পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের অহংকারে আর একটি পালক
বরিশাল প্রতিবেদন
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২২
দেশীয় এবং বহিঃবিশ্বের চক্রান্তকে পরাস্ত করে উদ্বোধন হতে চলেছে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম খরস্রোতা (প্রথম আমাজন) নদী পদ্মার ওপর নির্মিত পদ্মা সেতু। এই সেতু ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ বিদেশি গণমাধ্যমে একটি আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে এই আলোচনার বিভিন্ন কারণ থাকলেও যে কারণটি সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো, এটি বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মিত প্রথম সেতু।
এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ৭৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। ২০১২ সালে এই সেতুটি নির্মাণের জন্য বিশ্ব ব্যাংক আর্থিক সহায়তা দিতে অস্বীকার করলে বাংলাদেশের জনগণ সেতু নির্মাণের আশা ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বে নির্মিত এই সেতু শুধুমাত্র বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবতা প্রদান করেননি, পাশাপাশি অবাক করেছেন বিদেশের অনেক প্রতিনিধিদের।
তবে ধারাবাহিক গতিপ্রকৃতির বিপরীতে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার ক্ষমতা এই মাটির মানুষের প্রথম নয়। প্রাচীন কাল থেকে দেশভাগের আগে পর্যন্ত নানা বংশীয় রাজারা এই মাটিকে শাসন করলেও কখনই রাজার ধর্ম প্রজার ধর্ম হয়নি, এমনকি ইংরেজরাও এই মাটিকে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের দখলে আনতে পারেনি ফলত এখানকার জনগণ সবসময় নিজেদের মতো করে জীবনধারণ করেছেন। আর এই বিপরীতে বেঁচে থাকার শক্তিকে পাথেয় করে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ফানুস উড়িয়ে স্বাধীনভূমি বাংলাদেশ অর্জন করেছিল এদেশের মানুষ। স্বাধীনতার পরও সমস্ত লাঞ্ছনার উত্তর দিতে ভোলেনি এই দেশ। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে দক্ষিণ এশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারের সভাপতিত্বে ওয়াশিংটন স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই বৈঠকের পর প্রভাবশালী দৈনিক বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এলেই ‘বাস্কেট কেস’ বলা শুরু করে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বাংলাদেশ নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টটির শিরোনামেই ছিল ‘বাংলাদেশ, বাস্কেট কেস নো মোর’। শুধু তাই নয় স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কোটায় নিজেদের নাম করে নিয়েছে। বিদেশিদের চোখে শুধুমাত্র ঋণ গ্রহণকারী দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপকে ঋণ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থান আজ কোথায়। আর এই ইতিহাসের পথ ধরেই খরস্রোতা নদীর গতিপথের প্রতিকূলকে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে গড়ে উঠেছে ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের পদ্মা সেতু।
আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় পদ্মা সেতু নিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে কোনো রকম বিরোধ রাখা উচিত নয়। আমি মনে করি ঢাকাকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব হবে অপরিসীম। আমরা জানি, পরিকাঠামোর ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বাংলাদেশের জাতীয় আয়ে বিশিরভাগ অবদান ঢাকার থাকে, তবে পদ্মা সেতুর মধ্যে দিয়ে ঢাকার সঙ্গে ২১টি জেলার যে সংযোগ গড়ে উঠলো নিঃসন্দেহে আগামী সময়ে এই জেলাগুলির স্থানীয় অর্থনীতির যে পরিবর্তন ঘটবে তাতে জাতীয় আয়ে এই জেলাগুলির অবদান বৃদ্ধি পাবে। মনে করা হচ্ছে এই সেতুর ফলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়বে এবং তার পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে এই প্রকল্প ।
