• বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান তিন দেশ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী লাইলাতুল কদর মানবজাতির অত্যন্ত বরকত ও পুণ্যময় রজনি শবে কদর রজনিতে দেশ ও মুসলিম জাহানের কল্যাণ কামনা প্রধানমন্ত্রীর সেবা দিলে ভবিষ্যতে ভোট নিয়ে চিন্তা থাকবে না জনপ্রতিনিধিদের জনসেবায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পারলে ভোটের চিন্তা থাকবে না দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপের ফলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রেসিডেন্টকে শেখ হাসিনার চিঠি

স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২১  

বয়স বাড়লে শরীরে বেড়ে যায় রোগের সংখ্যা। চিকিৎসকদের ভাষ্য, ৪৫ পার হলেই নানা রকম শারীরিক জটিলতা শুরু হয়। সে হিসেবে বয়স যত বাড়ে, রোগ বৃদ্ধির পরিমাণও তত বাড়ে।

সাধারণত সবার যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম হলো ব্লাড প্রেসার, ব্লাড সুগার, চোখের বিভিন্ন সমস্যা ইত্যাদি। এই সব কিছুর মধ্যে আরও একটি রোগ আক্রমণ করে বসতে পারে। তা হল ব্রেন স্ট্রোক। সঠিক সময়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নিলে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কী কী কারণে হতে পারে ব্রেন স্ট্রোক? সম্পূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো।

ব্রেন স্ট্রোক কী?
ব্রেনে যখন রক্ত সরবরাহ আচমকা বন্ধ হয়ে যায় অথবা যখন রক্তক্ষরণ শুরু হয় তখন সেই পরিস্থিতিকে ব্রেন স্ট্রোক বলা হয়। রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেলে ব্রেনের কোষগুলোতে অক্সিজেনের মাত্রা এক ধাক্কায় কমে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে কোষগুলোর মৃত্যু হয়। ব্রেন স্ট্রোকের ক্ষেত্রে অতি দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। যত দ্রুত চিকিৎসা করা হবে, তত বেশি রোগীর ব্রেনে ক্ষতির আশঙ্কা কমবে। এমনকি, ব্রেন স্ট্রোকের ফলে শরীরের কোনো একটি অঙ্গ সঠিক ভাবে না-ও কাজ করতে পারে। সারা জীবনের মতো পক্ষাঘাতে ভুগতে পারেন রোগী।
 
ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি কীভাবে বাড়ে?
যেহেতু ব্রেনে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যার জেরে এবং অক্সিজেনের অভাবের কারণে ব্রেন স্ট্রোক হয় তাই এই রোগের ক্ষেত্রে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ একাধিক কারণ রয়েছে ব্রেন স্ট্রোকের পেছনে। প্রথমত, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ ব্রেন স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। এ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের জন্যও অনেকে সমস্যায় পড়েন।

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। এই বিষয়ে একটি গবেষণা করেছে জন হপকিন্স মেডিসিন। সেই গবেষণায় উঠে এসেছে গর্ভনিরোধক ওষুধ খেলেও তা ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় এবং সেই গবেষণায় উঠে এসেছে যে পুরুষদের থেকে মহিলাদের মধ্যে অনেক বেশি ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে।

গবেষকদের দাবি, গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ার পর তা ওয়েস্ট্রোজেন হরমোনের উপর প্রভাব ফেলে যার কারণে নারীদের ব্রেন স্ট্রোক হতে পারে। তবে এটাই শুধু একমাত্র কারণ নয়, ব্রেন স্ট্রোকের জন্য আরও বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। সেগুলোতেও নজর রাখা যাক এক এক করে!

