• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

শাবান মাসের মর্যাদাপূর্ণ তিন ঘটনা

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২৩  

হিজরি বছরের অষ্টম মাস ‘শাবান’। এটি নফল ইবাদত-বন্দেগির মাস। বিশেষ তিনটি ঘটনার কারণে মাসটি প্রসিদ্ধ। শাবান মাসে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যান্য মাসের তুলনায় অধিক আমল করতেন। এ মাসের প্রসিদ্ধ তিনটি ঘটনা ও নবিজির আমল কী ছিল?

শাবান মাসের বিশেষ ঘটনা

ইসলামের ইতিহাসে শাবান মাসে বিশেষ তিনটি ঘটনা ঘটে, যা ছিল ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য বিশেষ মর্যাদা ও আকাঙ্ক্ষার বিষয়। তাহলো-

১. কেবলা পরিবর্তন

‘কেবলা পরিবর্তন’ ইসলামের ইতিহাসের সেরা ঘটনা। মদিনায় হিজরতের ১৬ মাস পরের এবং বদরের যুদ্ধের মাত্র দুই মাস আগের ঘটনা এটি। আকাঙ্ক্ষিত বরকতময় মূহূর্তটি ছিল- দ্বিতীয় হিজরি সনের শাবান মাস। মদিনা থেকে একটু দূরের একটি মসজিদে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের নিয়ে বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে জোহরের নামাজ আদায় করছিলেন । নবিজি নামাজে থাকাকালীন সময়ে আল্লাহ তাআলা কোরআনের আয়াত নাজিল করে কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِى السَّمَاءِ، فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا، فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ المَسْجِدِ الحَرَامِ

‘নিশ্চয়ই আমি তোমাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব অবশ্যই আমি তোমাকে সেই কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব, যাকে তুমি পছন্দ করো। এখন তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ করো এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকেই মুখ করো।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৪৪)

এ কারণেই শাবান মাস একদিকে যেমন মুসলিম স্বাতন্ত্র্য ও ইসলামি ঐক্যের মাস, অন্যদিকে তেমনি কাবা শরিফ কেন্দ্রিক মুসলিম জাতীয়তা ও ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত হওয়ার মাস।

যে মসজিদটিতে এ ঘটনা ঘটেছিল, সেটি হলো- ‘মসজিদে কিবলাতাইন’। হজ ও ওমরা পালনকারীরা আজও সে মসজিদ জেয়ারত করেন। নামাজ পড়নে। মসজিদটির দুইটি মেহরাব বিপরীতমুখী।

২. নবিজির প্রতি দরুদ পড়ার নির্দেশ

হজরত মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠের নির্দেশ দেওয়ার অসাধারণ আয়াতটি এ শাবান মাসেই অবতীর্ণ হয়। নবিজির প্রতি অগাধ ভক্তি-শ্রদ্ধা, প্রেম-ভালোবাসা দেখানোর মাসও এটি। এ মাসেই নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবচেয়ে বেশি নফল ইবাদত-বন্দেগি করতেন। আল্লাহ তাআলা এ মাসেই নাজিল করেন-

اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা নবীজির প্রতি পরিপূর্ণ রহমত নাজিল করেন, ফেরেশতারা নবীজির জন্য রহমত কামনা করেন; হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ পাঠ করো এবং যথাযথভাবে সালাম পেশ করো।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৫৬)

৩. রমজানের রোজার পালনের নির্দেশ

মদিনায় দ্বিতীয় হিজরির ১০ শাবান মুমিন মুসলমানের ওপর রমজানের রোজা ফরজ হয়। আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন-

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِىٓ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْءَانُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰى وَالْفُرْقَانِ ۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلٰى مَا هَدٰىكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

‘রমজান মাস, এ মাসেই নাজিল করা হয়েছে কুরআন। মানুষের জন্য হেদায়েত, সৎপথের সুস্পষ্ট নিদর্শন এবং হক ও বাতিলের পার্থক্যকারী। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে রোজা পালন করে। তবে কেউ রোগাক্রান্ত হলে অথবা সফরে থাকলে এ সংখ্যা অন্য সময় পূরণ করবে। আল্লাহ চান তোমাদের জন্য যা সহজ তা, আর তিনি চান না তোমাদের জন্য যা কষ্টকর তা, যেন তোমরা সংখ্যা পূর্ণ করো এবং আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো, তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার জন্য এবং যেন তোমরা শুকরিয়া আদায় করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)

এরপর থেকেই মুসলিম উম্মাহর ওপর পুরো রমজান মাস রোজ রাখা ফরজ হয়ে যায়। সে থেকে মুমিন মুসলমান রমজানে মাসব্যাপী রোজা পালন করে আসছেন।

সুতরাং বিশেষ তিনটি ফজিলতপূর্ণ ঘটনার মাস শাবান। এর মধ্যে একটি সর্বোত্তম আমল। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি অগাধ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও প্রেম-ভালোবাসা।

এ মাসের নফল ইবাদত নামাজ ও রোজা সুন্নতের অনুশীলনের অন্যতম মাধ্যম। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা পাওয়ার সেরা মাস। হাদিসে পাকে নবিজি বলেছেন-

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছেন, ‘হে ছেলে! যদি সম্ভব হয তবে এভাবে সকাল-সন্ধ্যা অতিবাহিত করো, যেন কারও প্রতি তোমার অন্তরে হিংসা না থাকে; তবে তাই করো। এরপর বলেন, ‘এটাই আমার সুন্নত আদর্শ- যে ব্যক্তি আমার সুন্নত অনুসরণ করল, সে প্রকৃতপক্ষে আমাকে ভালোবাসলো; আর যে আমাকে ভালোবাসলো সে আমার সঙ্গেই জান্নাতে থাকবে।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

শাবান মাসজুড়ে নবিজি পড়তেন-

اَللَّهُمَّ بَارَكْ لَنَا فِىْ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَان

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজানে পৌঁছে দিন।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শাবান মাসজুড়ে নফল ইবাদত-বন্দেগি ও রোজা পালনের পাশাপাশি নবিজির প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।