• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী

‘চোখ নাই, থাকলে পাকা ঘরটা কেমন সুন্দর দেখতাম’

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২৩  

‘চোখ নাই। থাকলে পাকা ঘরটা কেমন সুন্দর  দেখতাম। অহন কব্বরে গিয়াও শান্তিতে ঘুমাইতে পারমু। প্রধানমন্ত্রী আমারে একটা পাকা ঘর দিছেন। আমি অন্ধ মানুষ। জমি পাইলাম লগে ঘরও পাইলাম। শেষ বয়সে আমি সবই পাইলাম। আমিন।’ এভাবেই কৃতজ্ঞা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করছিলেন অন্ধ ঝালমুড়ি বিক্রেতা আজগর আলী। ৬৮ বছর বয়েসী আজগর আলী আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী পৌরসভার দাইরাদি গ্রামের বাসিন্দা।  

জানা গেছে, আজগর আলী (৬৮) একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। স্বাধীনতার আগে পরে তার দু’টি চোখ অসুখে নষ্ট হয়ে যায়। আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী পৌরসভার দাইরাদী গ্রামের বাসিন্দা অন্ধ আজগর আলীকে সবাই ঝালমুড়ি বিক্রেতা হিসেবেই চিনেন। ভিক্ষা না করে ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন বলে আশপাশের দশ গ্রামের মানুষ তাকে সমীহ করতো।প্রতিবন্ধী হয়েও জীবনে কারো কাছে হাত পাতেননি। ভিক্ষা না করে কাজ করেছেন। ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতেন। দীর্ঘ ৫০ বছর স্ত্রী খুরশিদা বেগমের কাধে হাত রেখে হাটে বাজারে ঘুরে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করে অভাবের সংসারের চাকা ঘুরিয়েছেন। রোদ বৃষ্টি ঝড়ঝঞ্জা মাথায় নিয়েই এক সময় ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন।

জীবন যুদ্ধে কখনো হার মানেনি অন্ধ আজগর আলী। জীবন সায়াহ্নে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঝালমুড়ি বিক্রি করতে পারেন না। এক বছর ধরে বিছানায় ছটফট করে মরেন। মেয়ের কাছে ঠাঁই মিলে ছিল। দু’বেলা খেতে পান। মেয়ে রত্ন বৃদ্ধ বাবা-মাকে ঠাঁই দিয়েছেন স্বামীর বাড়িতে। অনেক গঞ্জনা সহ্য করে পুরনো টিন দিয়ে কোনোমতে একটি ছোট একচালা টিনের বানিয়ে দিয়েছিল। বুড়োবুড়ি কোনোমতে একটি চৌকি পেতে সেখানে রাত কাটাতেন। মেয়ের আশ্রয়েই দিন কাটাতো আজগর আলী।

সেই আজগর আলী জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজের নির্দেশে আড়াইহাজারের ইউএনও অফিস বিষয়টি আমলে নিয়ে আজগর আলীকে প্রধানমন্ত্রীর একটি উপহারের ঘর বরাদ্ধ দেয়। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে অন্ধ আজগর আলী খুবই খুশি। তার জীবন সার্থক বলে তিনি মনে করেন।

জানা গেছে, আড়াইহাজার উপজেলায় মোট তালিকাভুক্ত ভূমিহীন পরিবার ছিল ৩৪৮টি। এর মধ্যে বেশ কিছু পরিবার বসবাসে অনিচ্ছুক থাকায় পুনরায় যাচাই-বাছাই অন্তে হালনাগাদকৃত প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় দুস্থ পরিবারের সংখ্যা দাড়ায় ২৯৬। এর মধ্যে ২৪৪ টি পরিবার ইতোমধ্যে ১ম পর্যায়ে ৩১ টি, ২য় পর্যায়ে ২৮টি এবং ৩য় ধাপে ১ম পর্যায়ে  ৫০টি ও ৩য় ধাপের ৪র্থ পর্যায়ে ১৩৫টি পুনর্বাসিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৫২টি পরিবারকে পুনর্বাসনের নিমিত্তে ৪র্থ ধাপের বরাদ্দ পাওয়া গেছে এবং ব্রাহ্মন্দী ও  রামচন্দ্রদী আশ্রয়ন প্রকল্পে গৃহ নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উপজেলার হাইজাদী, রামচন্দ্রদী, সাদারদিয়া, কামরানির চর, খাসেরকান্দি,ব্রাক্ষন্দী, ঝাউগড়া, শ্রীনিবাসী, চৈতনকান্দা ও সাতগ্রামে এই সব ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া পবিত্র দায়িত্ব এই আশ্রয়ণ প্রকল্প। এই প্রকল্পটির কাজ করে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অসহায়, দরিদ্রদের পাশে দাড়িয়ে যে অনুভূতি তৈরী হয় তা অসাধারণ। সংসদ সদস্য আজহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু  ও জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ  মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে  আড়াইহাজার উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) পান্না আক্তার বলেন, আড়াইহাজার উপজেলায় আশ্রয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর  নির্দেশনা এবং কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত নীতিমালা যথাযথ ভাবে অনুসরণ পূর্বক বাস্তবায়িত হচ্ছে। মোট ভূমিহীন ২৯৬ টি পরিবারের মধ্যে ২৪৪ টি পরিবারকে আমরা ইতোমধ্যে পুনর্বাসিত করা হয়েছে।  এই উপজেলায় বিভিন্ন ধাপে আনুমানিক ২১.৭৮ কোটি টাকা মূল্যের ৯.৯০৫০ একর খাস জমি অবৈধ দখলদার হতে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রকৃত ভূমিহীনরাই প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্ধ পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আড়াইহাজারবাসী কৃতজ্ঞ।

সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, আশা করছি, দ্রুতই আড়াইহাজার উপজেলা ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করা হবে। ‘একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমরা সর্বদা সচেষ্ট রয়েছি।