ধূমপান

ব্রেন স্ট্রোকের জন্য অন্যতম বড় কারণ ধূমপান। ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি সংবাদপত্রের রিপোর্টে প্রকাশ ভারতে মোট যে সংখ্যক মানুষের বয়স ১৮ বছরের বেশি, তার মধ্যে ৩৪.৬ শতাংশ মানুষ ধূমপান করেন। দেখা গিয়েছে যারা ধূমপান করেন তাদের মধ্যে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি।

তুলনামূলকভাবে যাঁরা ধূমপান করেন না তাদের ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। শুধু ব্রেন স্ট্রোক নয়, ধূমপানের ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং ফুসফুসের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন ধূমপায়ী ব্যক্তি। শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।

জন হপকিন্স মেডিসিনের গবেষণায় যে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে তাতে বলা হয়েছে ধূমপানের ফলে কোনো ব্যক্তির ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

শরীরচর্চার অভাব

শরীরচর্চা কমিয়ে দিতে পারে ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা। দৈনিক শরী চর্চা যে শুধু অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে এমনটা নয় বা স্থুলকায় চেহারা থেকে মুক্তি দেয় এমনটা নয় ব্রেন স্ট্রোকের হাত থেকেও রক্ষা করে। এমনকি ব্রেন স্ট্রোক ছাড়াও আরও বেশকিছু জটিল রোগ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।

তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দৈনিক শরীরচর্চা করা প্রয়োজন। দৈনিক শরীরচর্চা, সুষম আহার এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বর্জন শরীরের অনেক রোগ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় মেনে শরীরচর্চা করা দরকার।

অতিরিক্ত মদপান

অতিরিক্ত মদ্যপান ব্রেন স্ট্রোকের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিষয়ে তাদের যুক্তি, অতিরিক্ত মদ্যপান করলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। আর রক্তচাপ বেড়ে গেলে তা ব্রেন স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।

এই বিষয়ে লন্ডনের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভস জানিয়েছে যে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণ অ্যালকোহল গ্রহণ করাকে বলা হয় বিঞ্জ ডিঙ্কিং, যা ব্রেন স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। মহিলাদের ক্ষেত্রে বলা যায় যে তারা যদি খুব অল্প সময়ের মধ্যে ৬ ইউনিট অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাহলে তা বিঞ্জ ড্রিঙ্কিংয়ের মধ্যে গণ্য হবে। অন্যদিকে, পুরুষদের ক্ষেত্রে ৮ ইউনিট অ্যালকোহল গ্রহণ করাকে বিঞ্জ ড্রিঙ্কিং বলে।

স্ট্রোকের অন্য কারণগুলো কী কী?

এই কারণগুলির পাশাপাশি স্ট্রোকের জন্য আরও বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে, উচ্চ কোলেস্টেরল, মধুমেহসহ একাধিক বিষয়। এর সঙ্গে দুশ্চিন্তার কারণেও ব্রেন স্ট্রোক হতে পারে। পরিবারের যদি কারও ব্রেন স্ট্রোক হয়ে থাকে তাহলে উত্তরসূরিদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

চিকিৎসা

কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। আক্রান্ত রোগী যত দ্রুত চিকিৎসা পাবেন তত ক্ষতির পরিমাণ কমবে। এমনকি মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম কয়েক ঘণ্টা অত্যন্ত জরুরি। কারণ যত দ্রুত ব্রেনে রক্ত সঞ্চালন শুরু করা যাবে তত বেশি ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করে তোলার জন্য অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হয়। কারণ, মস্তিস্কের ভেতরে রক্তক্ষরণ হলে তা সেখানে জমে যায়। যার ফলে অস্ত্রোপচার করে বের করে আনতে হয়।

ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর কী কী শারীরিক পরীক্ষা করা প্রয়োজন?

ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করতে হয়। ওই পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হয় রোগীর শরীরের অবস্থা এবং ব্রেনের অবস্থা।

সবার প্রথমে যে পরীক্ষাটি করা হয় তা হল কম্পিউটারইজড টোমোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যান।

দ্বিতীয়ত, রোগীর ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং বা এমআরআই করা হয়।

তৃতীয়ত, ক্যারোটিড আলট্রাসাউন্ড করার প্রয়োজন পড়ে।

চতুর্থত, সেরিব্রাল অ্যাঞ্জিওগ্রাম করা হয়।

এ ছাড়া বেশ কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা, ইকোকার্ডিওগ্রামসহ একাধিক পরীক্ষা করার প্রয়োজন পড়ে। সঠিক চিকিৎসার জন্য এই পরীক্ষাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।