• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী

৪ আগস্ট ১৯৭১

গেরিলাদের সশস্ত্র আক্রমণ, বহু পাকসেনা ও রাজাকার নিহত

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২১  

১৯৭১ সালের ৪ আগস্ট দিনটি ছিল বুধবার। এদিন কুমিল্লার কোটেশ্বরে পাকবাহিনীর একটি ঘাঁটি আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। ৩ ঘন্টার এ যুদ্ধে ৫ জন পাকসেনা নিহত এবং ২ জন আহত হয়। রায়পুরের একটি পাক ক্যাম্পে মর্টারসহ হামলা চালিয়ে ২০ জন পাকসেনা ৭ জন রাজাকারকে হত্যা করে মুক্তিবাহিনী। পূর্বে ধ্বংসকৃত গোমতী নদীর হরিমঙ্গল ব্রীজসংলগ্ন স্থানে ৩ জন এবং শ্রীমন্তপুরে ২ জন পাকসেনা মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় নিহত হয়।

এদিন যুক্তরাষ্টের ওয়াশিংটন ডিসিতে পাকিস্তানী মিশন থেকে একযোগে কয়েকজন বাঙালি কূটনীতিক ও স্টাফ বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন। দলের নেতৃত্ব দেন জাতিসংঘে পাকিস্তানের উপ-প্রধান প্রতিনিধি সৈয়দ আনোয়ারুল করীম। দলে ছিলেন মিনিস্টার এনায়েত করিম, কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) শাহ এ এম এস কিবরিয়া, কাউন্সিলর (শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক) আবু রুশদ মতিনউদ্দিন, দ্বিতীয় সচিব (হিসাব বিভাগ) আতাউর রহমান চৌধুরী ও তৃতীয় সচিব (রাজনৈতিক) সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, সহকারী প্রশাসনিক অ্যাটাচি এ এম শরফুল আলম এবং সহকারী প্রেস অ্যাটাচি শেখ রুস্তম আলী ও আবদুর রাজ্জাক খান। এরা সকলে ‘বাংলাদেশ মিশন ওয়াশিংটন’ নামে একটি সংহতি গ্রুপ গঠন করে।

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর তন্মর গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ, আনার আলী, কলিমউদ্দিন, জামাল, লালমিয়া মাঝি, জমিরুদ্দিন ও জবান আলী ফকির শহিদ হন। রাজপুরে কুমিল্লা উত্তর সাব-সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের মর্টার আক্রমণে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়।

ফেনীর করেরহাটে মুক্তীবাহিনী ও পাকবাহিনীর মাঝে ৫ ঘন্টাব্যাপী যুদ্ধে ৩৭ জন পাকসেনা ও ৫০ জন রাজাকার নিহত হয়। খুলনার তেরখাদায় পাকবাহিনী স্থানীয় ৫৭ জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পালটি গ্রামে রাজাকাদের গুলিতে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন।

সিলেটের কালচেরা টি এস্টেটের কাছে আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ৫০ জন পাকসেনাকে হত্যা ও ২ জনকে আটক করে। এখান থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ১টি মেশিনগান, ১টি এলএমজি, ৬টি রাইফেল, ১৮ হাজার কার্তুজ ও বিপুল পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য আটক করে। আখাউড়ার কাছে সিংগেরঝিল এলাকায় মুক্তিবাহিনী ১২ জন পাকসেনাকে হত্যা করে ১২টি রাইফেল আটক করে।

গেরিলারা বিগত কয়েকদিনে কুমিল্লা জেলার প্রায় ২৫ বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র বিকল করার ফলে এদিন ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। ৭ নম্বর সেক্টরে পাকহানাদার বাহিনী নদীপথে তাহেরপুরের দিকে অগ্রসর হলে হাবিলদার শফিকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা অ্যামবুশ করে। এতে দু’পক্ষে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। সিলেটে মুক্তিবাহিনী বড়লেখা-বিয়ানীবাজার সড়কপথে চানগ্রাম বাজারের কাছে পাকবাহিনীর একটি টহলদার দলকে অ্যামবুশ করে। প্রায় এক ঘন্টা যুদ্ধের পর ৭ জন পাকসেনা পালিয়ে যায় এবং পাক ল্যান্সনায়েক মামুন আনসারী মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে।

জামালপুরে মুক্তিবাহিনী পাকহানাদার বাহিনীর শক্ত ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর বিপুল অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ ও জানমালের ক্ষতি হয়। ঢাকায় সামরিক শাসক ১৬২ নং সামরিক আদেশ জারি করে। এই আদেশ বলে নতুন করে ৬ নং সামরিক সেক্টর গঠন করা হয়।

গাইবান্ধায় খন্দকার আজিজুর রহমান ও রইসউদ্দীনকে যথাক্রমে আহ্বায়ক ও সম্পাদক করে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট শান্তিকমিটি পুনর্গঠিত হয়।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান টিভি সাক্ষাৎকারে বলেন, বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার করা হবে। তিনি বলেন, জাতীয় পরিষদে যেসব পূর্ব পাকিস্তানী সদস্যের আসন বহাল থাকবে এবং অপরাধ অথবা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের জন্য যারা আসন হারিয়েছেন, খুব শিঘ্রই তাদের নাম ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, একমাত্র সীমান্ত এলাকা ছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের ফলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ও উত্তেজনার সমাপ্তি ঘটেছে। 

জেনারেল ইয়াহিয়া বলেন, পূর্ব-পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না। তিনি বলেন সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা চালাচ্ছে বলে যে প্রচারণা চলছে তা জঘন্য মিথ্যা। সেখানে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র সংখ্যক সশস্ত্র বিদ্রোহী সরকারের সঙ্গে যুদ্ধ করে। তাদের উৎখাত করার জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। বিদ্রোহীদের দমন করতে অনেক সময় দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হয়। পৃথিবীতে এ রকম অনেক নজির আছে।