• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরিশাল প্রতিবেদন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী

পৃথিবীতে এত ধর্ম কেন?

বরিশাল প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

 

আল্লাহ যদি এক ও অদ্বিতীয় হয়ে থাকেন তবে এতগুলো ধর্ম অস্তিত্বে আসার কারণ কী? মূলত ধর্মের উৎস আল্লাহ তায়ালা। এরপর মানুষ আল্লাহ প্রদত্ত ধর্মে, ধর্মীয় বিধানাবলিতে সংযোজন-বিয়োজন আরম্ভ করে দেয়। উদ্দেশ্য ছিল, একে অন্যের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। কুরআন বলছে,

‘যারা কুফরি করেছে, আজ তারা তোমাদের দীনের ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় করো। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে।’ [আল-কুরআন, ৫ : ৩]

আল্লাহ তায়ালা কাউকে তাঁর সামনে আত্মসমর্পিত হতে বাধ্য করেন না। তিনি কেবল স্থাপন করেছেন সচ্ছ-সরল একটি পথ, এরপর মানুষকে দেখিয়ে দিয়েছেন দু’টি রাস্তা (একটি জান্নাতের, অপরটি জাহান্নামের)। আর প্রতিটি ব্যক্তিকেই দিয়েছেন নিরবচ্ছিন্ন স্বাধীনতা ভোগ করে তার নিজের পছন্দের পথ বেছে নেয়ার অধিকার। 

‘দীন গ্রহণের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় হিদায়েত স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে। অতএব, যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ইমান আনে, সে শক্ত রজ্জুকে আঁকরে ধরে, যা কখনও ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।
যারা ইমান এনেছে আল্লাহ তাদের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন। আর যারা কুফরি করে, তাদের অভিভাবক হল তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারে নিয়ে যায়। তারা জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। [আল-কুরআন, ২ : ২৫৬-২৫৭] 

ইসলামি জীবন পদ্ধতিতে জোরজবরদস্তি নেই। যে ব্যক্তি শিরক (অংশীদার স্থাপন করা) থেকে দূরে অবস্থান করে এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর ইবাদতে ব্রতী হয়, আর নিজেকে আরোপিত করে আল্লাহর নির্দেশমালায়, ইখলাস-ঐকান্তিকতাসহ এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা ব্যয় করে আল্লাহর আদেশ বাস্তবায়ন ও নিষিদ্ধ বিষয়-বস্তু থেকে দূরে থাকার ক্ষেত্রে, সে শক্ত হাতে ধারণ করে এমন এক রজ্জু, যা কখনো ছিন্ন হবার নয়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহকে অস্বীকার করে এবং ইবাদত-আরাধনার অন্য কোনো পথ বেছে নেয়, অথবা আদৌ কোনো বিশ্বাসই পোষণ করে না, তার জন্য রয়েছে অনন্তকালের শাস্তি, নারকীয় জীবন, জাহান্নাম। 

মূলত সত্যকে অস্বীকার এবং আল্লাহর পক্ষ হতে দেওয়া জাজ্বল্যমান প্রমাণাদি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেওয়ার ফলেই মানুষ বিভিন্ন ধর্মসম্প্রদায়ে বিভক্ত হতে শুরু করল।  ‘আর কিতাবিরা তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পরই কেবল মতভেদ করেছে। আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর ইবাদত করে, তাঁরই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়; আর এটিই হল সঠিক দীন।’ [আল-কুরআন, ৯৮ : ১-৫]

আল্লাহ মুসলমানদেরকে সতর্ক করেছেন তারা যেন তাদের পূর্ববর্তীদের মতো একই ফাঁদে পা না রাখে, পরস্পরে মতভেদ করে এবং বিভিন্ন ধর্মীয়সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে গিয়ে। ‘আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা বিভক্ত হয়েছে এবং মতবিরোধ করেছে তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর। আর তাদের জন্যই রয়েছে কঠোর আযাব। সেদিন কতক চেহারা উজ্জ্বল হবে এবং কতক চেহারা হবে মলিন। আর যাদের চেহারা মলিন হবে (তাদেরকে বলা হবে) তোমরা কি ইমান আনার পর কুফরি করেছিলে? সুতরাং তোমরা আযাব আস্বাদন করো। কারণ তোমরা কুফরি করতে।’ [আল-কুরআন, ৩ : ১০৫-১০৬]

মানুষেরা ওহির ব্যাপারে নানা প্রকার মিথ্যা ছড়িয়েছে, তারা পবিত্রগ্রন্থসমূহ নিজ হাতে পরিবর্তন করেছে, তারা নবিদেরকে নির্যাতন, এমনকি হত্যা পর্যন্ত করেছে। কুরআন বলছে, ‘তাদের মধ্যে একদল রয়েছে যারা নিজেদের  জিহ্বা দ্বারা বিকৃত করে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা সেটা কিতাবের অংশ মনে কর, অথচ সেটি কিতাবের অংশ নয়। তারা বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’ অথচ তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়। আর তারা আল্লাহর ওপর মিথ্যা বলে, অথচ তারা জানে। কোনো মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমত ও নবুয়ত দান করার পর সে মনুষকে বলবে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও’। বরং সে বলবে, ‘তোমরা রব্বানি (আল্লাহওয়ালা) হয়ে যাও।’ যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে। [আল-কুরআন, ৩ : ৭৮-৭৯] 

আল্লাহর নবিগণ মানুষদেরকে একমাত্র আল্লাহর ইবাদতের প্রতিই আহ্বান করেছেন, যিনি অদ্বিতীয়-লাশরিক। নবিগণ তাদের নিজেদেরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করতে কখনও আহ্বান করেন নি। তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করতে বলেন নি। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তিনি নির্দেশ করেন না যে, তোমরা ফেরেশতা কিংবা নবিদেরকে রব রূপে গ্রহণ কর। তোমরা মুসলিম হওয়ার পর তিনি কি তোমাদেরকে কুফরির নির্দেশ দিবেন?’ [আল-কুরআন, ৩ : ৮০] 

মানবরচিত ধর্ম আল্লাহর কাছে সমধিক ঘৃণ্য-তিরস্কৃত বিষয়, যা কখনও আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি আল্লাহর দীনের পরিবর্তে অন্য কিছু তালাশ করছে? অথচ আসমানসমূহ ও জমিনে যা আছে তা তাঁরই আনুগত্য করে, ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়, এবং তাদেরকে তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তন করা হবে।’ [আল-কুরআন, ৩ : ৮৩] 

আল্লাহ তো কেবল সত্যিকার বশ্যতাকেই কবুল করেন, সত্যিকার  আনুগত্য এবং তাঁর নির্দেশমালাকে তৃপ্ত ও অকপট হৃদয়ে মেনে নেওয়াকেই তিনি গ্রহণ করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন চায় তবে তার কাছ থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ [আল-কুরআন, ৩ : ৮৫] 

আল্লাহর প্রতি ইমান-বিশ্বাস এবং তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা, মেনে চলার প্রতি আহ্বান করা সকল সকল নবি-রাসুলদের মিশন ছিল, যারা ছিলেন সন্দেহাতীতভাবে একত্ববাদী।

বিশিষ্ট দাঈ ইউসুফ এস্টেস-এর ‘Why So Many Religions?’ আর্টিকেল থেকে অনূদিত।