• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী

মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকে মুক্ত থাকার আমল

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সুরা ইয়াসিন কোরআনের রূহ বা হৃৎপিণ্ড। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের কল্যাণ পাওয়ার আশায় সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে তার জন্য রয়েছে মাগফিরাত বা ক্ষমা। অভাব-অনটন, গুনাহ ও মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকেও মিলবে মুক্তি। হাদিসের দিকনির্দেশনা থেকে এসব প্রমাণিত আমল।

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক বস্তুরই একটা হৃদয় থাকে আর কোরআনের হৃদয় হল সুরা ইয়াসিন। যে ব্যক্তি সুরা ইয়াসিন একবার পড়বে, মহান আল্লাহ তাকে দশবার পুরো কোরআন পড়ার সওয়াব দান করবেন।’ (তিরমিজি)

সুরা ইয়াসিন বুঝে পড়ায় রয়েছে অনেক উপকারিতা। এ সুরা মানুষকে পরকালের প্রস্তুতির দিকে আহ্বান করে। আর পরকালের ভীতিই মানুষকে সৎকর্মের দিকে উদ্বুদ্ধ করে এবং অবৈধ বাসনা ও হারাম কাজ থেকে বিরত রাখে।

গুনাহ মাফের মাধ্যম সুরা ইয়াসিন
প্রতিদিনের কাজ-কর্মে মানুষ অনেক ভুল-ত্রুটি করে থাকে। আর এসব ভুল-ত্রুটি করা গুনাহের কাজ। গুনাহ মানুষকে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করে। আর জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হলো আল্লাহর অনুগ্রহ ও নেক আমল করা। হাদিসে এসেছে-
১. হজরত ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে আল্লাহ তাআলা তার বিগত জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বায়হাকি,আবু দাউদ)
২. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রাতে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, আল্লাহ তার ওই রাতের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ (দারেমি)

অভাবমুক্ত থাকার আমল সুরা ইয়াসিন
মানুষের নানামুখী অভাব-অনটন থাকে। শুধু পরিশ্রমে কোনো মানুষের অভাব শেষ হয় না। প্রয়োজন হয় আল্লাহর সাহায্য ও অনুগ্রহের। সুরা ইয়াসিনের আমল অভাবি ব্যক্তির জন্য আল্লাহর মহা অনুগ্রহ। এ সুরার আমলে দুনিয়ার প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়। হাদিসে এসেছে-
১. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি অভাব-অনটনের সময় সুরা ইয়াসিন পাঠ করে তাহলে তার অভাব দূর হয়, সংসারে শান্তি আসে এবং রিজিকে বরকত হয় ‘ (মাজহারি)
২. হজরত আতা বিন আবি রাবাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন আমি শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিনের বেলায় সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, তার সব হাজত (প্রয়োজন) পূর্ণ করা হবে।’ (দারেমি)
৩. হজরত ইয়াহইয়া ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে-স্বস্তিতে থাকবে। যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে।’ (মাজহারি)

মৃত্যুর যন্ত্রণা মুক্ত থাকার মাধ্যম সুরা ইয়াসিন
তাফসিরে জালালাইনের হাশিয়ায় এসেছে, ‘যদি কোনো মুসলমানের মৃত্যুর সময় হয়, আর সে সময় তার পাশে কেউ সুরা ইয়াসিন পাঠ করে, তবে বেহেশত থেকে রেদওয়ান ফেরেশতা জান্নাতের সুসংবাদ না দেওয়া পর্যন্ত রূহ কবজকারী ফেরেশতা (মালাকুল মাউত) ওই ব্যক্তির রূহ কবজ করেন না। রূহ কবজের সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তি অবস্থান হয় রাইয়্যান নামক জান্নাতে। হাদিসে পাকে এসেছে-
১. হজরত আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুশয্যা ব্যক্তির কাছে সুরা ইয়াসিন পাঠ করলে তার মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ হয়ে যায়। (মাজহারি)
২. হজরত ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এটা (সুরা ইয়াসিন) তোমাদের মুমূর্ষু (মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে) ব্যক্তিদের কাছে পাঠ কর।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)

মুমিন মুসলমানের ঘরে ঘরে সুরা ইয়াসিনের নিয়মিত অধ্যয়ন, তেলাওয়াত ও আমল খুবই জরুরি। সুরাটি ‘সুরা ইয়াসিন’ নামে প্রসিদ্ধ হলেও এর রয়েছে আরও কয়েকটি নাম। যথাক্রমে তা হলো, ‘সুরা আজিমা’, ‘সুরা মুদাফিয়া’, ‘সুরা কাজিয়া’। এ ছাড়া আসমানি গ্রন্থ তাওরাতে এ সুরাটিকে ‘মুয়িম্মাহ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত প্রতিদিন সকালে অন্তত একবার এ সুরাটি তেলাওয়াত করা। কেননা এ সুরার তেলাওয়াতকারীকে ইহকাল ও পরকালে ব্যাপক কল্যাণ ও শান্তি দান করা হবে।

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘এ সুরা কেয়ামতের দিন অধিক সংখ্যক মানুষের জন্য সুপারিশকারী হবে আর আল্লাহ তাআলা তা অবশ্যই কবুল করবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআনের এ গুরুত্বপূর্ণ সুরাটির নিয়মিত তেলাওয়াত ও অধ্যয়ন করে সে আলোকে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। আমিন।