• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলে যুদ্ধটা করলো কে? প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের সংবর্ধনায় ভুটানের রাজার যোগদান বাংলাদেশ-ভুটান তিন সমঝোতা স্মারক সই ইফতার পার্টি না করে নিম্ন আয়ের মানুষকে সহযোগিতা করুন সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে বাংলাদেশ মিশনগুলোর ভূমিকা রাখার আহ্বান সমরাস্ত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস উপজেলা নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর জনগণের সঠিক প্রতিনিধিত্ব ছাড়া উন্নয়ন হয় না প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আধুনিক কারিগরি ও প্রযুক্তি সন্নিবেশ করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী প্রযুক্তি ব্যবহারে জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব স্বাস্থ্যখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে চায় ডব্লিউএইচও পুতিনকে অভিনন্দন জানালেন শেখ হাসিনা এ বছর ফিতরার হার নির্ধারণ ২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউতে জিএসপি সুবিধা পেতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পাশে আছি: প্রধানমন্ত্রী জনসমর্থন থাকায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব

‘আমাগো আর কষ্ট থাকব না’

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২২  

‘আমাগো বহুদিনের আশা ছিল পদ্মা সেতু হইব। এই সেতু হইল, আমাগো আর কষ্ট থাকব না। অসুস্থ হইলে দ্রুত ঢাকা যাইতে পারমু। আইজ পদ্মা সেতু উদ্বোধন হইল।

এত দিন পর আমাগো স্বপ্ন সত্যি হইল। ’

কথাগুলো বলছিলেন কৃষক রহিম জমাদ্দার (৬০)। তিনি মাদারীপুরের খোয়াজপুর এলাকা থেকে বাংলাবাজার ঘাটে এসেছেন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতে।

গতকাল শনিবার খুব ভোরেই বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় আসতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকসমাগম বাড়তে থাকে। একসময় তা রূপ নেয় জনসমুদ্রে। দুপুর আড়াইটার দিকে জনসভা শেষ হলে সবাই ফিরতে থাকে নিজ নিজ ঠিকানায়।

শরীয়তপুর থেকে জনসভায় আসা পিকআপ ভ্যানের চালক মো. হেলাল সরদার বলেন, ‘আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মালামাল নিয়া ঘাটে অপেক্ষা করতাম ফেরির জন্য। এখন আর সেই কষ্ট নাই। আমাগো দুর্ভোগে পড়তে হবে না। এই সেতু আমাগো জন্য আশীর্বাদ। ’

মাদারীপুরের শিবচর বাহাদুরপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল রশীদ আকন (৭৬) আসেন প্রধানমন্ত্রীর জনসভায়। তিনি বলেন, ‘একাত্তর সালে স্বাধীনতা ঘোষণার সময় যে আনন্দ পেয়েছি, আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধনে ঠিক সেই দিনের মতো আনন্দ পেয়েছি। আমরা আজ সত্যিই খুব খুশি। ’

জনসভায় নানা জন এসেছে নানা রূপে। সেতু উদ্বোধনের আনন্দে কেউ এসেছে ১২ হাত লম্বা নৌকা বানিয়ে ফুলে ফুলে সাজিয়ে, কেউ এসেছে মাথার চুল কেটে নৌকার আকৃতি বানিয়ে, কেউবা বাঘ সেজে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরের ভোগান্তির সমাপ্তি ঘটায় মানুষ যেন আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে।

ভৈরব থেকে জনসভায় এসেছেন সত্তরোর্ধ্ব শফিকুল ইসলাম। আট বছরের নাতি রবিন তাঁর সঙ্গী। দাদা-নাতি দুজনেরই মাথার চুল কেটে নৌকার মতো করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু শুধু দক্ষিণবঙ্গকে নয়, সারা দেশের অর্থনীতির মুক্তির সেতু। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া এই সেতু কারো পক্ষে করা সম্ভব ছিল না। ’

শাহাদাত হোসেন ঢাকা থেকে এসেছেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার সেজে। সেতু উদ্বোধনের আনন্দে অংশীদার হতে পেরে গর্বে ভরে উঠেছে তাঁর বুক। শাহাদাত বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের দেশকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে বিশ্ব দরবারে। উদ্বোধন উৎসবে যোগ দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। ’

খুলনা থেকে ফুলে ফুলে নৌকা সাজিয়ে জনসভাস্থলে এসেছেন দেলোয়ার হোসেন। সঙ্গে এনেছেন সাত বছরের কন্যা মিথিলাকে। দেলোয়ার বলেন, ‘এই  সেতু হওয়ায় ঢাকার সঙ্গে আমাদের দূরত্ব অনেক কমে গেল। ঘাটে ঘাটে ভোগান্তির দিন শেষ হলো। ’

পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলেন আলীবর্দী (৩০)। তাঁর বাড়ি ঝিনাইদহে। তবে আর দশজনের মতো করে নয়, তিনি এসেছিলেন একেবারেই ভিন্ন সাজে। এই সাজে মানুষের নজর কাড়েন আলীবর্দী। রং-তুলির আঁচড়ে পুরো শরীর রাঙিয়েছেন তিনি। তাতে ফুটে উঠেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পদ্মা সেতুর ছবি।

আলীবর্দী তাঁর এই ভিন্ন সাজ নিয়ে বলেন, ‘আমরা দক্ষিণবঙ্গের মানুষ রাজধানী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। রাজধানীতে যেতে ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগের শিকার হয়েছি। এই সেতু আমাদের অহংকার, এটা আমাদের আবেগ। ’