত বছরের ৫ আগস্ট বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও অর্থনৈতিক জোন প্রকল্পের প্রধান পবন চৌধুরী নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেছেন। গ্যাস সমৃদ্ধ এ জেলাকে দেশের মূল-ভূখন্ডের সাথে সংযুক্ত করতে ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করেছে। বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা মইনুল হোসেন বিপ্লব বলেন, ভোলায় প্রচুর গ্যাস রয়েছে। ইতিমধ্যে এই গ্যাস দিয়ে ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন হয়েছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে এখানে দৃশ্যমান প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ব্যবসায়ীরা তাই ভোলার গ্যাস দিয়ে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার দাবি জানান। প্রায় ৬ হাজার একর জমির উপর ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা সমুদ্র বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বন্দরটি নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করবে ও রফতানি প্রক্রিয়া এবং শিপবিল্ডিং সেক্টরে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বন্দরটি পূর্ণাঙ্গরূপে চালু হলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে বরিশাল, ভোলা ও পটুয়াখালী জেলার বাসিন্দারা। এ তিনটি জেলা দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। একই জেলার কলাপাড়া উপজেলায় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের নির্মাণ কাজও এগিয়ে চলছে। উপজেলার গোড়া আমখোলা পাড়া গ্রামে প্রায় ১০ একর জমির উপর নির্মাণাধীন দ্বিতীয় ল্যান্ডিং স্টেশনের কাজ শেষের পথে। এখানে সংযুক্ত হচ্ছে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের উচ্চগতির ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যান্ডউইথ। চলতি বছরে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের কথা রয়েছে। এ ব্যাপারে পটুয়াখালী-৪ আসনের (কলাপাড়া-রাঙ্গালি) সংসদ সদস্য ও সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বাসস’কে জানান, শেখ হাসিনার সরকার উন্নয়নের সরকার। এই অঞ্চলে সরকারের অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে মানুষের ভাগ্য।