তবে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ,জাতীয় উন্নয়নের যে দিকটি সব থেকে বেশি বিকশিত হবে ঢাকার সঙ্গে মোংলা বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এ বন্দর থেকে ঢাকায় পণ্য পরিবহণে সময় লাগবে মাত্র ৩ ঘণ্টা, যা আগে লাগত ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা। এখানে তাদের সময় বাঁচবে ৬ ঘণ্টা। আর মোংলা বন্দর থেকে সরাসরি চট্রগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহনে সময় লাগত ১৪ ঘণ্টা। সেতুর কারণে তা কমে এখন হবে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। এখানেও সময় বাঁচবে ৬ ঘণ্টা। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের সময় সাশ্রয়ী হবে ১২ ঘণ্টা, যা তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পুঁজি তো বটেই অর্থনৈতিকভাবে লাভবানও হবেন তারা।
এই যোগাযোগ ব্যবস্থা শুধু যে অর্থনৈতিক সংগতি ফিরিয়ে আনবে তা নয়, পরিবর্তন ঘটবে সামাজিক জীবন যাত্রায়। জলপথে ঢাকা থেকে আসা -যাওয়ার যে ভোগান্তি, তা থেকে মুক্তি দেবে জনসাধারণকে। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় মানুষের এতদিন ছিল তার থেকেও মুক্তিপাবে তারা। শুধু যে বাংলাদেশের বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ ঢাকায় যাওয়ার সুবিধা পাবে তাই নয়, ঢাকার বসবাসকারী মানুষও এর সুবিধাভোগ করবে। তবে পদ্মা সেতু যে দেশের অভ্যন্তরের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ সেটি নয়। এই সেতু ঢাকা -কলকাতা যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এই আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ চিকিৎসা এবং জামা-কাপড় কেনাকাটার জন্য আজ কলকাতামুখী। অন্যদিকে একথা বলার কোনো অপেক্ষা রাখেনা যে, আজ বাংলাদেশের উন্নয়ন কলকাতাসহ ভারতের বহুশ্রমিককে ঢাকামুখী করেছে। পদ্মা সেতু দুইদেশের মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ককে আরো দৃঢ়তা প্রদান করবে। পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে ঢাকা থেকে কলকাতা যেতে সময় লাগবে মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা। সুতরাং একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর বন্ধন আরো শক্ত করতে পদ্মা সেতুর ভূমিকা হবে অপরিসীম। আমি মনে করি, বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতার অর্থনীতি পদ্মা সেতুর জন্য অনেক লাভবান হবে। দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পর্ককে সুদৃঢ় করেন, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনকেও আরো এগিয়ে নিয়ে যায়। তার জন্য আজ আমরা রাঁধুনি,কস্তুরী, দুই পাড়সহ আরো অনেক এরকম রেস্তোরাঁর মাধ্যমে কলকাতায় বসে বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারি। এর পাশাপাশি দুদেশের মধ্যে পর্যটন শিল্পে বিরাট পরিবর্তন ঘটবে বলে আমার মনে হয়।
তবে একজন সাধারণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে আমি বলতে চাই, পদ্মা সেতু অর্থনৈতিক , সামাজিক, শিক্ষা, চিকিৎসা ক্ষেত্রে সুবিধা এনে দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক সহিংসতা কমাবে বলে আমার মনে হয়। সামাজিক সহিংসতার সঙ্গে অর্থনীতির একটি সম্পর্ক আছে। বাংলাদেশের আজও যে ধর্মীয় হিংসা দেখতে পাই আর একটি কারণ অর্থনৈতিক বৈষম্য। বাংলাদেশের সমস্তকিছু ঢাকা কেন্দ্রিক হাওয়ায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশের সাথে অর্থনৈতিক বৈষম্য গড়ে উঠেছে। ঢাকার বাইরে যুবকরা সেভাবে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে উঠতে পারেনি। আর এই বৈষম্যকে কাজে লাগিয়ে মৌলবাদীরা যুবকদের মনোজগতে জায়গা করে নিচ্ছে। এই ধারণা থেকে আমার মনে হয়, পদ্মা সেতুর ফলে পদ্মার এপারে মানুষের বিশেষ করে যদি যুবকদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরে আসে বা আনা যায় তাহলে দক্ষিণ অঞ্চলে ধর্মীয় বা সামাজিক হিংসা কম হবে বলে আমার মনে হয় এবং এটিই হবে পদ্মা সেতুর প্রধান তাৎপর্য।
- পিসিওএস থেকে মুক্তি পেতে নারীরা যা করবেন
- পাকা বেদানা খুঁজে কিনবেন যে কৌশলে
- ইফতারে রাখুন স্বাস্থ্যকর চিকেন স্যান্ডউইচ
- মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখছে এআই!
- শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালুর অপেক্ষা
- স্থলভাগে গ্যাস উত্তোলন কার্যক্রম, যুক্ত হচ্ছে তিন বিদেশী কোম্পানি
- পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- শিল্পে দ্রুত ইভিসি মিটার দেবে তিতাস
- শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার নির্দেশ
- অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে যত পরিকল্পনা
- বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার
- ফার্স্টলুকে পূর্বাভাস, গ্যাংস্টার রূপে আসছেন শাকিব খান
- থামছে না অপহরণ, মুক্তিপণ দিয়ে ঘরে ফিরলেন আরও ১০ জন
- দুস্থ নারীদের সরকারি চাল পাচার, ২ ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
- দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের খাবার
- সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে ভেসে আসছে বিকট শব্দ, সীমান্তে আতঙ্ক
- লিচু বাগানে মিললো ১৮ কেজি গাঁজা
- বিচারপতি ইনায়েতুর রহিমের মায়ের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
- মঠবাড়িয়ায় ৮‘শ ৯৬ টি সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে টিসিবি পণ্য বিক্রয়
- মাদারীপুরে সাজ্জাপ্রাপ্ত দুই আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
- বরিশালে রমজান উপলক্ষ্যে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমান ডিম বিক্রয়
- বরিশালে বিপুল পরিমান কারেন্ট জাল ও মাছ সহ আটক ৮০
- উজিরপুরে এক কেজি গাঁজাসহ মাদক সম্রাট গ্রেফতার
- কথা না শোনায় স্বামীকে নিয়ে পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা করেন রুনা
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৩ নির্দেশনা
- প্রধানমন্ত্রীর গাড়ীবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
- কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা
- কুড়িগ্রাম হবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে
- জাতিসংঘ বাংলাদেশে জলবায়ু কর্মকান্ডে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে
- বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক খালে, বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক বন্ধ
- পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে ধূমপান
- নতুন নতুন অপরাধ দমনে পুলিশকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
- মজুত করা ১০০ টন খেজুর এক সপ্তাহের মধ্যে খালাসের নির্দেশ
- এবার মসজিদের অর্থ আত্মসাৎ করলো বিএনপি নেতা
- বাজারে নজরদারি-মজুত ঠেকাতে ডিসিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- গাজার শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
- বরিশালে বিনোদন স্পটে অভিযান, কয়েক যুগল আটক পরে মুক্তি
- র্যাব সব সময় নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
- বরিশালে বেসরকারি হাসপাতালে-ক্লিনিকে অভিযান
- বিপিএলে বরিশালের শিরোপা জয়, আনন্দে ভাসছে নগরী
- নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জেলা টাস্কফোর্স সভা
- গৌরনদীতে দুই ফল ব্যবসায়ীকে জরিমানা
- এ বছর ফিতরার হার নির্ধারণ
- নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল রাখতে কাজ করতে হবে : বিভাগীয় কমিশনার
- বরিশালকে সর্বোচ্চ পেনশন স্কিমের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি
- প্রধানমন্ত্রীর সামনে উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রশংসায় ভাসছেন মেয়র
- ক্রীড়া জগতকে সমৃদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার অঙ্গিকার
- দুর্নীতির মামলায় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা জেলে