• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী

দেশে প্রথমবারের মতো রোবোটিক অপারেশন ও জিন থেরাপির ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২২  

চিকিৎসা সেবায় দেশে প্রথমবারের মতো রোবোটিক অপারেশন ও জিন থেরাপির ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে। রোবোটিক সার্জারি হলো একটি রোবট-সহায়ক অস্ত্রোপচার পদ্ধতি, যা ডাক্তারদের একটি রোবোটিক হাতের সঙ্গে সংযুক্ত খুব ছোট সরঞ্জাম ব্যবহার করে অস্ত্রোপচার করতে দেয়। রোবোটিক সার্জারির ঝুঁকি ও জটিলতা খুবই কম।

এটি একটি ন্যূনতম ঝুঁকির অস্ত্রোপচার পদ্ধতি, যা ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে করা যেতে পারে এবং সার্জন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। করোনারি আর্টারি বাইপাস, ক্যানসারের চিকিৎসা, গলব্লাডার অপসারণ, নিতম্ব প্রতিস্থাপন, হিস্টেরেক্টমি, নেফ্রেক্টমি, মিট্রাল ভালভ মেরামত, পাইলোপ্লাস্টি, পাইলোরোপ্লাস্টি, রেডিকাল প্রোস্টেটেক্টমি, রেডিকাল সিস্টেক্টমি ও টিউবাল লাইগেশন চিকিৎসা সেবা রোবোটিক অপারেশনের মাধ্যমে করা যায়। অন্য দিকে জীবের ক্ষতিকারক জিনকে অপসারণ করে সুস্থ জিন প্রতিস্থাপনকে জিন থেরাপি বলে। কিছু মারাত্মক রোগ যেমন ক্যানসার, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, হিমোফিলিয়া এবং এইডস রোগের চিকিৎসায় জিন থেরাপির মাধ্যমে রোগীরা সুস্থ হয়ে যায়। এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসা ও অপারেশনের ব্যবস্থা থাকছে।

আগামী মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীন চালু হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম সেন্টার-ভিত্তিক ৭৫০ শয্যার সুপার স্পেশাইলাজড হাসপাতাল। আর এই হাসপাতাল চালুর মাধ্যমে রোবোটিক অপারেশন ও জিন থেরাপির ব্যবস্থা দেশে চালু হবে। এই সুপার স্পেশাইলজড হাসপাতাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, এই হাসপাতালে ধনী-দরিদ্র সবাই পাবেন বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা। ধনীরা স্বল্পমূল্যে এবং দরিদ্রদের বিনা মূল্যে বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে। দরিদ্রদের জন্য গঠিত কল্যাণ ফান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুদান দেন। ইতিমধ্যে ভবনের অবকাঠামো নির্মাণসহ হাসপাতালের কাজ প্রায় শেষ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে এই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। এ দেশে ধনী-গরিবসহ সব শ্রেণির মানুষ যাতে হাতের কাছেই আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা পান সেই লক্ষ্যে তিনি এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। যাতে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না হয়। অপর দিকে চিকিৎসার জন্য প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার বিদেশে ব্যয় করতে হয়। কিন্তু এখন তার আর প্রয়োজন হবে না।

হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন সেবা নেবে ৫ থেকে ৮ হাজার রোগী। তাদের জন্য মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে ৩০০ চিকিত্কসহ মোট ১ হাজার ৫০০ জনবল নিয়োগ করা হচ্ছে। রেফার্ড-ভিত্তিক এই হাসপাতালে শুরু হয়েছে নিয়োগ কার্যক্রম। এরই মধ্যে ৪৬ জন চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তাকে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন আরো ১৪০ জন। উন্নত চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি উন্নত গবেষণা ও প্রশিক্ষণের দিগন্ত প্রসারিত হবে।

বোনম্যারো, কিডনি ও লিভার ট্রান্সপ্লান্টের সুবিধা থাকবে এই হাসপাতালে। এ লক্ষ্যে ৮০ জন চিকিৎসক ৩০ জন নার্স ও ১০ জন কর্মকর্তার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬১০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। হাসপাতালটির কার্যক্রম চলবে ছয়টি বিশেষায়িত সেন্টারের মাধ্যমে। কার্যক্রম চালু হলে এসব সেন্টারে দুই বছরের জন্য নিয়োজিত থাকবেন ছয় জন কোরিয়ান ইঞ্জিনিয়ার ও ৫০ জন কোরিয়ান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। এদেশীয় জনবলকে প্রশিক্ষিত করতে তারা ভূমিকা রাখবেন। এছাড়া সেবা খাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের দেশীয় জনশক্তিকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে এই হাসপাতালে নিয়োগ করা যায় কি না সে বিষয়েও পরিকল্পনা চলছে।

বিশেষায়িত সব ধরনের সেবা নিয়ে বাংলাদেশে এটিই প্রথম সেন্টার-ভিত্তিক হাসপাতাল। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের অর্থায়নে হাসপাতালটির দুটি বেসমেন্টসহ ১৩তলা ভবনে থাকছে বিশ্বমানের সব ধরনের সেবা কার্যক্রম। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে থাকছে ১৪টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, ১০০ শয্যার আইসিইউ, জরুরি বিভাগে থাকছে ১০০টি শয্যা, ভিভিআইপি কেবিন ছয়টি, ভিআইপি কেবিন ২২টি এবং ডিলাক্স শয্যা থাকছে ২৫টি। সেন্টার-ভিত্তিক প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থাপন করা হচ্ছে আটটি করে শয্যা। গুণগতমান বজায় রাখতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফার্নিচার ও সরঞ্জাম এনে হাসপাতালে স্থাপনও করা হয়েছে।

হাসপাতালটিতে থাকছে নিউম্যাটিক টিউব যার মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দেশিত বিভাগে চলে যাবে। নবনির্মিত হাসপাতাল ভবনের প্রথম পর্যায়ে থাকবে- স্পেশালাইজড অটিজম সেন্টারসহ মেটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল কেয়ার সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি ও গ্যাস্ট্রোঅ্যান্টারোলজি সেন্টার, কার্ডিও ও সেরিব্রো ভাস্কুলার সেন্টার এবং কিডনি সেন্টার।

দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকবে—রেসপিরেটরি মেডিসিন সেন্টার, জেনারেল সার্জারি সেন্টার, অপথালমোলজি, ডেন্টিস্ট্রি, ডার্মাটোলজি সেন্টার এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন বা রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার দিয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা: যা ৪০ বছর মেয়াদি। তবে এর প্রথম ১৫ বছর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে না। তারপর থেকে ০.১ শতাংশ সুদে এই ঋণ শোধ করতে শুরু করবে সরকার। হাসপাতালটির কার্যক্রম চালু হলে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমানো রোগীদের সংখ্যা অনেকাংশেই কমে আসবে বলে মনে করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকগণ।