• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী

জিডিপি বাড়াবে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২২  

স্বপ্নের পদ্মা সেতু শুধু দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল বদলেই দেবে না, বদলে দেবে সেখানের অর্থনীতির গতি। সেতু ঘিরে অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইকোনমিক জোন), পর্যটন, ইকোপার্কের পরিকল্পনা হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে হিমায়িত মৎস্য ও পাটশিল্পের নতুন সম্ভাবনা। পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসার অপেক্ষায়। পদ্মা সেতুর কারণে দেশে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরো সহজ হবে।

পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেতু বিভাগ বলেছে, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়বে। পদ্মা সেতুর মূল্যায়ন নিয়ে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এডিবি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জিডিপির একই প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়। এই সেতু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়াবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পদ্মা সেতুর কারণে জিডিপিতে অতিরিক্ত ১০ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে, যা সেতুটির ব্যয়ের প্রায় তিনগুণ বেশি।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের—খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া। বরিশাল বিভাগের—বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠি এবং ঢাকা বিভাগের—গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী। এর বাইরে খুলনা বিভাগের মেহেরপুর ও চুয়াডাঙাও সেতুর সুবিধার আওতায় চলে আসবে বলে মনে করছে সরকার।

দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হিমায়িত মৎস্য ও পাটশিল্প, যার অধিকাংশ খুলনা থেকে রপ্তানির মাধ্যমে আয় হয়ে থাকে। পদ্মা সেতু হলে এই আয় আরো বাড়বে। বড় শিল্পকারখানা গড়ে তোলার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা খুলনায় রয়েছে। শহর থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব মাত্র ৪২ কিলোমিটার। সড়কপথে পায়রা সমুদ্রবন্দরও বেশি দূরে নয়।

অর্থনৈতিক সুফলের পাশাপাশি আরো কিছু সামাজিক বিষয়ও আছে। বিনিয়োগের দিক থেকে দক্ষিণাঞ্চলের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের সময় ও দূরত্ব। পদ্মা সেতু হলে ঢাকা থেকে দক্ষিণের জেলাগুলোয় যেতে বাসের ক্ষেত্রে গড়ে ২ ঘণ্টা ও ট্রাকের ক্ষেত্রে ১০ ঘণ্টা সময় সাশ্রয় করবে।

পিরোজপুরের পেয়ারা, আমড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের উৎপাদিত শাকসবজি, মাছ, মুরগি, দুধ, ডিম এখন সরাসরি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাবে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। মহাসড়কের আশপাশে বড় বড় শিল্পগোষ্ঠী কলকারখানা করতে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, মাগুরা, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, খুলনা, যশোরসহ বিভিন্ন জেলায় ইতোমধ্যে জমি কিনে রেখেছে। পর্যটন খাতও অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে। সুন্দরবন, কুয়াকাটাসহ অন্যান্য পর্যটন এলাকায় মানুষের আনাগোনা বাড়বে।

২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কয়েকটি সমীক্ষা হয়। সমীক্ষাগুলো করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং সেতু বিভাগের জন্য সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)।

এডিবির সমীক্ষায় দেখা যায়, উদ্বোধনের বছর সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করবে প্রায় ২৪ হাজার যানবাহন। তার মধ্যে বাস চলবে ৮ হাজার ২৩৮টি, ট্রাক ১০ হাজার ২৪৪টি, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কার চলবে ৫ হাজারের বেশি।

পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়বে। ২০২৫ সালে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে দিনে যানবাহন চলাচল বেড়ে দাঁড়াবে ২৭ হাজার ৮০০টি। ২০৩০ সালে হবে ৩৬ হাজার ৭৮৫, ২০৪০ সালে দিনে যানবাহন চলাচল বেড়ে দাঁড়াবে ৫১ হাজার ৮০৭টি। ২০৫০ সালে প্রায় ৬৭ হাজার যানবাহন প্রতিদিন চলবে পদ্মা সেতু দিয়ে। এর সুফল পাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ।

পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল যত বাড়বে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ততই বাড়বে। পদ্মা সেতু নির্মাণ করে লাভ কী হবে, তা নিয়ে ২০০৯ সালে আলাদা সমীক্ষা করে এডিবি ও জাইকা। এতে দেখা যায়, পদ্মা সেতুতে বিনিয়োগের অর্থনৈতিক প্রভাব বা ইকোনমিক রেট অব রিটার্ন (ইআইআরআর) দাঁড়াবে বছরে ১৮ থেকে ২২ শতাংশ।